পাতা:বঙ্কিম রচনাবলী (প্রথম খণ্ড).pdf/২৮০

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

বিষবক্ষ ঘটে সংস্থাপিত হইলেন। কাট গলাসের কোষা পড়িল : পেলটেড় জগত তামকুন্ড হইল ; এবং পাকশালা হইতে এক কৃষ্ণক চর্চ পরোহিত হট ওয়াটার-পেলট নামক দিব্য পশুপপাত্রে রোম্রাট মটন এবং কাটলেট নামক সাগন্ধ কুস মরাশি রাখিয়া গেল। তখন দেবেন্দ্র দত্ত, যথাশাস্ত্ৰ ভক্তিভাবে, দেবীর পজা করিতে বসিলেন। পরে তানপরা, তবলা, সেতার প্রভৃতি সমেত বাদক দল আসিল। তাহারা পাজার প্রয়োজনীয় সঙগীতোৎসব সম্পন্ন করিয়া গেল। সবশেষে দেবেন্দ্রের সমবয়স্ক, সশীতলকান্তি এক যােবাপােরষি আসিয়া বসিলেন। ইনি দেবেন্দ্রের মাতুলপত্র সরেন্দ্র; গরণে সৰ্ব্ববাংশে দেবেন্দ্রের বিপরীত। ইহার স্বভাবগণে দেবেন্দ্ৰও ইহাকে ভালবাসিতেন। দেবেন্দ্ৰ, ইহার ভিন্ন, সংসারে আর কাহারও কথার বাধ্য নহেন। সরেন্দ্র প্রত্যহ রাত্রে একবার দেবেন্দ্রের সংবাদ লাইতে আসিতেন। কিন্তু মদ্যাদির ভয়ে অধিকক্ষণ বসিতেন না। সকলে উঠিয়া গেলে, সরেন্দ্র দেবেন্দ্রকে জিজ্ঞাসা করিলেন, “আজি তোমার শরীর কিরােপ আছে ?” দে। ‘শরীরং ব্যাধিমন্দিরং । ” স। বিশেষ তোমার। আজি জােবর জানিতে পারিয়াছিলে ? ( । वा । স। আর যকৃতের সেই ব্যথাটা ? দে। পাকবািমত আছে। স। তবে এখন এ সব স্থগিত রাখিলে ভাল হয় না ? দে। কি—মদ খাওয়া ? কত দিন বলিবে ? ও আমার সাথের সাথী। স। সাথের সাথী কেন ? সঙেগ আসে নাই—সঙেগও যাইবে না। অনেকে ত্যাগ করিয়াছে—তুমিও ত্যাগ করিবে না কেন ? দে। আমি কি সখের জন্য ত্যাগ করিব ? যাহারা ত্যাগ করে, তাহদের অন্য সখি আছে সেই ভরসায় ত্যাগ করে। আমার আর কোন সখই নাই। স। তব, বাঁচিবার আশায়, প্রাণের আকাঙক্ষায় ত্যাগ কর। দে। যাহাঁদের বাঁচিয়া সখি, তাহারা বাঁচিবার আশায় মদ ছাড়ক। আমার বাঁচিয়া কি লাভ ? সরোন্দ্রের চক্ষ বা অপাকুল হইল। তখন বন্ধসেনহে পরিপািণ হইয়া কহিলেন, “তবে আমাদের অন্যুরোধে ত্যাগ কর।” দেবেন্দ্রের চক্ষে জল আসিল। দেবেন্দ্র বলিল, “আমাকে যে সৎপথে যাইতে অননুরোধ করে, তুমি ভিন্ন এমন আর কেহ নাই। যদি কখন আমি ত্যাগ করি, সে তোমারই অননুরোধে করিব। আর-২’ স। আর কি ? দে। আর যদি কখন আমার স্ত্রীর মাতুসংবাদ কণে শনি।--তবে মদ ছাড়িব । নচেৎ এখন মারি বাঁচি সমান কথা। সরেন্দ্র সজলনয়নে, মনোমধ্যে হৈমবতীকে শত শত গালাগালি দিতে দিতে, গহে প্রত্যাগমন করিলেন। একাদশ পরিচ্ছেদ ঃ সংযোিমদুখীর পত্ৰ “প্ৰাণাধিকা শ্ৰীমতী কমলমণি দাসী চিরায়মতীষ। আর তোমাকে আশীববাদ পাঠ লিখিতে লজজা করে। এখন তুমিও একজন হইয়া উঠিয়াছ ——এক ঘরের গহিণী। তা যাহাই হউক, আমি তোমাকে আমার কনিষ্ঠা ভগিনী ভিন্ন আর কিছই বলিয়া ভাবিতে পারিতেছি না। তোমাকে মানষে করিয়াছি। প্রথম “ক খ" লিখাই, কিন্তু তোমার হাতের অক্ষর দেখিয়া, আমার এ হিজিবিজি তোমার কাছে পাঠাইতে লজজা করে । তা লজজা করিয়া কি করিব ? আমাদিগের দিনকাল গিয়াছে। দিনকাল থাকিলে আমার এমন দশা হইবে কেন ? কি দশা ? এ কথা কাহাকে বলিবাের নহে,—বলিতে দঃখও হয়, লডজাও করে। কিন্তু অন্তঃকরণের ভিতর যে কম্পট, তাহা কাহাকে না বলিলেও সহ্য হয় না। আর কাহাকে বলিব ? ܘ ܘ ܘܓ