পাতা:বঙ্কিম রচনাবলী (প্রথম খণ্ড).pdf/২৯৮

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

বিষবক্ষ মহাপাপে নিমগন যাহাদিগের চরিত্র, তাহাদিগের সকল কথা সপস্ট করিয়া লেখা বড় কতটুকর। দেবেন্দ্র হীরাকে বহল অর্থের লোভ প্রদর্শন করিয়া, কুন্দকে বিক্ৰয় করিতে বলিলেন। শনিয়া ক্ৰোধে, হীরার পদ্মপলাশ চক্ষ রক্তময় হইল-কণরন্ধুে অগিনবন্ডিট হইল। হীরা গাত্ৰোৰ্থন করিয়া কহিল, “মহাশয়! আমি দাসী বলিয়া এরপ কথা বলিলেন। ইহার উত্তর আমি দিতে পারিব না। আমার মনিবকে বলিব। তিনি ইহার উপযক্ত উত্তর দিবেন।” এই বলিয়া হীরা বেগে প্রস্থান করিল। দেবেন্দ্র ক্ষণেক কাল অপ্রতিভ এবং ভগেনাৎসাহ হইয়া নীরব হইয়াছিলেন। পরে প্রাণ ভরিয়া দই গলাস ব্রামিড পান করিলেন। তখন প্রকৃতিস্থ হইয়া মদ মদ গান গাযিলেন, “এসেছিল বকনা গোবর পর-গোয়ালে জাবনা খেতে - “ বিংশ পরিচ্ছেদ ঃ হীরার দ্বেষ প্রাতে উঠিয়া হীরা কাজে গেল। দত্তের বাড়ীতে দই দিন পর্য্যন্ত বড় গোল, কুন্দকে পাওয়া যায় না। বাড়ীর সকলেই জানিল যে, সে বাগ করিয়া গিষাছে, পাড়াপ্রতিবাসীরা কেহ জানিল, কেহ জানিল না। নগেন্দ্ৰ শনিলেন যে, কুন্দ গহত্যাগ করিয়া গিয়াছে—কেন গিয়াছে, কেহ। তাহা শনাইল না। নগেন্দ্ৰ ভাবিলেন, আমি যাহা ভাবিয়ছিলাম, তাহা শনিয়া, কুন্দ আমাব গহে। আর থাকা অন্যচিত বলিয়া চলিয়া গিয়াছে। যদি তাই, তবে কমলের সঙ্গে গেল না কেন ? নগেন্দ্রের মািখ মেঘাচ্ছন্ন হইয়া রহিল। কেহ তাঁহােব নিকটে আসিতে সাহস করিল না। সষ্যমখেীব কি দোষ, তাহা কিছ জানিলেন না, কিন্তু সােয্যমখনীর সঙ্গে আলাপ বন্ধ করিলেন। গ্রামে গ্রামে পাড়ায় পাড়ায় কুন্দনন্দিনীর সন্ধানাথ সত্ৰীলোক চর পাঠাইলেন। সষ্যমখী রাগে বা ঈষ্যার বশীভূত হইয়া, ফাহাই বলন, কুন্দের পলায়ন শনিয়া অতিশয় কাতর হইলেন। বিশেষ কমলমণি বৰ্ব্বাইয়া দিলেন যে, দেবেন্দ্ৰ যাহা বলিয়াছিল, তাহা কদাচ বিশ্ববাসযোগ্য নহে। কেন না, দেবেন্দ্রের সহিত গপত প্রণয় থাকিলে, কখন অপ্রচার থাকিত না। আর কুন্দের থেরািপ সর্বভাব, তাহাতে কদাচ ইহা সম্ভব বোধ হয় না। দেবেন্দ্ৰ মাতাল, মদের মখে মিথ্যা বড়াই করিয়াছে। সােয্যমখী এ সকল কথা বঝিলেন, এজন্য অন্যতাপ কিছ, গারতের হইল । তাহাতে আবার স্বামীর বিরাগে আরও মমাব্যথা পাইলেন। শত বার কুন্দকে গালি দিতে লাগিলেন, সহস্ৰ বাের আপনাকে গালি দিলেন। তিনিও কুন্দের সন্ধানে লোক পাঠাইলেন। কমল কলিকাতায় যাওয়া সৰ্থগিত করিলেন । কমল কাহাকেও গালি দিলেন না— সােয্যমখীকেও অণমাত্র তিরস্কার করিলেন না। কমল গ’ল৷ হইতে কণ্ঠহার। খলিয়া লইয়া গহস্থ সকলকে দেখাইয়া বলিলেন, “যে কুন্দকে আনিয়া দিবে, তাহাকে এই হার দিব।” পাপ হীরা এই সব দেখে শানে, কিন্তু কিছর বলে না। কমলের হার দেখিয়া এক একবার লোভ হইয়াছিল—কিন্তু সে লোভ সক্ষবরণ করিল। দ্বিতীয় দিন কাজ করিষা দই প্রহরের সময়ে, আয়নীর সনানের সময় কঝিয়া, কুন্দকে খাওয়াইল । পরে রাত্রে আসিয়া উভয়ে শয্যরচনা করিয়া শয়ন করিল। কুন্দ বা হীরা কেহই নিদ্রা গেল না-কুন্দ আপনার মনের দঃখে জাগিয়া রহিল। হীরা আপন মনের সখ-দঃখে জাগিয়া রহিল। সেও কুন্দের ন্যায় বিছানায় শাইয়া চিন্তা করিতেছিল। যাহা চিন্তা করিতেছিল, তাহা মাখে অবাচ্য—অতি গোপন । ও হীরে ! ছিঃ! ছি:! হীরে! মখিখানি ত দেখিতে মন্দ নয়—বয়সও নবীন, তবে সদায়মধ্যে এত খলকপট কেন ? কেন ? বিধাতা তাহাকে ফাঁকি দিল কেন ? বিধাতা তাহাকে ফাঁকি দিয়াছে, সেও সকলকে ফাঁকি দিতে চায়। হীরাকে সহেযািমদুখীর আসনে বসাইলে, হীরার কি খলকপট থাকি ৩ ? হীরা বলে, “না।” হীরাকে হীরার আসনে বসাইয়াছে বলিয়াই হীরা, হীরা। লোকে বলে, “সকলই দলেটর দোষ।" দন্ট বলে, “আমি ভাল মানষে হাইতাম--কিন্তু লোকের দোষে দন্ডট হইয়াছি।” লোকে বলে, “পাঁচ কেন সাত হইল না ?” পাঁচ বলে, “আমি সাত হাইতাম—কিন্তু দাই আর পাঁচে সাত—বিধাতা, অথবা বিধাতার সম্ৰাট লোক যদি আমাকে আর দই দিত, তা হইলেই আমি সাত হাইতাম।” হীরা তাহাই ভাবিতেছিল। হীরা ভাবিতেছিল—“এখন কি করি ? পরমেশবার যদি সংবিধা করিয়া দিয়াছেন, তবে আপনার দোষে সব নম্পট না হয়। এদিকে যদি কুন্দকে দত্তের বাড়ী ফিরিয়া লইয়া যাই, তবে RN (t