পাতা:বঙ্কিম রচনাবলী (প্রথম খণ্ড).pdf/২২

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

बर्डिकञफ़न् फ़र्रात्रैक्षाश्च রক্তজতে ভারতীয় ঐক্যের গ্রন্থি বধিতে হইবে। অতএব যতদর ইংরাজি চলা অবিশ্যক, ততদার চলক। কিন্তু একেবারে ইংরাজ হইয়া বসিলে চলিবে না। বাঙগাল্লী কখন ইংরাজ হইতে পরিবে না। বাঙ্গালী অপেক্ষা ইংরাজ অনেক গণে গণবান এবং অনেক সখে সখী; যদি এই তিন কোটি বাঙ্গালী হঠাৎ তিন কোটি ইংরাজ হইতে পারিত, তবে তা মন্দ ছিল না। তাহার কোন সম্পভাবনা নাই; আমরা যত ইংরাজি পড়ি, যত ইংরাজি কহি বা যত ইংরাজি লিখি না কেন, ইংরাজি কেবল আমাদিগের মত সিংহের চৰ্ম্মস্বরূপ হইবে মাত্র। ডাক ড্রাকিবার সমীয়ে ধরা পড়িব। পাঁচ সুন্নত হাজার নকল ইংব্লাজু ভিন্ন তিন কোটি সাহেব কখনই হইয়া উঠিবে না। গিলটিী পিতল হইতে খাঁটি রাপা ভাল। প্রস্তরময়ী সন্দরী মাত্তি অপেক্ষা, কুৎসিতা বন্যনারী জীবনযাত্রার সংসহায়।...যতদিন না। সশিক্ষিত জ্ঞানবন্ত বাঙগালীরা বাস্তুগালা ভাষায় আপন উক্তি সকল বিন্যস্ত করিবেন, ততদিন বাঙ্গালীর উন্নতির কোন সম্পভাবনা নাই।... “যদি কেহ, এমত মনে করেন যে, সাঁশিক্ষিতদিগের উক্তি কেবল সশিক্ষিতদিগেরই বাবা প্রয়োজন, সকলের জন্য সে সকল কথা নয়, তবে তাঁহারা বিশেষ ভ্ৰান্ত। সমগ্র বাঙগালীর উন্নতি না হইলে দেশের কোন মঙ্গল নাই। সমস্ত দেশের লোক ইংরাজি বঝে না, কস্মিনকালে বঝিবে, এমত প্রত্যাশা করা যায় না। সতরাং বাঙ্গালায় যে কথা উক্ত না হইবে, তাহা তিন কোটি বাঙগালী কখন বঝিবে না বা শনিবে না। এখনও শনে না, ভবিষ্যতে কোনকালে শনিবে না...” (“বঙ্গদর্শন’, বৈশাখ, ১২৭৩) ইহার পর বঙ্কিমচন্দ্র লেখেন যে, ‘বাঙগালা ভাষার প্রতি বাঙগালীর অনাদরেই, বাঙ্গালীর অনাদর বাড়িতেছে।” এই পত্রকে সশিক্ষিত বাঙালীর পাঠোপযোগী করাই তাঁহার মািল উদ্দেশ্য। দ্বিতীয় উদ্দেশ্য, ‘তাঁহারা ইহাকে আপনাদের বাত্তাবহ সম্বরপ ব্যবহার করুন। -- বাঙ্গালী সমাজে ইহা তাঁহাদিগের বিদ্যা, কলপনা, লিপিকৌশল এবং চিত্তোৎকাষের পরিচয় দিক। তাঁহাদিগের উক্তি বহন করিয়া, ইহা বঙ্গমধ্যে জ্ঞানের প্রচার করক।” বঙ্কিমচন্দ্র বলেন, এই পত্ৰ শােধ কৃতবিদ্যের মনোরঞ্জনাথ নয়, সব্বজনপাঠ্য করিবারও যত্ন করা হইবে। ভাষা সম্পবন্ধে বঙিকমচন্দ্রের অভিমত প্ৰণিধানযোগ্য। তাঁহার মতে “পাঠকের পাঠোপযোগী অতি সরল ভাষাওঁ ব্যবহারেই সহপাঠ্য রচনা হয় না। “যাহা সশিক্ষিত ব্যক্তির পাঠোপযোগী নহে, তাহা