পাতা:বঙ্কিম রচনাবলী (প্রথম খণ্ড).pdf/২৮১

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ब७कश ब्रा5नादब्ली তুমি আমার প্রাণের ভগিনী--তুমি ভিন্ন আর আমাকে কেহ ভালবাসে না। আর তোমার ভাইয়ের কথা তোমা ভিন্ন পরের কাছেও বলিতে পারি না। আমি আপনার চিতা। আপনি সাজাইয়াছি। কুন্দনন্দিনী যদি না খাইয়া মরিত, তাহতে আমার কি ক্ষতি ছিল ? পরমেশবার এত লোকের উপায় করিতেছেন, তাহার কি উপায় করিতেন ন' ? আমি কেন আপনা খাইয়া তাহাকে ঘরে আনিলাম ? r তুমি সে হতভাগিনীকে যখন দেখিয়াছিলে, তখন সে বালিকা। এখন তাহার বয়স ১৭ ॥১৮ বৎসর হইয়াছে। সে যে সন্দরী, তাহা স্বীকার করিতেছি। সেই সৌন্দৰ্য্যই আমার কাল হইয়াছে। পথিবীতে যদি আমার কোন সখি থাকে, তবে সে স্বামী; পথিবীতে যদি আমার কোন চিন্তা থাকে, তবে সে সবামী; পথিবীতে যদি আমার কোন কিছর সম্পত্তি থাকে, তবে সে স্বামী ; সেই স্বামী, কুন্দনন্দিনী আমার হৃদয় হইতে কাড়িয়া লইতেছে। পথিবীতে আমার যদি কোন অভিলাষ থাকে, তবে সে স্বামীর স্নেহ। সেই স্বামীর স্নেহে কুন্দনন্দিনী আমাকে বঞ্চিত করিতেছে। তোমার সহোদরকে মন্দ বলিও না। আমি তাঁহার নিন্দা করিতেছি না। তিনি ধৰ্ম্মমাত্মা, শত্ৰতেও তাঁহার চরিত্রের কলঙক এখনও করিতে পারে না। আমি প্রত্যহ দেখিতে পাই, তিনি প্রাণপণে আপনার চিত্তকে বশ করিতেছেন। যে দিকে কুন্দনন্দিনী থাকে, সাধ্যানসারে কখন সেদিকে নয়ন ফিরান না। নিতান্ত প্রয়োজন না হইলে তাহার নাম মাখো আনেন না। এমন কি, তাহার প্রতি ককােশ ব্যবহারও করিয়া থাকেন। তাহাকে বিনা দোষে ভৎসনা করিতেও শনিয়াছি। তবে কেন আমি এত হাবড়হাটি লিখিয়া মারি ? পরিষে এ কথা জিজ্ঞাসা করিলে বঝান বড় ভার হাইত; কিন্তু তুমি মেয়েমানষ, এতক্ষণে বঝিয়াছ। যদি কুন্দনন্দিনী অন্য সত্ৰীলোকের মত তাঁহার চক্ষে সামান্যা হইত, তবে তিনি কেন তাহার প্রতি না চাহিবার জন্য ব্যস্ত হইবেন ? তাহার নাম মডুখে না আনিবােব জন্য কেন এত যত্নশীল হইবেন ? কুন্দনন্দিনীর জন্য তিনি আপনার নিকট আপনি অপরাধী হইয়াছেন। এ জন্য কখন কখন তাহার প্রতি আকারণ ভৎসিনা করেন। সে রােগ তাহার উপর নহে--আপনার উপর। সে ভৎসনা তাহাকে নহে, আপনাকে । আমি ইহা বঝিতে পারি। আমি এতকাল পর্য্যন্ত অনন্যব্রত হইয়া, অন্তরে বাহিরে কেবল তাঁহাকেই দেখিলাম—তাঁহার ছায়া দেখিলে তাঁহার মনের কথা বলিতে পারি—তিনি আমাকে কি লাকাইবেন ? কখন কখন অন্যমনে তাঁহার চক্ষ এদিক ওদিক চাহে কাহার সন্ধানে, তাহ। কি আমি বঝিতে পারি না ? দেখিলে আবার ব্যস্ত হইয়া চক্ষ ফিরাইয়া লয়েন কেন, তাহা কি বঝিতে পারি না ? কাহার কন্ঠের শবদ শনিবার জন্য, আহারের সময়, গ্রাস হাতে করিয়াও কাণ তুলিয়া থাকেন, তাহা কি বঝিতে পারি না ? হাতের ভাত হাতে থাকে, কি মখে দিতে কি মখে দেন, তব, কাণ তুলিয়া থাকেন, —কেন ? আবার কুন্দের সবার কাণে গেলে তখনই বড় জোরে হাপসে হাপাস করিয়া ভাত খাইতে আরম্ভ করেন কেন, তা কি বঝিতে পারি না ? আমাৰ প্রাণাধিক সৰ্ব্ববােদা প্ৰসন্নবদন—এখন এত অন্যমনঃ কেন ? কথা বলিলে কথা কাণে না তুলিয়া, অন্যমনে উত্তর দেন। ‘হ’;-আমি যদি রাগ করিয়া বলি, “আমি শীঘ্র মরি, " তিনি না। শনিয় বলেন ‘হ’'। এত অন্যমনঃ কেন ? ওজজ্ঞাসা করিলে বলেন, “মোকদ্দমার জবালায়।” আমি জানি, মোকদ্দমুর কথা তাঁহার মানে স্থান পায় না। যখন মোকদ্দমার কথা বলেন, তখন হাসিয়া হাসিয়া কথা বলেন। আর এক কথা—এক দিন পাড়ার প্রাচীনার দল কুন্দের কথা কহিতেছিল, তাহার বাল্যবৈধব্য, অনাথিনীত্বি এই সকল লইয়া তাহার জন্য দঃখ করিতেছিল। তোমার সহোদর সেখানে উপস্থিত ছিলেন। আমি অন্তরাল হইতে দেখিলাম, তাঁর চক্ষ জলে পরিয়া গোল—তিনি সহসা দ্রুতবেগে সে সস্থান হইতে চলিয়া গেলেন। এখন একজন নািতন দাসী রাখিয়াছি। তাহার নাম কুমদ। বাবা তাহাকে কুমদ বলিয়া ডাকেন। কখন কখন কুমদ বলিয়া ডাকিতে কুন্দ বলিয়া ফেলেন। আর কত অপ্রতিভ হন ! অপ্ৰতিভা কেন ? এ কথা বলিতে পারিব না যে, তিনি আমাকে অযত্ন বা অনাদর করেন। বরং পািব্বাপেক্ষা অধিক যত্ন, অধিক আদর করেন। ইহার কারণ বঝিতে পারি। তিনি আপনার মনে আমার Cl b ܓ