পাতা:বঙ্কিম রচনাবলী (প্রথম খণ্ড).pdf/১৮

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় বঙ্কিম-জীবনে ১৮৫৩ সন আব্দু” একটি কারণে স্মরণীয়। ইংরেজী অধ্যয়নে নিবিষ্ট হইলেও বাংলার চচ্চােয়ও তিনি এ সময় হইতে বিশেষ অবহিত ছিলেন। এই বৎসর (১৮৫৩) ‘সংবাদ প্রভাকরে” কবিতাপ্রতিযোপ্লিপ্তায় যোগ দিয়া বঙিকমচন্দ্ৰ পারিতোষিক প্রাপতি হন। তাঁহার কবিতার নাম—“কামিনীর উক্তি [ তোমাতে লো ষড়ঋতু"। এই কবিতাটি ১৮ মাচ্চ ১৮৫৩ তারিখের ‘সংবাদ প্রভাকরে” ত হয়। পারিতোষিকের পরিমাণ কুড়ি টাকা। রংপােরকুন্ডীর জমিদার রমণীমোহন }। কালীচরণ রায় চৌধরিী ‘প্রভাকর দলেট উহার সম্পাদক ঈশবরচন্দ্র গস্তের নিকট উক্ত পাঠাইয়া দেন। হগলী কলেজের অধ্যক্ষ জেমস কার শিক্ষা-সমাজের সম্পাদককে ২O য়ারী ১৮৫৪ তারিখে পত্র দবারা বঙিকমচন্দ্রের এই কৃতিত্বের কথা জ্ঞাপন করেন। হগলী অধ্যয়নকালে ঈশবর গীতের রচনার আদশে বঙ্কিমচন্দ্র ‘সংবাদ প্রভাকর’ ও ‘সংবাদ সাধারঞ্জনে গদ্য-পদ্য রচনা আরম্ভ করেন। পরবত্তীর্ণ দই বৎসরে তাঁহার বহন গদ্য-পদ্য রচনা এই দই পত্রে বাহির হয়। ‘কালেজীয় ছাত্রদিগের কবিতা-যাদ্ধ’ এ সময়কার একটি উল্লেখযোগ্য ঘটনা। হগলী কলেজের বণ্ডিকমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়, কৃষ্ণনগর কলেজের দ্বারকানাথ অধিকারী এবং হিন্দ কলেজের দীনবন্ধ মিত্র ‘সংবাদ প্রভাকরে” কবিতা খয়া বাদ-প্রতিবাদে প্রবত্ত হন। ইহাতে ‘প্রভাকর’-সম্পাদক কবিবর ঈশবরচন্দ্র গপোেতর শষ সীমৰ্থন ছিল। দবারকানাথ অলপ বয়সে মারা যান। এক সময়ে ঘোর প্রতিপক্ষ হইলেও, কালে বঙ্কিমচন্দ্র ও দীনবন্ধর মধ্যে খবই বন্ধত্বে জন্মিয়াছিল। পরীক্ষায় মাসিক আট টাকা বত্তি পাইয়া বঙ্কিমচন্দ্র ১৮৫৪ সনে কলেজ বিভাগের চতুৰ্থ শ্রেণীতে উন্নীত হইলেন। ১৮৫৫ খ্রীস্টাব্দের পরীক্ষায়ও বঙিকমচন্দ্র শীর্ষস্থান অধিকার করেন এবং দ্বিতীয় বৎসরের জন্য পনরায় আট টাকা বত্তি পান। এবারে তিনি তৃতীয় শ্রেণীতে উঠিলেন। পর বৎসর, ১৮৫৬ সনের এপ্রিল মাসে এই শ্রেণী হইতে তের জন সিনিয়র বত্তিপরীক্ষা দেন। হগলী কলেজ হইতে পরীক্ষায় সকল বিষয়েই কৃতিত্ব দেখাইয়া বঙ্কিমচন্দ্ৰ দাই বৎসরের জন্য কুড়ি টাকা বত্তি লাভ করেন। এই বারে তিনি যথারীতি দ্বিতীয় শ্রেণীতে উন্নীত হইলেন। গ্রীল্ডেমর ছটির পর তিনি অলপদিন মাত্র হগলী কলেজে অধ্যয়ন করিয়াছিলেন। ১৮৫৬, ১২ই জলাই হগলী কলেজ পরিত্যাগ করিয়া আইন পড়িবার জন্য বঙ্কিমচন্দ্র কলিকাতায় প্রেসিডেন্সী কলেজে ভত্তি হইলেন। এই বৎসর, ছাত্রাবস্থায়ই বঙ্কিমচন্দ্রের “ললিতা। পরোকালিক গলাপ | তথা মানস।” নামক প্রথম পসস্তক (কবিতা) প্রকাশিত হয়। বঙ্কিমচন্দ্রের সাহিত্যানশীলনে এ সনটি এই কারণে বিশেষ গরত্বেপণ সন্দেহ নেই। তাঁহার গদগদ্য রচনা প্রকাশে ঈশ্ববরচন্দ্র গনুস্তের সহায়তা যেমন উল্লেখযোগ্য, তেমনি হগলী কলেজের সংস্কৃতজ্ঞ বাংলা পন্ডিতদের বাংলা শিক্ষাদানের কথাও এই প্রসঙ্গে সমরণীয়। সে যাগে সংস্কৃত কলেজ ব্যতীত অন্য কোন কলেজে সংস্কৃত পঠন-পাঠনের ব্যবস্থা ছিল না। এই কয় বৎসরে বঙিকমচন্দ্র বাড়ীতে বসিয়া ভাটপাড়ার পন্ডিতদের সাহায্যে সংস্কৃত পড়িয়া ইহাতে ব্যুৎপন্ন হন। বঙিকমচন্দ্রের সংস্কৃত শিক্ষা সম্পবন্ধে এইরনুপ জানা যায় : O “১৮৫৩ সালে যে সময়ে হগলী কলেজে একজন প্রধান ছাত্র বলিয়া গণ্য, ইনি তৎকালে গ্রাম্য চতুৰ্কপাঠীতে কোন এক অধ্যাপকের নিকট সংস্কৃত অধ্যয়ন করিতে আরম্ভ করেন। বিদ্যালয় হইতে প্রত্যাগমন করিয়া, প্রত্যহ বৈকালে পথি বগলে করিয়া চতুৰ্কপাঠীতে গমনপকেবািক অধ্যয়ন করিতেন। এক বৎসর মধ্যে ইনি মগধবোধ ব্যাকরণ, রঘবংশ, ভট্টীকাব্য, মেঘদত, উদ্ধবন্দতে প্রভৃতি অধ্যয়ন করেন। এই অলপ সময় অধ্যয়ন করিয়াই ইনি সংস্কৃত ভাষায় ও সাহিত্যে বিশেষ ব্যুৎপত্তি লাভ করিয়াছিলেন। এক্ষণে ইনি ইংরেজীর ন্যায় সংস্কৃত ভাষাতেও কৃতিবিদ্য—দবাবকানাথ গঙেগাপাধ্যায় : “নববাষির্কী” (d v A V), of, SR8 o প্রেসিডেন্সী কলেজ : আইন পড়িবার জন্য বঙ্কিমচন্দ্র প্রেসিডেন্সী কলেজে প্রবেশ করিলেন &", কিন্তু তৃতীয় বর্ষের পাঠ শেষ না করিয়াই তাঁহাকে কলেজ পরিত্যাগ করিতে হয়। কেন এইরপ করিতে হইয়াছিল। তাঁহাই এখন বলিতেছি। প্রেসিডেন্সী কলেজে অধ্যয়ন আরম্ভের কয়েক মাস মধ্যেই ১৮৫৭ সনের জানায়ারী মাসে কলিকাতা বিশববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠিত হয়। এই বৎসর এপ্রিল মাসে বিশ্বববিদ্যালয়-কর্তৃপক্ষ এনট্রান্স বা প্রবেশিকা পরীক্ষা গ্রহণের ব্যবস্থা করিলেন। পরবত্তী কালের বহ বিখ্যাত ব্যক্তি এই প্রথম বৎসর প্রবেশিকা পরীক্ষয়ি উপস্থিত হন। বঙ্কিমচন্দ্র প্রেসিডেন্সী কলেজের আইন-বিভাগ হইতে পরীক্ষা দিয়া প্রথম বিভাগে উত্তীর্ণ