পাতা:বঙ্কিম রচনাবলী (প্রথম খণ্ড).pdf/২৮৫

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

वर्ग७ष्कश ज्ञष्न्बव्ी শ্ৰী। আমার নিমন্ত্রণ কেন ? ক। আমি বঝি একা যাব ? আমাদের সঙ্গে গাড় গামছা নিয়ে যায় কে ? শ্ৰী।। এ সােয্যমখীর বড় অন্যায়। শােধ, গাড় গামছা বহিবার জন্য যদি ঠাকুরজামাইকে দরকার হয়, তবে আমি দশদিনের জন্য একটা ঠাকুরজামাই দেখিয়ে দিতে পারি। কমলমণির বড় রাগ হইল। সে ভ্ৰকুটি করিল, শ্ৰীশকে ভেঙ্গাইল, এবং শ্ৰীশচন্দ্ৰ যে কাগজখানায় লিখিতেছিল, তাই ছিাড়িয়া ফেলিল। শ্ৰীশ হাসিয়া বলিল, “তা লাগতে এসো কেন ?” কমলমণি কৃত্ৰিম কোপসহকারে কহিল, “আমার খাসি, লাগবো।” শ্ৰীশচন্দ্ৰও কৃত্রিম কোপসহকারে কহিলেন, “আমার খাসি, বলবো।” তখন কোপযক্তা কমলমণি শ্ৰীশকে একটি কিল দেখাইল। কুন্দদন্তে অধর টিপিয়া ছোট হাতে একটি ছোট কিল দেখাইল । কিল দেখিয়া, শ্ৰীশচন্দ্ৰ কমলমণির খোঁপা খালিয়া দিলেন। এখন বদিধতিরোষা কমলমণি শ্ৰীশচন্দ্রের দোয়াতের কালি পিকদানিতে ঢালিয়া ফেলিয়া দিল । রাগে শ্ৰীশচন্দ্র দ্রুতগতিতে ধাবমান হইয়া কমলমণির মািখচুম্বন করিলেন। রাগে কমলমণিও অধীরা হইয়া শ্ৰীশচন্দ্রের মািখচুম্বন করিল। দেখিয়া সতীশচন্দ্রের বড় প্রীতি জন্মিল। তিনি জানিতেন যে, মািখচুম্বন তাঁহার ইজারা মহল। অতএব তাহার ছড়াছড়ি দেখিয়া রাজভাগ আদায়ের অভিলাষে মার জানা ধরিয়া দাঁড়াইয়া উঠিলেন ; এবং উভয়েরই মািখপানে চাহিয়া উচ্চৈঃস্বরে হাসির লহর তুলিলেন। সে হাসি কমলমণির কণে কি মধ্যর বাজিল! কমলমণি তখন সতীশকে ক্লোড়ে উঠাইয়া লইয়া ভুরি ভুরি মািখচুম্বন করিল। পরে শ্ৰীশচন্দ্র কমলের ক্লোড়ি হইতে তাহাকে লাইলেন এবং ভুরি ভুরি মািখচুম্বন করিলেন। সতীশ বাব এইরপে রাজভাগ আদায় করিয়া যথাকলে অবতরণ করিলেন, এবং পিতার সবৰ্ণময় পেনসিলটি দেখিতে পাইয়া অপহরণমানসে ধাবমান হইলেন। পরে হস্তগত করিয়া উপাদেয় ভোজ্য বিবেচনায় পেনসিলটি ম্যুখে দিয়া লেহন করিতে প্রবত্ত হইলেন। করাক্ষেত্রের যন্ধকালে ভগদত্ত এবং অজ্ঞজনে ঘোরতর যন্ধ হয়। ভগদত্ত অজ্ঞজনেপ্রতি অনিবায্য বৈষ্ণবাস্ত্র নিক্ষেপ করেন; অজ্ঞজনকে তন্নিবারণে অক্ষম জানিয়া শ্ৰীকৃষ্ণ স্বয়ং বক্ষঃ পাতিয়া সেই অস্ত্র গ্রহণ করিয়া তাহার শমতা করেন। সেইরাপ, কমলমণি ও শ্ৰীশচন্দ্রের এই বিষম যদুদ্ধে, সতীশচন্দ্র মহাস্ত্র সকল আপনি বদনমন্ডলে গ্রহণ করায় যন্ধের শমতা হইল। কিন্তু ইহাদের এই রােপ সন্ধিবিগ্রহ বাদলের বিভিটর মত—দান্ডে দন্ডে হইত, দন্ডে দন্ডে যাইত। শ্ৰীশচন্দ্র তখন কহিলেন, “তা সত্য সত্যই কি তোমার গোবিন্দ পারে যেতে হবে ? আমি একা থাকিব কি প্রকারে ? * ক। তোমায় যেন আমি একা থাকিতে সাধতেছি। আমিও যাব, তুমিও যাবে। তা যাও, সকাল সকাল আপিস সারিয়া আইস, আর দেরি কর ত, সতীশে আমাতে দহ-দিকে দই জনে কাঁদিতে বসবে। শ্ৰী। আমি যাই কি প্রকারে ? আমাদের এই তিসি কিনিবার সময়। তুমি তবে একা যাও । কা। আয়, সতীশ ! আয়, আমরা দ-জনে দই দিকে কাঁদতে বসি । মার আদরের ডাক সতীশের কাণে গোল—সতীশ আমনি পেনসিলভোজন ত্যাগ করিয়া লহর তুলিয়া আহাদের হাসি হাসিল, সতরাং কমলের। এবার কাঁদা হলো না। তৎপরিবত্তে সতীশের মািখচুম্বন করিলেন,-দেখাদেখি শ্ৰীশও তাঁহাই করিলেন। সতীশ আপনার বাহাদরি দেখাইয়া আর এর্ক লহর তুলিয়া হাসিল। এই সকল বহৎ ব্যাপার সমাধা হইলে কমল আবার কহিলেন, “এখন কি হকুম হয় ?” শ্ৰী।। তুমি যাও, মানা করি না, কিন্তু তিসির মরসমটায় আমি কি প্রকারে যাই ? শনিয়া কমলমণি মখ ফিরাইয়া মানে বসিলেন। আর কথা কহেন না। ’ শ্ৰীশচন্দ্রের কলমে একটা কালি ছিল। শ্ৰীশ সেই কলম লইয়া পশ্চাৎ হইতে গিয়া কমলের কপালে একটি টিপ কাটিয়া দিলেন। তখন কমল হাসিয়া বলিলেন, “প্ৰাণাধিক, আমি তোমায় কত ভালবাসি।” এই বলিয়া, কমল শ্ৰীশচন্দ্রের স্কন্ধ বাহ, দবারা বেস্টন করিয়া, তাঁহার মািখচুম্বন করিলেন, সতরাং টিপের কালি সমদায়টাই শ্ৰীশের গালে লাগিয়া রহিল। ミbミ