পাতা:বঙ্কিম রচনাবলী (প্রথম খণ্ড).pdf/৩১২

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

বিষবক্ষ অন্টাবিংশ পরিচ্ছেদ ঃ আশীৰবাদ-পত্ৰ শোকের প্রথম বেগ সম্পবরণ হইলে, কমলমণি পত্র খলিয়া পড়িলেন। পত্ৰখানির শিরোনামায় তাঁহারই নাম। পত্র এইরহপ;— “যে দিন স্বামীর মাখে শনিলাম যে, আমাতে আর তাঁর কিছমাত্ৰ সখি নাই, তিনি কুন্দনন্দিনীর জন্য উন্মাদগ্ৰস্ত হইবেন, অথবা প্রাণত্যাগ করিবেন, সেই দিনই মনে মনে সঙকলপ করিলাম, যদি কুন্দনন্দিনীকে আবার কখনও পাই, তবে তাহার হাতে স্বামীকে সমপণ করিয়া তাঁহাকে সখী করিব। কুন্দনন্দিনীকে স্বামী দান করিয়া। আপনি গহত্যাগ করিয়া যাইব; কেন না, আমার স্বামী কুন্দনন্দিনীর হইলেন, ইহা চক্ষে দেখিতে পারিব না। এখন কুন্দনন্দিনীকে পােনকবার পাইয়া তাহাকে স্বামী দান করিলাম। আপনিও গািহত্যাগ করিয়া চলিলাম। “কালি বিবাহ হইবার পরেই আমি রাত্রে গহিত্যাগ করিয়া যাইতাম। কিন্তু স্বামীর যে সখের কামনায় আপনার প্রাণ আপনি বধ করিলাম, সে সখি দাই এক দিন চক্ষে দেখিয়া যাইবার সাধ ছিল। আর তোমাকে আর একবার দেখিয়া যাইব সাধ ছিল। তোমাকে আসিতে লিখিয়াছিলাম —তুমি অবশ্য আসিবে জানিতাম। এখন উভয় সাধ পরিপািণ হইয়াছে। আমার যিনি প্ৰাণাধিক, তিনি সখী হইয়াছেন ইহা দেখিয়াছি। তোমার নিকট বিদায় লইয়াছি। আমি এখন চলিলাম। “তুমি যখন এই পত্ৰ পাইবে, তখন আমি অনেক দর। যাইব । তোমাকে যে বলিয়া আসিলাম না, তাহার কারণ এই যে, তা হইলে তুমি আসিতে দিতে না। এখন তোমাদের কাছে আমার এই ভিক্ষা যে, তোমরা আমার সন্ধান করিও না। “আর যে তোমার সহিত সাক্ষাৎ হইবে, এমত ভরসা নাই। কুন্দনন্দিনী থাকিতে আমি আর এ দেশে আসিব না—এবং আমার সন্ধানও পাইবে না। আমি এখন পথের কােণ্ডগালিনী হইলামভিখারিণীবেশে দেশে দেশে ফিরিব-ভিক্ষা করিয়া দিনপাত করিব,-আমাকে কে চিনিবে ? আমি টাকা কড়ি সঙ্গে লইলে লইতে পারিতাম, কিন্তু প্রবত্তি হইল না। আমার স্বামী আমি ত্যাগ করিয়া চলিলাম—সোণা-র পা সঙ্গে লইয়া যাইব ? “তুমি আমার একটি কাজ করিও । আমার স্বামীর চরণে আমার কোটি কোটি প্ৰণাম জানাইও । আমি তাঁহাকে পত্র লিখিয়া যাইবার জন্য অনেক চেস্টা করিলাম, কিন্তু পারিলাম না। চক্ষের জলে অক্ষর দেখিতে পাইলাম না-কাগজ ভিজিয়া নম্পট হইল। কাগজ ছিাড়িয়া ফেলিয়া আবার লিখিলাম-আবার ছিড়িলাম-আবার ছিড়িলাম—-কিন্তু আমার বলিবার যে কথা আছে, তাহা কোন পত্রেই বলিতে পারিলাম না। কথা বলিতে পারিলাম না বলিয়া, তাঁহাকে পত্র লেখা হইল না। তুমি যেমন করিয়া ভাল বিবেচনা কর, তেমনি করিয়া আমার এ সংবাদ তাঁহাকে দিও । তাঁহাকে বঝাইয়া বলিও যে, তাঁহার উপর রাগ করিয়া আমি দেশান্তরে চলিলাম না। তাঁহার উপর আমার রাগ নাই ; কখনও তাঁহার উপর রাগ করি নাই, কখনও করিব না। যাঁহাকে মনে হইলেই আহাদ হয়, তাঁহার উপর কি রাগ হয় ? তাঁহার উপর যে অচলা ভক্তি, তাহাই রহিল, যত দিন না মাটিতে এ মাটি মেশে, তত দিন থাকিবে। কেন না, তাঁহার সহস্র গণ আমি কখন ভুলিতে পারিব না। এত গণ কাহারও নাই। এত গণ কাহারও নাই বলিয়াই আমি তাঁহার দাসী। এক দোষে যদি তাঁহার সহস্র গণ ভুলিতে পারিতাম, তবে আমি তাঁহার দাসী হইবার যোগ্য নাহি। তাঁহার নিকট আমি জন্মের মত বিদায় লইলাম। জন্মের মত সবামীর কাছে বিদায় লইলাম, ইহাতেই জানিতে পরিবে যে, আমি কত দঃখে সববত্যাগিনী হইতেছি। “তোমার কাছে জন্মের মত বিদায় লইলাম, আশীৰ্ব্ববাদ করি, তোমার স্বামী পত্ৰ দীঘজীবী হউক, তুমি চিরসখী হও । আরও আশীব্বাদ করি যে, যে দিন তুমি সবামীর প্রেমে বঞ্চিত হইবে, সেই দিন যেন তোমার আয়ঃশেষ হয়। আমায় এ আশীৰ্ব্ববাদ কেহ করে নাই।” ऐछेन्र्ताह९भ °र्गन्न८छाम 8 विश्वबश्वक कि ? যে বিষবক্ষের বীজ বপন হইতে ফলোৎপত্তি এবং ফলভোগ পয্যন্ত ব্যাখ্যানে আমরা প্রবত্ত হইয়াছি, তাহা সকলেরই গহপ্রাঙ্গণে রোপিত আছে। রিপর প্রাবল্য ইহার বীজ; ঘটনাধীনে তাহা সকল ক্ষেত্রে উপত হইয়া থাকে। কেহই এমন মনষ্যে নাই যে, তাঁহার চিত্ত রাগন্বেষকাম VO ON