পাতা:বঙ্কিম রচনাবলী (প্রথম খণ্ড).pdf/২৪৪

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

. शंभाव्लनी মনোরমা অম্লানবদনে কহিলেন, “যাও । ” পশপতি শয়নে গেলেন না। বসিয়া মালা গাঁথা দেখিতে লাগিলেন। আবার উপায়ান্তর সবরপ, ভয়সচক চিন্তার আবিভাবে কায্য সিদ্ধ হইবেক ভাবিয়া, মনোরমাকে ভীতা করিবার জন্য পশতুপতি কহিলেন, “মনোরমা, যদি ইতিমধ্যে যবন আইসে, তবে তুমি কোথায যাইবে ?” মনোরমা মালা হইতে মািখ না তুলিয়া কহিল, “বাটীতে থাকিব।” পশপতি কহিলেন, “বাটীতে তোমাকে কে রক্ষা কবিবে ?” মনোরমা পাকবািবং অন্য মনে কহিল, “জানি না; নিরাপায়। “ পশতুপতি আবার জিজ্ঞাসা কবিলেন, “তুমি আমাকে কি বলিতে মন্দিরে আসিয়াছ ?” ম। দেবতা প্ৰণাম করিতে। পশপতি বিরক্ত হইলেন । কহিলেন, “তোমাকে মিনতি করিতেছি, মনোরমা, এইবার যােহা বলিতেছি, তাহা মনোযোগ দিয়া শন—তুমি আজিও বল, আমাকে বিবাহ করিবে কি না ?” মনোরমার মালা গাঁথা সম্পন্ন হইয়াছিল—সে তাহা একটা কৃষ্ণবণ মাজারের গলায় পরাইতেছিল। পাশপাতির কথা কণে গেল না। মাজজাব মালা পরিধানে বিশেষ অনিচ্ছা! প্রকাশ করিতেছিল, যতবার মনোরমা মালা তাহার গলায় দিভেছিল, ততবার সে মালার ভিতর হইতে মস্তিক বাহির করি যা লইতেছিল–– মনোরমা কুন্দনিন্দিত দন্তে অধর দংশন কবিয়া ঈষৎ হাসিতেছিল, আর আবার মালা তাহার গলায় দিতেছিল। পাশপাতি অধিকতর বিরক্ত হইয়া বিড়ালকে এক চপেটাঘাত করিলেন--বিড়াল উদ্ধাব লাঙ্গল হইয়া দরে পলায়ন করিল। মনোরমা। সেইরােপ দংশিতধরে হাসিতে হাসিতে করস্থ মালা পাশপাতিরই মস্তকে পরাইয়া দিল । মাজুজার-প্রসাদ মস্তকে পাইয়া রাজপ্ৰসাদভোগী ধৰ্ম্মমর্বাধিকার হতবন্ধি হইয়া রহিলেন। অলপ ক্ৰোধ হইল।--কিন্তু দংশিতাধরা হাস্যমযীর তৎকালীন অনানুপম রপমাধবী দেখিয়া তাঁহার মস্তক ঘরিষা গেল। তিনি মনোরমাকে আলিঙ্গন করিবার জন্য বাহ প্রসারণ করিলেন— অমনি মনোরমা লম্ফ দিয়া দরে দাঁড়াইল— পথিমধ্যে উন্নতফণা কালসপ দেখিয়া পথিক যেমন দরে দাঁড়ায়, সেইরােপ দাঁড়াইল । পশপতি অপ্রতিভ হইলেন ; ক্ষণেক মনোরমার মািখপ্ৰতি চাহিতে পারিলেন না-পরে চাহিয়া দেখিলেন- মনোরমা প্রৌঢ়বয়ঃপ্রফতুল্লম, খৰী মহিমাময়ী সন্দেরী। পশপতি কহিলেন, “মনোরমা, দোষ ভাবিও না। তুমি আমার পত্নী---আমাকে বিবাহ কর।” মনোবামা পাশপাতির মািখপ্রতি তীব্র কটাক্ষ করিয়া কহিল, “পশপতি ! কেশবের কন্যা কোথায় ?” পশপতি কহিলেন, “কেশবেব মেয়ে কোথায় জানি না—জানিতেও চাহি না। তুমি আমার একমাত্র পত্নী ।“ ম। আমি জানি কেশবের মেয়ে কোথায়—বলিব ? পশপতি অবাক হইয়া মনোবামার মািখপ্রতি চাহিয়া রহিলেন। মনোরমা বলিতে লাগিল, “একজন জ্যোতিবিদ গণনা করিয়া বলিয়াছিল যে, কেশবের মেয়ে অলপবয়সে বিধবা হইয়া স্বামীর অনমতা হইবে। কেশব এই কথায় অলপকালে মেয়েকে হারাইবার ভয়ে বড়ই দঃখিত হইয়াছিলেন। তিনি ধৰ্ম্মম নাশের ভয়ে মেয়েকে পাত্ৰস্থ করিলেন, কিন্তু বিধিলিপি খন্ডাইবার ভরসায় বিবাহের রাত্ৰিতেই মেয়ে লইয়া প্রয়াগে পলায়ন করিলেন। তাঁহার অভিপ্রায় এই ছিল যে, তাঁহার মেয়ে স্বামীর মাতৃত্যুসংবাদ কস্মিন কালে না পাইতে পারেন। দৈবাধীন কিছকাল পরে প্রয়াগে কেশবের মাতু্য হইল। তাঁহার মেয়ে পর্বেই মাতৃহীনা হইয়াছিল-১—এখন মহত্যুকালে কেশব হৈমবতীকে আচায্যের হাতে সমপণ করিয়া গেলেন। মাতুত্যুকালে কেশব আচাৰ্য্যকে এই কথা বলিয়া গেলেন, “এই অনাথা মেয়েটিকে আপনার গহে রাখিয়া প্রতিপালন করিবেন। ইহার স্বামী পশতুপতি— কিন্তু জ্যোতিবিদেরা বলিয়া গিয়াছেন যে, ইনি অলপবয়সে স্বামীর অনমতা হইবেন । অতএব আপনি আমার নিকট স্বীকার করন যে, এই মেয়েকে কখনও বলিবেন না যে, পশপতি ইহার স্বামী। অথবা পশতুপতিকে কখনও জানাইবেন না যে, ইনি তাঁহার সত্ৰী৷” “আচাৰ্য্য সেইরােপ অঙ্গীকার করিলেন। সেই পয্যন্ত তিনি তাহাকে পরিবারস্থ করিয়া, প্রতিপালন করিয়া, তোমার সঙ্গে বিবাহের কথা লকাইয়াছেন।” প | এখন সে কন্যা কোথায় ? ম। আমিই কেশবের মেয়ে—জানান্দন শৰ্ম্মমা তাঁহার আচাৰ্য্য। ミ8ン SV)