পাতা:বঙ্কিম রচনাবলী (প্রথম খণ্ড).pdf/২৮৯

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

७ झान्नावव्ौ নগেন্দ্র এবং তাঁহার পিতার বিশেষ যত্ন ছিল যে, গাহের পরিচারিকারা বিশেষ সৎস্বভাব বিশিষ্টা হয়। এই অভিপ্ৰায়ে উভয়েই পৰ্য্যাপত বেতনদান স্বীকার করিয়া, একটা ভদ্রঘরের স্ত্রীলোকগণকে দাসীত্বে নিযক্ত করিতে চেষটা পাইতেন। তাঁহাদিগের গহে পরিচারিকা সখে ও সম্পমানে থাকিত, সতরাং অনেক দারিদ্র্যগ্রস্ত ভদ্রলোকের কন্যারা তাঁহাদের দাসীবত্তি স্বীকার করিত। এই প্রকার যাহারা ছিল, তাহদের মধ্যে হীরা প্রধানা। অনেকগলি পরিচারিকা কায়সথকন্যা-হীরাও কায়সােথ—নগেন্দ্রের পিতা হীরার মাতামহীকে গ্রামান্তর হইতে আনয়ন করেন। প্রথমে তাহার মাতামহীই পরিচয্যায় নিযক্ত হইয়াছিল—হীরা তখন বালিকা, মাতামহীর সঙেগ আসিয়াছিল। পরে হীরা সমৰ্থা হইলে প্রাচীনা দাসীবত্তি ত্যাগ করিয়া আপন সঞ্চিত ধনে একটি সামান্য গহ নিম্পমাণ করিয়া গোবিন্দপারে বাস করিল—হীরা দত্তগহে। চাকরি করিতে প্রবত্ত হইল। এক্ষণে হীরার বয়স বিংশতি বৎসর। বয়সে সে প্রায় অন্যান্য দাসীগণ অপেক্ষা কনিভাঠা । তাহার বন্ধির প্রভাবে এবং চরিত্ৰগণে সে দাসীমধ্যে শ্রেষ্ঠা বলিয়া গণিত হইয়াছিল। হীরা বাল্যবিধবা বলিয়া গোবিন্দপারে পরিচিতা। কেহ কখন তাহার স্বামীর কোন প্রসঙগ শনে নাই। কিন্তু হীরার চরিত্রেও কেহ কোন কলঙক শনে নাই। তবে হীরা অত্যন্ত মািখরা, সধবার ন্যায় বেশ বিন্যাস করিত, এবং বেশ বিন্যাসে বিশেষ প্রীতা ছিল। 强 হীরা আবার সন্দরী—উত্তজবল শ্যামাণ্ডগী, পদ্মাপলাশিলোচনা। দেখিতে খৰ্ব্ববাকৃতি ; মখখানি যেন মেঘঢাকা চাঁদ ; চুলগলি যেন সাপ ফণা ধরিয়া ঝালিয়া রহিয়াছে। হীরা আড়ালে বসে গান করে ; দাসীতে দাসীতে ঝগড়া বাধাইয়া তামাসা দেখে; পাচিকাকে অন্ধকারে ভয় দেখায়; ছেলেদের বিবাহের আবদার করিতে শিখাইয়া দেয়; কাহাকে নিদ্রিত দেখিলে চৰণ কালি দিয়া সং সাজায় । কিন্তু হীরার অনেক দোষ। তাহা ক্ৰমে জানা যাইবে । আপাততঃ বলিয়া রাখি, হীরা আতর গোলাপ দেখিলেই চুরি করে। সােয্যমখনী হীরাকে ডাকিয়া কহিলেন, “ঐ বৈষ্ণবীকে চিনিস ?” হীরা। না। আমি কখন পাড়ার বাহির হই না।—আমি বৈষ্ণবী ভিখারী কিসে চিনিব ? ঠাকুরবাড়ীর মাগনীদের ডেকে জিজ্ঞাসা কর না। কারণা কি শীতলা জানিতে পারে। সােয্য। এ ঠাকুরবাড়ীর বৈষ্ণবী নয়। এ বৈষ্ণবী কে, তোকে জানতে হবে। এ বৈষ্ণবীই বা কে, আর বাড়ীই বা কোথায়? আর কুন্দের সঙ্গে এত ভােবই বা কেন ? এই সকল কথা যদি ঠিক জেনে এসে বলিতে পারিস, তবে তোকে নািতন বারাণসী পরাইয়া সং দেখিতে পঠাইয়া দিব । নািতন বারাণসীর কথা শনিয়া হীরার পাঁচ হাত বািক হইল, জিজ্ঞাসা করিল, “কখন জানিতে যেতে হবে।” স। তোর যখন খসি । কিন্তু এখনও ওর পাছৰ পাছ না গেলে ঠিকানা পাবি না। হীরা। আচ্ছা। স। কিন্তু দেখিস যেন বৈষ্ণবী কিছ: বঝিতে না পারে। আর কেহ কিছ: বঝিতে না পারে। এমত সময়ে কমল ফিরিয়া আসিল। সােয্যমখী তাঁহাকে পরামশের কথা সব বলিলেন। শনিয়া কমল খসি হইলেন। হীরাকে বলিলেন, “আর পারিস ত মাগনীকে দটাে বাবলার কাঁটা ফটিয়ে দিয়ে আসিস!” হীরা বলিল, “সব পারিব, কিন্তু শােধ বারাণসী নিব না।” স। কি নিবি ? কমল বলিল, “ও একটি বর চায়। ওর একটি বিয়ে দাও।” স। আচ্ছা, তাই হবে—জামাই বাবকে মনে ধরে ? বল তা হলে কমল সম্প্ৰবন্ধ করে। হী। তবে দেখবো। কিন্তু আমার মনের মত ঘরে একটি বর আছে। স। কে লো ? হী। যম । ミb b