পাতা:বঙ্কিম রচনাবলী (প্রথম খণ্ড).pdf/১৬১

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ब७कशा ज्ञान्वव्ौ বই কি ?” কপালকুন্ডলা অকপটহাদয়ে কৌটাসমেত সকল গহনাগলি ভিক্ষকের হস্তে দিলেন। অঙ্গের অলঙ্কারিগলিও খলিয়া দিলেন। ভিক্ষক ক্ষণেক বিহবল হইয়া রহিল। দাসদাসী কিছমাত্র জানিতে পারিল না। ভিক্ষকের বিহবলভােব ক্ষণিকমাত্র। তখনই এদিক ওদিক চাহিয়া গহনা লইয়া উদ্ধবশবাসে পলায়ন করিল। কপালকুন্ডলা ভাবিলেন, “ভিক্ষক দৌড়িল কেন ?" পঞ্চম পরিচ্ছেদ ঃ সবদেশে ‘শব্দাখোয়ং যদ্যপি কিল তে যঃ সখীনাং পরস্তাৎ। কণে লোলঃ কথয়িতুমভূদাননসপশলোভাৎ ৷” মেঘদত নবকুমার কপালকুণডলাকে লইয়া সবদেশে উপনীত হইলেন। নবকুমার পিতৃহীন, তাঁহার বিধবা মাতা গহে ছিলেন, আর দই ভগিনী ছিল। জ্যোঠা বিধবা ; তাহার সহিত পাঠক মহাশয়ের পরিচয় হইবে না। দ্বিতীয়া শ্যামাসািন্দরী সধবা হইয়াও বিধবা ; কেন না, তিনি কুলীনপত্নী। তিনি দাই একবার আমাদের দেখা দিবেন। অবস্থান্তরে নবকুমার অজ্ঞাতকুলশীলা তপস্বিনীকে বিবাহ করিয়া গহে আনায়, তাঁহার আত্মীয়-স্বজন কতদর সন্তুভিটপ্রকাশ করিতেন, তাহা আমরা বলিয়া উঠিতে পারিলাম না। প্রকৃতপক্ষে এ বিষয়ে তাঁহাকে কোন ক্লেশ পাইতে হয় নাই। সকলেই তাঁহার প্রত্যাগমনপক্ষে নিরাশবাসী হইয়াছিল। সহযাত্রীরা প্রত্যাগমন করিয়া রটনা করিয়াছিলেন যে, নবকুমারকে ব্যান্ত্রে হত্যা করিয়াছে। পাঠক মহাশয় মনে করিবেন যে, এই সত্যবাদীরা আত্মপ্রতীতি মতই কহিয়াছিলেন :-কিন্তু ইহা স্বীকার করিলে তাঁহাদিগের কলপনাশক্তির অবমাননা করা হয়। প্রত্যাগত যাত্রীর মধ্যে অনেকে নিশ্চিত করিয়া কহিয়াছিলেন যে, নবকুমারকে ব্যাঘমখে পড়িতে তাঁহারা প্রত্যক্ষই দালিট করিয়াছিলেন।—কখনও কখনও ব্যাঘাটার পরিমাণ লইয়া তকবিতক হইল : কেহ বলিলেন, “ব্যাঘাটা আট হাত হইবেক—”; কেহ বলিলেন, “না, প্রায় চৌদ্দ হাত।” পািবব পরিচিত প্রাচীন যাত্ৰী কহিলেন, “যাহা হউক, আমি বড় রক্ষা পাইয়াছিলাম। ব্যাঘাটা আমাকে শুধু তাড়া করিয়াছিল, আমি পলাইলাম; নবকুমার তত সাহসী পর্যন্য নহে; পলাইতে T | || যখন এই সকল রটনা নবকুমারের মাতা প্রভৃতির কর্ণগোচর হইল, তখন পরমধ্যে এমত ক্ৰন্দনধবনি উঠিল যে, কয়দিন তাহার ক্ষান্তি হইল না। একমাত্র পত্রের মাতুত্যুসংবাদে নবকুমারের মাতা একেবারে মতপ্রায় হইলেন। এমত সময়ে যখন নবকুমার সস্ত্রীক হইয়া বাটী আগমন করিলেন, তখন তাঁহাকে কে জিজ্ঞাসা করে যে, তোমার বধ কোন জাতীয়া বা কাহার কন্যা ? সকলেই আহাদে অন্ধ হইল। নবকুমারের মাতা মহাসমাদরে বধ, বরণ করিয়া গহে লইলেন। যখন নবকুমার দেখিলেন যে, কপালকুন্ডলা তাঁহার গহমধ্যে সাদরে গহীতা হইলেন, তখন তাঁহার আনন্দ-সাগরে উছলিয়া উঠিল। অনাদরের ভয়ে তিনি কপালকুন্ডলাকে লাজ করিয়াও কিছ.মাত্র আহাদ বা প্রণয়লক্ষণ প্রকাশ করেন নাই ;-—অথচ তাঁহার হৃদয়াকাশ কপালকুণডলার মাত্তিতেই ব্যাপ্তত হইয়া রহিয়াছিল। এই আশঙ্কাতেই তিনি কপালকুন্ডলার পাণিগ্রহণ প্রস্তাবে অকস্মাৎ সম্মত হয়েন নাই, এই আশঙ্কাতেই পাণিগ্রহণ করিয়াও গহণগমন পৰ্যন্ত বারেকমাত্র কপালকুন্ডলার সহিত প্রণয়সম্পভাষণ করেন নাই; পরিপলবোমাখ অনার্যাগসিন্ধাতে বীচিমাত্র বিক্ষিপত হইতে দেন নাই। কিন্তু সে আশঙ্কা দরি হইল; জলরাশির গতিমখ হইতে বেগনিরোধকারী উপলমোচনে যেমন দন্দম স্রোতে বেগ জন্মে, সেইরােপ বেগে নবকুমারের প্রণয়সিন্ধ, ऐष्छ्ळ्ञ्शा ऐठिंब्ल । এই প্রেমাবিভােব সব্বদা কথায় ব্যক্ত হইত না, কিন্তু নবকুমার কপালকুন্ডলাকে দেখিলেই য্যেরােপ সজললোচনে তাঁহার প্রতি অনিমেষ চাহিয়া থাকিতেন, তাহাতেই প্রকাশ পাইত; যেরপ N (