কেহইয়া পড়িবে না। যাহা উত্তম তাহা সকলেই পড়িতে চাহে ; যে না বঝিতে পারে, সে বঝিতে যত্ন * করে। এই যত্নই। সাধারণের শিক্ষার মল।” নব্যসম্প্রদায় ও আপামর সাধারণের মধ্যে সহৃদয়তা বন্ধন পত্রের তৃতীয় প্রধান উদ্দেশ্য বলিয়া পত্র-সচেনায় উল্লিখিত হয়। বঙ্কিমচন্দ্র বহরমপরে হইতে ‘বঙ্গদর্শন’ ১২৭৯, বৈশাখ মাসে (এপ্রিল ১৮৭২) প্রথম প্রকাশিত করিলেন। একক্লমে চারি বৎসর কােল তিনি ইহা সম্পাদনা করেন। ইহার পর প্রায় দই বৎসর বন্ধ থাকিয়া ১২৮৪ হইতে ১২৮৯ সাল পৰ্যন্ত অগ্রজ সঞ্জীবচন্দ্রের সম্পাদষ্টায়। অনিয়মিতভাবে, কখনও কিছকাল বাদ দিয়া বাহির হয়। বঙ্গদর্শন' প্রথম কলিকাতা-ভবানীপৰ্ব মাদ্রাযন্ত্রে মাদ্রিত হইত। ১৮৭৩ সনে কাঁটালপাড়ায় বঙ্কিমচন্দ্রের নিজ ভবনে একটি মাদ্রাযন্ত্র সস্থাপিত হয় এবং সেখােন হইতে ‘বঙ্গদশন” প্রকাশিত হইতে থাকে। ১২৮৯ বঙগাব্দে নবম খন্ড প্রকাশের পর সঞ্জীবচন্দ্ৰও ইহা বন্ধ করিয়া দেন। পরে বঙ্কিমচন্দ্রের অন্যতম প্রধান সুহৃদ চন্দ্রনাথ বসার উৎসাহে শ্ৰীশচন্দ্র মজমিদার ইহার সম্পাদনার ভার গ্রহণ করিয়াছিলেন। ১২৭৯, বৈশাখ মাসে ‘বঙ্গদর্শনে’র আবিভােব বাংলা সাহিত্যের ইতিহাসে একটি সমরণীয় ঘটনা। বঙ্কিমচন্দ্রের নিজের এবং তাঁহার সৈনাপত্যে আধনিক বিদ্যায় শিক্ষিত লেখক-গোঠীর রচনায় ‘বঙ্গদর্শন’ বাঙ্গালী জীবন ও সংস্কৃতির দপণ সম্বরপ হইয়া উঠিল। রবীন্দ্রনাথের ভাষায়, “বণ্ডিকমের বঙ্গদর্শন আসিয়া বাঙালীর হৃদয় একেবারে লািঠ করিয়া লইল।” (জীবনসমিতি, ১৩৪৪, পঃ ১২০) বঙ্কিমচন্দ্রের আদশ, উদ্দীপনা এবং উপদেশে রাজকৃষ্ণ মখোপাধ্যায়, অক্ষয়চন্দ্র সরকার, তারাপ্ৰসাদ চট্টোপাধ্যায়, রামদাস সেন, চন্দ্রনাথ বসা প্রভৃতি মনীষীবন্দ লেখনী ধারণ করিলেন। বিজ্ঞান, দশন, সাহিত্য, সংস্কৃত সাহিত্য ও কাব্য, সমাজতত্ত্ব, ধৰ্ম্মতত্ত্ব, ইতিহাস, প্রত্নতত্ত্ব, অর্থনীতি, সঙগীত, ভাষাতত্ত্ব, পস্তক সমালোচনা এমন কোনও বিষয় নাইযাহা বঙ্গদর্শনে স্থান পাইত না। এ সকল বিষয়ের আলোচনায় বঙ্কিমচন্দ্র গতানগতিকতার হাত হইতে মক্ত হইয়া সম্পপণ নািতন পথ ধরিয়াছিলেন। বঙ্গদর্শনের অন্যান্য লেখকবগ তাঁহার প্রেরণায় সাহিত্যের বিভিন্ন বিভাগের আলোচনায় মৌলিকত্ব প্রদশর্তন করিতে লাগিলেন। ‘বিদ্যা, কলপনা, লিপিকৌশল এবং চিত্তোৎকৰ্ষমিলেক বিভিন্ন রচনা কখনও ধারাবাহিকভাবে, কখনও স্বতন্ত্র স্বয়ং-সম্পর্ণে নিবন্ধাকারে পত্রস্থ হইতে আরম্ভ হয়। বাংলার শিক্ষিত সমাজ A4 SR