পাতা:বঙ্কিম রচনাবলী (প্রথম খণ্ড).pdf/১৯২

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

शाब्लिनी 22T R5 প্রথম পরিচ্ছেদ ঃ আচােয্য একদিন প্রয়াগাতীথো, গঙ্গাযমন-সঙ্গমে, অপব্ব প্রাবট দিনান্তশোভা প্রকটিত হইতেছিল। প্রােবট কাল, কিন্তু মেঘ নাই, অথবা যে মেঘ আছে, তাহা সবৰ্ণময় তরঙগমাল্যাবৎ পশ্চিম গগনে বিরাজ করিতেছিল। সৰ্যদেব আস্তে গমন করিয়াছিলেন। বর্ষার জলসিঞ্চারে গঙ্গা যমনা উভয়েই সম্পপণ্য শরীরা, যৌবনের পরিপািণতায় উন্মাদিনী, যেন দই ভগিনী ক্ৰীড়াচ্ছলে পরসপরে আলিঙ্গন করিতেছিল। চঞ্চল বসনাগ্রভাগবৎ তরঙগমালা পবনতাড়িত হইয়া কলে প্রতিঘাত করিতেছিল। একখানি ক্ষদ্র তরণীতে দাই জন মাত্ৰ নাবিক। তরণী অসঙ্গত সাহসে সেই দদািমনীয় যমােনার স্রোতেবেগে আরোহণ করিয়া, প্রয়াগের ঘাটে আসিয়া লাগিল। একজন নৌকায় রহিল, একজন তীরে নামিল। যে নামিল, তাহার নবীন যৌবন, উন্নত বলিৎঠ দেহ, যোদ্ধবেশ। মস্তকে উষ্ণীষী, অঙ্গে কবচ, করে ধনববর্তণ, পণ্ঠে তরুণীর, চরণে অননুপদীনা। এই বীরাকার পরিষ পরম সন্দর। ঘাটের উপরে, সংসারবিরাগী পণ্যপ্রয়াসীদিগের কতকগলি আশ্রম আছে। তন্মধ্যে একটি ক্ষদ্র কুটীরে এই যাবা প্রবেশ করিলেন। কুটনীরমধ্যে এক ব্রাহ্মণ কুশাসনে উপবেশন করিয়া জপে নিযক্ত ছিলেন ; ব্রাহ্মণ অতি দীর্ঘাকার পরিষে ; শরীর শােক ; আয়ত মখমন্ডলে শেবতশমশ্র বিরাজিত; ললাট ও বিরলকেশ তালদেশে অলপমাত্র বিভূতিশোভা। ব্রাহ্মণের কান্তি গম্ভীর এবং কটাক্ষ কঠিন; দেখিলে তাঁহাকে নিন্দদায় বা অভক্তিভাজন বলিয়া বোধ হওয়াব সম্ভাবনা ছিল না, অথচ শতিকা হইত। আগন্তুককে দেখিবামাত্র তাঁহার সে পরষভােব দরি হইল, মাখের গাম্ভীৰ্য্যমধ্যে প্রাসাদের সঞ্চার হইল । আগন্তুক ব্রাহ্মণকে প্ৰণাম করিয়া সম্মখে দন্ডায়মান হইলেন। ব্রাহ্মণ আশীৰ্ব্ববাদ করিয়া কহিলেন, “বৎস হেমচন্দ্র, আমি অনেক দিবসাবধি তোমার প্রতীক্ষা করিতেছি।” হেমচন্দ্র বিনীতভাবে কহিলেন, “অপরাধ গ্রহণ করিবেন না, দিল্লীতে কায্য সিদ্ধ হয় নাই। পরন্তু যবন আমার পশ্চাদগামী হইয়াছিল; এই জন্য কিছ: সতক হইয়া আসিতে হইয়াছিল। তন্ধেতু বিলম্ব হইয়াছে।” ব্ৰাহ্মণ কহিলেন, “দিল্লীর সংবাদ আমি সকল শনিয়াছি। বখতিয়ার খিলিজিকে হাতীতে মারিত, ভালই হইত, দেবতার শত্র পশ-হস্তে নিপাত হইত। তুমি কেন তার প্রাণ বাঁচাইতে গেলে !” হেমচন্দ্র। তাহাকে স্বহস্তে যদুদ্ধে মারিব বলিয়া। সে আমার পিতৃশ্যত্র, আমার পিতার রাজ্যচোর। আমারই সে বধ্য। ব্ৰাহ্মণ। তবে তাহার উপর যে হাতী রাগিয়া আক্ৰমণ করিয়াছিল, তুমি বখতিয়ারকে না। মারিয়া সে হাতীকে মারিলে কেন ? হেমচন্দ্র। আমি কি চোরের মত বিনা যন্ধে শত্র, মারিব ? আমি মগধবিজেতাকে যন্ধে জয় করিয়া পিতার রাজ্য উদ্ধার করিব । নহিলে আমার মগধ-রাজপত্র নামে কলঙক । ব্রাহ্মণ কিঞ্চিৎ পরিষভাবে কহিলেন, “এ সকল ঘটনা ত অনেক দিন হইয়া গিয়াছে, ইহার পঝেব তোমার এখানে আসার সম্পভাবনা ছিল। তুমি কেন বিলম্ব করিলে ? তুমি মথ রায় গিয়াছিলে ?” হেমচন্দ্র অধোবাদন হইলেন। ব্রাহ্মণ কহিলেন, “বঝিলাম তুমি মথ রায় গিয়াছিলে, আমার নিষেধ গ্রাহ্য কর নাই। যাহাকে দেখিতে মথ রায় গিয়াছিলে, তাহার কি সাক্ষাৎ পাইয়াছ ?” এবার হেমচন্দ্র রক্ষভাবে কহিলেন, “সাক্ষাৎ যে পাইলাম না, সে আপনারই। দয়া। মণোলিনীকে আপনি কোথায় পাঠাইয়াছেন ?” ܬbr ܠ