পাতা:বঙ্কিম রচনাবলী (প্রথম খণ্ড).pdf/২০৮

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

छिङ t રાજપછ প্রথম পরিচ্ছেদ ঃ গৌড়েশবর অতি বিস্তীর্ণ সুভামন্ডপে নবদ্বীপোক্তজবুলকারী রাজাধিরাজ গৌড়েশ্ববর বিরাজ করিতেছেন। উচ্চ শ্বেত প্রস্তরের বেদির উপরে রত্নপ্রবালাবিভূষিত সিংহাসনে, রত্নপ্রবালমন্ডিত ছত্ৰতলে বাষীয়ান রাজা বসিয়া আছেন। শিরোপাঁর কনকাকঙ্কিণী সংবেষ্টিত বিচিত্র কার্যকাৰ্যখচিত শািন্দ্ৰ চন্দ্ৰাতপ শোভা পাইতেছে! এক দিকে পথগাসনে হােমাবশেষবিভূষিত, অনিন্দমত্তি ব্রাহ্মণমন্ডলী সভাপন্ডিতকে পরিবেশটিন করিয়া বসিধা আছেন। যে আসনে, এক দিন হলায়াধ উপবেশন করিয়াছিলেন, সে আসনে এক্ষণে এক অপরিণামদশী চাটকার অধিষ্ঠান করিতেছিলেন। অন্য দিকে মহামাত্য ধৰ্ম্মাধিকারকে অগ্রবত্তীর্ণ করিয়া প্রধান রাজপরিষেরা উপবেশন করিয়াছিলেন। মহাসামন্ত, মহাকুমারামাতা, প্রমাতা, ঔপরিক, দােসাপরাধিক, চেীরোদধরণিক, শৌলিকক, গেীলিমকগণ, ক্যািত্রপ, প্রান্তপালেরা, কোঠ্যপালেরা, কান্ডরিক্য, তদায্যক্তক, বিনিযক্তক প্রভৃতি সকলে উপবেশন করিতেছেন। মহাপ্ৰতীহাের সশস্ত্ৰে সভার অসাধারণত রক্ষা কবিতেছেন। সস্তাবকেরা উভয় পাশে বা শ্রেণীবদ্ধ হইয়া দাঁড়াইযা আছে। সৰ্ব্বজন হইতে পথগাসনে কুশাসনমাত্র গ্রহণ করিয়া পন্ডিতবব মাধবাচায্য উপবেশন করিয়া আছেন। রাজসভার নিয়মিত কাৰ্যসকল সমাপত হইলে, সভা ভঙ্গের উদ্যোগ হইল। তখন মাধবাচাৰ্য্য রাজাকে সম্বোধন করিয়া কহিলেন, “মহারাজ ! ব্রাহ্মণের বাচালতা মাজজনা করিবেন। আপনি রাজনীতিবিশারদ, এক্ষণে ভূমন্ডলের যত রাজগণ আছেন সর্ববাপেক্ষা বহােদশী, প্ৰজাপালক আপনিই আজন্ম রাজা। আপনার অবিদিত নাই যে, শত্ৰদমন রাজার প্রধান কম। আপনি প্রবল শত্র দমনের কি উপায় করিয়াছেন ?” রাজা কহিলেন, “কি আজ্ঞা করিতেছেন?” সকল কথা বাষীয়ান রাজার শ্রতিসলভ হয় নাই । মাধবাচায্যের পনরাপ্তির প্রতীক্ষা না করিয়া ধৰ্ম্মমর্বাধিকার পাশপতি কহিলেন, “মহারাজাধিবাজ! মাধবাচাৰ্য্য রাজসমীপে জিজ্ঞাস হইয়াছেন যে, রাজশত্র, দমনের কি উপায় হইয়াছে। বঙ্গেশ বরের কোন শত্র এ পর্যন্ত দমিত হয় নাই, তাহা এখনও আচাৰ্য্য ব্যক্ত করেন। নাই। তিনি সবিশেষ বাচন করুন।” মাধবাচায্য অলপ হাস্য করিয়া এবার অত্যুচ্চস্বরে কহিলেন, “মহারাজ, তুরকীয়েরা আর্য্যাবত্ত প্রায় সমাদয় হস্তগত করিয়াছে। আপাততঃ তাহারা মগধ জয় করিয়া গৌড়রাজ্য আক্রমণের উদ্যোগে আছে।” এবার কথা রাজার কণে প্রবেশলাভ করিল। তিনি কহিলেন, “তুরাকীদিগের কথা বলিতেছেন ? তুরকীয়েরা কি আসিয়াছে ?” মাধবাচাৰ্য্য কহিলেন, “ঈশবর রক্ষা করিতেছেন; এখনও তাহারা এখানে আসে নাই। কিন্তু আসিলে আপনি কি প্রকারে তাহাদিগের নিবারণ করিবেন ?” রাজা কহিলেন, “আমি কি করিব—-আমি কি করিব ? আমার এই প্রাচীন শরীর, আমার যন্ধের উদ্যোগ সমভাবে না। আমার এক্ষণে গঙ্গালাভ হইলেই হয়। তুরকীয়েরা আসে আসক।” এবমভূত রাজবাক্য সমাপ্তত হইলে সভাস্থ্য সকলেই নীরব হইল। কেবল মহাসামন্তের কোষমধ্যসথ আসি অকারণ ঈষৎ ঝনৎকার শব্দ করিল। অধিকাংশ শ্রোতৃদ্বগের, মসুখে কোন ভােবই ব্যক্ত হইল না। মাধবাচায্যের চক্ষ হইতে একবিন্দ, অশ্রপাত হইল। সভাপনিডত দামোদর প্রথমে কথা কহিলেন, “আচাৰ্য্য, আপনি কি ক্ষব্ধ হইলেন ? ধেরপে রাজাজ্ঞা হইল, ইহা শাস্ত্রসঙ্গত। শাস্ত্ৰে ঋষিবাক্য প্রযক্ত আছে যে, তুরকীয়েরা এ দেশ অধিকার কৱিবে । শাস্ত্ৰে আছে। অবশ্য ঘটিবে-কাহার সাধ্য নিবারণ করে ? তবে যদুদ্ধৌদ্যমে প্রয়োজন কি ?” মাধবাচায্য কহিলেন, “ভাল সভাপন্ডিত মহাশয়, একটা কথা জিজ্ঞাসা করি, আপনি এতদন্তি কোন শাস্ত্ৰে দেখিয়াছেন ?” দামোদর কহিলেন, “বিষ্ণ, পরাণে আছে, যথা—” ا؟ মাধ। "যথা’ থাকুক-বিষ্ণ, পরাণ আনিতে অননুমতি করন; দেখান। এরপ উক্তি কোথায় उष्ट् ? ROG: