পাতা:বঙ্কিম রচনাবলী (প্রথম খণ্ড).pdf/২৪১

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ब७कश ब्रा5नादब्नी এই আদরে তাহার লোপ হইল। ক্ৰমে ক্ৰমে তাঁহার মস্তক আপনি আসিয়া হেমচন্দ্রের সঙ্কন্ধে স্থাপিত হইল, মণিালিনী তাহা জানিয়াও জানিতে পারিলেন না। মণিালিনী আবার রোদন করিলেন—তাঁহার অশ্রািজলে হেমচন্দ্রের স্কন্ধ, বক্ষঃ পলাবিত হইল। এ সংসারে মণিালিনী যত সখি অনভূত করিয়াছিলেন, তন্মধ্যে কোন সখেই এই রোদনের তুল্য নহে। হেমচন্দ্র আবার কথা কহিলেন, “মণিালিনি!! আমি তোমার নিকট গারতের অপরাধ করিয়াছি। সে অপরাধ আমার ক্ষমা করিও । আমি তোমার নামে কলঙ্ক রটনা শনিয়া তাহা বিশ্ববাস করিয়াছিলাম। বিশ্ববাস করিবার কতক কাবণও ঘটিয়াছিল—তাহা তুমি দীর করিতে পরিবে। যাহা আমি জিজ্ঞাসা করি, তাহার পরিৎকার উত্তর দাও।” মণিালিনী হেমচন্দ্রের সকন্ধ হইতে মস্তক না তুলিয়া কহিলেন, “কি ?” হেমচন্দ্ৰ বলিলেন, “তুমি হৃষীকেশের গহ ত্যাগ করিলে কেন ? “ ঐ নােম শ্রবণমাত্র কুপিতা ফণিনীর ন্যায়। মণিালিনী মাথা তুলিল। কহিল, “হৃষীকেশ আমাকে গহ হইতে বিদায় করিয়া দিয়াছে।” হেমচন্দ্ৰ ব্যথিত হইলেন--অলপ সন্দিহান হইলেন—কি৭ি8ৎ চিন্তা করিলেন । এই অবকাশে মণিালিনী পনেরপি হেমচন্দ্রের সীকন্ধে মস্তক রাখিলেন। সে সখাসনে শিরোরক্ষা এত সখি যে, মণিালিনী তাহাতে বঞ্চিত হইয়া থাকিতে পারিলেন না। O হেমচন্দ্র জিজ্ঞাসা করিলেন, “কেন তোমাকে হৃষীকেশ৷ গহবহিস্কৃত করিয়া দিল ?” মণিালিনী হেমচন্দ্রের হৃদয়মধ্যে মািখ লকাইলেন। অতি মদারবে কহিলেন, “তোমাকে কি বলিব ? হৃষীকেশ আমাকে কুলটা বলিয়া তাড়াইয়া দিয়াছে।” শ্ৰতমাত্র তীরের ন্যায় হেমচন্দ্ৰ দাঁড়াইয়া উঠিলেন। মণিালিনীর মস্তক তাঁহার বক্ষশচু্যত হইয়া সোপানে আহত হইল । “পাপীয়াসি-নিজমখে স্বীকৃত হইলি !" এই কথা দন্তমধ্য হইতে ব্যক্ত করিয়া হেমচন্দ্র বেগে প্রস্থান করিলেন। পথে গিরিজায়াকে দেখিলেন ; গিরিজায়া তাঁহার সজলজলদভীম মাত্তি দেখিয়া চমকিয়া দাঁড়াইল। লিখিতে লজা করিতেছে—কিন্তু না লিখিলে নয়—হেমচন্দ্র পদাঘাতে গিরিজায়াকে পথ হইতে অপসতা করিলেন। বলিলেন, “তুমি যাহার দন্তী, তাহাকে পদাঘাত করিলে আমার চরণ কলঙিকত হইত।” এই বলিয়া হেমচন্দ্ৰ চলিয়া গেলেন। যাহার ধৈৰ্য্য নাই, যে ক্ৰোধের জন্মমাত্র অন্ধ হয়, সে সংসারের সকল সমুখে বঞ্চিত। কবি কলপনা করিয়াছেন যে, কেবল অধৈয্য মাত্র দোষে বীরশ্রেষ্ঠ দ্ৰোণাচায্যের নিপাত হইয়াছিল। “অশবথামা হােতঃ ” এই শবদ শনিয়া তিনি ধনব্বাণ ত্যাগ করিলেন। প্রশানান্তর দেবারা সবিশেষ তত্ত্ব লাইলেন না। হেমচন্দ্রের কেবল অধৈয্য নহে-অধৈয্য, অভিমান, ক্ৰোধ । শীতল সমীরণময়ী উষার পিঙ্গল মাত্তি বাপী তীর-বনে উদয় হইল। তখনও মন্ণালিনী আহত মস্তক ধারণ করিয়া সোপানে বসিয়া আছেন। গিরিজায়া জিজ্ঞাসা করিল, “ঠাকুরাণী, আঘাত কি গারতের বোধ হইতেছে ?” মণিালিনী কহিলেন, “কিসের আঘাত ?” গি। মাথায । মা ! মাথায় আঘাত ? আমার মনে হয় না । さ○bf