পাতা:বঙ্কিম রচনাবলী (প্রথম খণ্ড).pdf/২৩৮

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

शाब्लिनी গি। প্রাণবিসত্তজনা! সে কি মণিালিনী ? মণিালিনী কোন উত্তর করিলেন না। গি সকন্ধে বাহ স্থাপন করিয়া রোদন করিতে লাগিলেন। গিরিজায়াও রোদন করিল। নবম পরিচ্ছেদ ঃ অমতে গরল—গরলামত হেমচন্দ্ৰ, আচায্যের কথায় বিশ্ববাস করিয়া মণিালিনীকে দশচরিত্রা বিবেচনা করিয়াছিলেন; মণিালিনীর পত্র পাঠ না করিয়া তাহা ছিন্ন ভিন্ন করিয়াছিলেন, তাঁহার দাঁতনীকে বেত্ৰাঘাত করিতে প্রস্তুত হইয়াছিলেন। কিন্তু ইহা বলিয়া তিনি মণিালিনীকে ভালবাসিতেন না, তাহা নহে। মণিালিনীর জন্য তিনি রাজ্যত্যাগ করিয়া মাথারাবাসী হইয়াছিলেন। এই মণিালিনীর জন্য গােরর প্রতি শরসন্ধান করিতে প্ৰস্তুত হইয়াছিলেন, মণিালিনীর জন্য গৌড়ে নিজ ব্রত বিস্মত হইয়া ভিখারিণীর তোষামোদ করিয়াছিলেন। আর এখন ? এখন হেমচন্দ্র মাধবাচাৰ্য্যকে শল দেখাইয়া বলিয়াছিলেন, “মণালিনীকে এই শহলে বিদ্ধ করিব!” কিন্তু তাই বলিয়া কি এখন তাঁহার স্নেহ একেবারে ধবংস প্রাপিত হইয়াছিল ? স্নেহ কি একদিনে ধবংস হইয়া থাকে ? বহদিন অবধি পাব্বিতীয় বারি পথিবী-হৃদয়ে বিচরণ করিয়া আপন গতিপথ নিখাত করে, একদিনের সায্যোত্তাপে কি সে নদী শাকায় ? জলের যে পথ নিখাত হইয়াছে, জল সেই পথেই যাইবে, সে পথ রোধ করা, পথিবী ভাসিয়া যাইবে । হেমচন্দ্ৰ সেই রাত্ৰিতে নিজ শয়নকক্ষে, শষ্যোপবি শয়ন করিয়া সেই মক্ত বাতােয়নসন্নিধানে মস্তক রাখিয়া, বাতায়ন-পথে দণ্ডিণ্ট করিতেছিলেন-- তিনি কি নৈশ শোভা দক্ষিট করিতেছিলেন ? যদি তাঁহাকে সে সময় কেহ জিজ্ঞাসা করিত যে, রাত্ৰি সজ্যোৎসনা কি অন্ধকার, তাহা তিনি তখন সহসা বলিতে পারিতেন না। তাঁহার হৃদয়মধ্যে যে রজনীর উদয় হইয়াছিল, তিনি কেবল তাহাই দেখিতেছিলেন। সে রাত্রি ত তখনও সজোৎস্না! নাহিলে তাঁহার উপাধান আদ্র কেন ? কেবল মেঘ্যোদয় মাত্র। যাহার হৃদয়আকাশে অন্ধকার বিরাজ করে, সে রোদন করে না। যে কখনও রোদন করে নাই, সে মনষ্যেমধ্যে অধম । তাহাকে কখনও বিশ্ববাস করিও না। নিশ্চিত জানিও, সে পথিবীর সখা কখনও ভোগ করে নাই –পরের সখও কখনও তাহার সহ্য হয় না। এমন হইতে পারে যে, কোন আত্মচিত্তবিজয়ী মহাত্মা বিনা বাষ্পাপমোচনে গারতের মনঃপীড়া সকল সহ্য করিতেছেন, এবং করিয়া থাকেন; কিন্তু তিনি যদি কস্মিন কালে, এক দিন বিরলে একবিন্দ, অশ্রািজলে পথিবী সিক্ত না করিয়া থাকেন, তবে তিনি চিত্তজয়ী মহাত্মা হইলে হইতে পারেন, কিন্তু আমি বরং চোরের সহিত প্রণয় করিব, তথাপি তাঁহার সঙেগ নহে। হেমচন্দ্র রোদন করিতেছিলেন,--যাহাকে পাপিৎঠা, মনে স্থান দিবার অযোগ্যা বলিয়া জানিয়াছিলেন, তাহার জন্য রোদনা করিতেছিলেন। মণিালিনীর কি তিনি দোষ আলোচনা করিতেছিলেন ? তাহা করিতেছিলেন বটে, কিন্তু কেবল তাঁহাই নহে। এক একবার মণিালিনীর প্ৰেমপরিপািণ মখমন্ডল, প্রেম পরিপািণ কথা, প্রেমপরিপািণ কায্য সকল মনে করিতেছিলেন। সেই মণালিনী কি অবিশবাসিনী ? একদিন মথ রায় হেমচন্দ্র মণালিনীর নিকট একখানি লিপি প্রেরণ করিবার জন্য ব্যস্ত হইয়াছিলেন, উপযন্ত বাহক পাইলেন না; কিন্তু মণিালিনীকে গবাক্ষপথে দেখিতে পাইলেন। তখন হেমচন্দ্র একটি আমফলের উপরে আবশ্যক কথা লিখিয়া মণিালিনীর ক্লোড়ি লক্ষ্য করিয়া বাতায়নপথে প্রেরণ করিলেন ; আমি ধরিবার জন্য মণিালিনী কিঞ্চিৎ অগ্রসর হইয়া আসতে আমি মণিালিনীর ক্লোড়ে না পড়িয়া তাঁহার কণে লাগিল, আমনি তদাঘাতে কণ বিলম্বী রত্নকুণডাল কণা ছিন্নভিন্ন করিয়া কাটিয়া পড়িল ; কণাস্ত্ৰত রধিরে মণোলিনীর গ্রীবা ভাসিয়া গেল। মণিালিনী ভ্ৰক্ষেপও করিলেন না ; কণে হসন্তও দিলেন না ; হাসিয়া আমি তুলিয়া লিপি পাঠপদ্ধবক, তখনই তৎপঠে প্রত্যুত্তর লিখিয়া আমি প্রতিপ্রেরণ করিলেন। এবং যতক্ষণ হেমচন্দ্র দাৰ্লিন্টপথে রহিলেন, ততক্ষণ বাতায়নে থাকিয়া হাস্যমখে দেখিতে লাগিলেন। হেমচন্দ্রের তােহা মনে পড়িল। সেই মণিালিনী কি অবিশবাসিনী ? ইহা সম্ভব নহে। আর একদিন মণালিনীকে বশিচক দংশন করিয়াছিল। তাহার যন্ত্রণায় মণিালিনী মমষবৎ কাতর হইয়াছিলেন। তাঁহার একজন পরিচারিকা তাহার উত্তম ঔষধ জানিত; তৎপ্রয়োগমাত্র যন্ত্রণা একেবারে শীতল হয়; দাসী শীঘ্ৰ ঔষধ আনিতে গেল। ইত্যবসরে R\OG: