পাতা:বঙ্কিম রচনাবলী (প্রথম খণ্ড).pdf/২২৭

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

বণ্ডিকম রচনাবলী এই অন্তরাল হইতে দেখ, উনি কি করেন। উনি যেখানে যান, আদশ্যভাবে দরে থাকিয়া উহার সঙ্গে যাও—এ কি ! উপহার অঙ্গ রক্তময় দেখিতেছি কেন ? চল, তবে আমিও সঙ্গে চলিলাম।” হেমচন্দ্রের ঘােম ভাঙিগয়াছিল। প্ৰাতঃকাল উপস্থিত দেখিয়া তিনি শালদন্ডে ভর করিয়া গাত্ৰোথান করিলেন, এবং ধীরে ধীরে গাহাভিমখে চলিলেন। হেমচন্দ্র কিয়দীর গেলে, মণিালিনী আর গিরিজায়া তাঁহার অনসরণার্থ গহ হইতে নিন্তকান্ত হইলেন। তখন রত্নমযী জিজ্ঞাসা করিল, “ঠাকুরাণি, উনি তোমার কে ?” মণিালিনী কহিলেন, “দেবতা জানেন।" দ্বিতীয় পরিচ্ছেদ ঃ প্ৰতিজ্ঞা—পন্বতো বহ্নিমান বিশ্রাম কবিয়া হেমচন্দ্র কিঞ্চিৎ সবল হইয়াছিলেন। শোণিতস্রাবও কতক মন্দীভূত হইযছিল। শহলে ভর করিয়া হেমচন্দ্র স্বচ্ছন্দে গহে প্রত্যাগমন করিলেন। গহে আসিয়া দেখিলেন, মনোরমা দাবারদেশে দাঁড়াইয়া আছেন। মণিালিনী ও গিরিজাষা অন্তরালে থাকিয়া মনোবামাকে দেখিলেন। মনোরমা চিত্রাপিত পত্তিলিকার ন্যায় দাঁড়াইয়া রহিলেন। দেখিয়া মণিালিনী মনে মনে ভাবিলেন, “আমার প্রভু যদি রাপে বশীভূত হয়েনি, তবে আমার সখের নিশি প্রভাত হইয়াছে।” গিরিজায়া ভাবিল, “রাজপত্র যদি রাপে মািন্ধ হয়েন, তবে আমার ঠাকুরাণীর কপাল ভাঙ্গিয়াছে।" হেমচন্দ্ৰ মনোরমার নিকট অ্যাসিযা কহিলেন, “মনোরমা—এমন করিয়া দাঁড়াইযা রহিয়াছ Zद5न्म 2' মনোরমা কোন কথা কহিলেন না। হেমচন্দ্ৰ পনেরপি, ডাকিলেন, “মনোরমা !” তথাপি উত্তর নাই ; হেমচন্দ্ৰ দেখিলেন, আকাশমাগে তাঁহার সিথরদভিট স্থাপিত হইয়াছে। হেমচন্দ্ৰ পনরায় বলিলেন, “মনোরমা, কি হইয়াছে ?” তখন মনোরমা ধীরে ধীরে আকাশ হইতে চক্ষ ফিরাইয়া হেমচন্দ্রের মখমন্ডলে স্থাপিত করিল। এবং কিয়ৎকাল অনিমেষলোচনে তৎপ্রতি চাহিয়া রহিল। পরে হেমচন্দ্রের বধিরােন্ত পরিচ্ছদে দণ্টিপাত হইল। তখন মনোরমা বিস্মিত হইয়া কহিল, “এ কি হেমচন্দ্ৰ ! রক্ত কেন ? তোমার মািখ শক্ষিক; তুমি কি আহত হইয়ােছ ?” হেমচন্দ্র অঙ্গলি দ্বারা সকন্ধেব ক্ষত দেখাইসা দিলেন। মনোরমা তখন হেমচন্দ্রের হস্ত ধারণ করিয়া গহমধ্যে পালণ্ডেকাপরি লইয়া গেল। এবং পলকমধ্যে বারিপািণ ভূ6গাের আনীত করিয়া, একে একে হেমচন্দ্রের গত্রিবসন পরিত্যন্ত করাইয়া অঙ্গের রধির সকল ধৌত করিল। এবং গোজাতিপ্রলোভন নবদ্যুত্ববাদল ভূমি হইতে ছিন্ন করিয়া আপন কুন্দনিন্দিত দন্তে চািববত করিল। পরে তাহা ক্ষতমজুখে প্রয়োগ করিয়া উপবীতাকারে বস্ত্র দ্বারা বধিল । তখন কহিল, “হেমচন্দ্র! আর কি করিব ? তুমি সমস্ত রাত্রি জাগরণ করিয়াছ, নিদ্রা যাইবে ?” হেমচন্দ্ৰ কহিলেন, “নিদ্রাভাবে নিতান্ত কাতর হইয়াছি।” মণিালিনী মনোরমার কায্য দেখিয়া চিন্তিতান তঃকরণে গিরিজায়াকে কহিলেন, “এ কে, গিরিজায়া ?” গি । নাম শানিলাম মনোরমা। ম। এ কি হেমচন্দ্রের মনোরমা ? গি। তুমি কি বিবেচনা করিতেছি ? ম। আমি ভাবিতেছি, মনোরমাই ভাগ্যবতী। আমি হেমচন্দ্রের সেবা করিতে পারিলাম না, সে করিল। যে কায্যের জন্য আমার অন্তঃকরণ দগধ হইতেছিল—মনোরমা। সে কায্য সম্পন্ন করিল-দেবতারা উহাকে আয়মতী করান। গিরিজায়া, আমি গহে, চলিলাম, আমার আর থাকা উচিত নহে। তুমি এই পল্লীতে থােক, হেমচন্দ্র কেমন থাকেন, সংবাদ লইয়া যাইও । মনোরমা। যেই হউক, হেমচন্দ্র আমারই। SR SR 8