পাতা:বঙ্কিম রচনাবলী (প্রথম খণ্ড).pdf/২২৯

বঙিকম রচনাবলী ম। এখন বল, কি প্রকারে আঘাত পাইলে ? তখন হেমচন্দ্র রীতির ঘটনা সংক্ষেপে বিবৃত করিলেন। শনিয়া মনোরমা চিন্তা করিতে 66 ।। হেমচন্দ্ৰ কহিলেন, “তোমার জিজ্ঞাস্য শেষ হইল। এখন আমার কথার উত্তর দাও । কালি রাত্ৰিতে তুমি আমার সঙ্গ পরিত্যাগ করিয়া গেলে যাহা যাহা ঘটিয়াছিল। সকল বল।” মনোরমা মদ মসদ অসফটস্বরে কি বলিল, গিরিজায়া তাহা শনিতে পাইল না। বঝিল, চুপি চুপি কি কথা হইল। গিরিজায়া আর কোন কথা শনিতে না পাইয়া গাত্ৰোথান করিল। তখন পনেকবার প্রশেনোত্তরমালা মনোমধ্যে গ্রথিত হইতে লাগিল । প্রা। কি বঝিলে ? উ। কয়েকটি লক্ষণ মাত্র । প্রা। কি কি লক্ষণ ? গিরিজায়া অঙগলিতে গণিতে লাগিল, এক—মেয়েটি আশ্চৰ্য্য সন্দিরী ; আগমনের কাছে ঘি কি গাঢ় থাকে ? দই—মনোরমা ত হেমচন্দ্রকে ভালবাসে, নহিলে এত যত্ন কুরিল কেন ? তিন —একত্রে বাস। চারি—একত্রে রাত বেড়ান। পাঁচ—চুপি চুপি কথা । প্রা। মনোরমা ভালবাসে ; হেমচন্দ্রের কি ? উ। বাতাস না থাকিলে কি জলে ঢেউ হয় ? আমাকে যদি কেহ ভালবাসে, আমি তাহাকে ভালবাসিব সন্দেহ নাই। প্রা। কিন্তু মণিালিনীও ত হেমচন্দ্রকে ভালবাসে। তবে ত হেমচন্দ্ৰ মণিালিনীকে ভালবাসিবেই। উ। যথার্থ। কিন্তু মন্ণালিনী অনপস্থিত, মনোরমা উপস্থিত। এই ভাবিয়া গিরিজায়া ধীরে ধীরে গাহের দাবারদেশে আসিয়া দাঁড়াইল। তথায় একটি গীত আরম্ভ করিয়া কহিল, “ভিক্ষা দাও গো।” চতুর্থ পরিচ্ছেদ ঃ উপনয়—বহিব্যাপ্যো ধর্মবান গিরিজায়া গীত গায়িল, “কাহে সই জীয়াত মরত কি বিধান ? ব্রজকি কিশোর সই, কাঁহা গেল ভাগই, ব্ৰজজন টাটায়াল পরাণ।" সঙ্গীতধবনি হেমচন্দ্রের কণে প্রবেশ করিল। স্বপনশ্রত শব্দের ন্যায় কণে প্রবেশ করিল। গিরিজায়া আবার গায়িল, “ব্রজকি কিশোর সই, কাঁহা গেল ভাগই, ব্ৰজবধ টাটােয়ল পরাণ।” হেমচন্দ্র উন্মখ হইয়া শনিতে লাগিলেন, গিরিজায়া আবার গায়িল, “মিলি গেই নাগরী, ভুলি গেই মাধব, রাপবিহীন গোপকুঙারী। কো জানে পিয়া সই, রসময় প্রেমিক, হেন বধ, রােপকি ভিখারী ৷ ” হেমচন্দ্ৰ কহিলেন, “এ কি ! মনোরমা, এ যে গিরিজায়ার সবর! আমি চলিলাম।” এই বলিয়া লক্ষফ দিয়া হেমচন্দ্ৰ শয্যা হইতে অবতরণ করিলেন। গিরিজায়া গায়িতে লাগিল, “আগে নাহি বঝন, রােপ দেখি ভুলনা, হৃদি বৈন, চরণ যািগল। যমন-সলিলে সই, অব তিন ডারব, আন সখি ভখিব গরল ৷” SR SR V