পাতা:বঙ্কিম রচনাবলী (প্রথম খণ্ড).pdf/৩১৩

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ब७क्sा • झष्न्बव्ी ক্ৰোধাদির অসপশ্য। জ্ঞানী ব্যক্তিরাও ঘটনাধীনে সেইসকল রিপকর্তৃক বিচলিত হইয়া থাকেন। কিন্তু মনষ্যে মনষ্যে প্রভেদ এই যে, কেহ আপনি উচ্ছলিত মনোবাত্তি সকল সংযত করিতে পারেন এবং সংযত করিয়া থাকেন, সেই ব্যক্তি মহাত্মা ; কেহ বা আপন চিত্ত সংযত করে না, তাহারই জন্য বিষবক্ষের বীজ উপাত হয়। চিত্তসংযমের অভাবই ইহার অঙ্কুর, তাহাতেই এ বক্ষের বদ্ধি। এই ব্যক্ষ মহাতেজস্বী; একবার ইহার পশ্চিন্ট হইলে, আর নাশ নাই। এবং ইহার শোভা অতিশয় নয়নপ্রীতিকর; দরি হইতে ইহার বিবিধবণ পল্লব ও সমৎফল্ল মাকুলদাম দেখিতে অতি রমণীয়। কিন্তু ইহার ফল বিষময় ; যে খায়, সেই মরে। ক্ষেত্ৰভেদে, বিষব ক্ষে নানা ফল ফলে। পাত্রবিশেষে, বিষবক্ষে রোগশোকাদি নানাবিধ ফল। চিত্তসংযমপক্ষে প্রথমতঃ চিত্তসংযমে প্রবত্তি, দ্বিতীয়তঃ চিত্তসংযমের শক্তি আবশ্যক। ইহার মধ্যে শক্তি প্রকৃতিজন্যা; প্রবত্তি শিক্ষাজন্যা। প্রকৃতিও শিক্ষার উপর নিভাির করে। সতরাং চিত্তসংযমপক্ষে শিক্ষাই মল। কিন্তু গাের পদেশকে কেবল শিক্ষা বলিতেছি না, অন্তঃকরণের পক্ষে দঃখভোগই প্রধান শিক্ষা। নগেন্দ্রের এ শিক্ষা কখনও হয় নাই। জগদীশবর তাঁহাকে সকল সখের অধিপতি করিয়া পথিবীতে পাঠাইয়াছিলেন। কান্ত রােপ; অতুল ঐশবষ্য; নীরোগ শরীর সব্বব্যাপিনী বিদ্যা, সশীল চরিত্র, স্নেহময়ী সাধবী সত্ৰী ; এ সকল এক জনের ভাগ্যে প্রায় ঘটে না। নগেন্দ্রের এ সকলই ঘটিয়াছিল। প্রধানপক্ষে, নগেন্দ্ৰ নিজ চরিত্রগণেই চিরকাল সখী; তিনি সত্যবাদী, অথচ প্রিয়ংবদা; পরোপকারী, অথচ ন্যায়নিষ্পাঠী; দাতা, অথচ মিতব্যয়ী ; স্নেহশীল, অথচ কত্তব্যকৰ্ম্মে সিথরস ওকলাপ | পিতা, মাতা বৰ্ত্তমান থাকিতে তাঁহাদিগের নিতান্ত ভক্ত এবং প্রিয়কারী ছিলেন : ভাৰ্য্যার প্রতি নিতান্ত অন্যরক্ত ছিলেন ; বন্ধর হিতকারী; ভূত্যের প্রতি কৃপাবান ; অনঙ্গতের প্রতিপালক ; শত্রর প্রতি বিবাদশান্য। তিনি পরামশে বিজ্ঞ; কায্যে সরল ; আলাপে। নাম; রহস্যে বাঙ্ময়। এরপ চরিত্রের পরিস্কারই অবিচ্ছিন্ন সখি ;-নগেন্দ্রের আশৈশব তাহাই ঘটিয়াছিল। তাঁহার দেশে সম্পমান, বিদেশে যশঃ ; অনাগত ভৃত্য; প্ৰজাগণের সন্নিধানে ভক্তি; সােয্যমখীব নিকট অবিচলিত, অপরিমিত, অকলষিত স্নেহরাশি। যদি তাঁহার কপালে এত সখি না ঘটিত, তবে তিনি কখনও এত দঃখী হইতেন না। দঃখী না হইলে লোভে পড়িতে হয় না। যাহার যাহাতে অভাব, তাহার তাহতেই লোভ। কন্দনন্দিনীকে লব্ধলোচনে দেখিবার পকেব। নগেন্দ্র কখনও লোভে পড়েন নাই; কেন না, কখনও কিছরই অভাব জানিতে পারেন নাই। সতরাং লোভ সম্পবরণ করিবার জন্য যে মানসিক অভ্যাস বা শিক্ষা আবশ্যক, তাহা তাঁহার হয় নাই। এই জন্যই তিনি চিত্তসংযমে প্রবত্ত হইয়াও সক্ষম হইলেন না। অবিচ্ছিন্ন সখি, দঃখের মােল; পািব্বগামী দঃখ ব্যতীত সন্থায়ী সািখ জন্মে না। নগেন্দ্রের যে দোষ নাই, এমত বলি না। তাঁহার দোষ গরতের; প্রায়শ্চিত্তও গারতের আরম্ভ হইল । ত্রিংশ পরিচ্ছেদ ৪ অন্বেষণ বলা বাহদুল্য যে, যখন সত্যািমদুখীর পলায়নের সংবাদ গহমধ্যে রাস্ট্র হইল, তখন তাঁহার অন্বেষণে লোক পাঠাইবার বড় তাড়াতাড়ি পড়িয়া গেল। নগেন্দ্ৰ চারি দিকে লোক পাঠাইলেন, শ্ৰীশচন্দ্ৰ লোক পাঠাইলেন, কমলমণি চারিদিকে লোক পাঠাইলেন। বড় বড় দাসীরা জলের কলসী ফেলিয়া ছটিল ; হিন্দ স্থানী দাবারবানেরা বাঁশের লাঠি হাতে করিয়া, তািলভরা ফরাশীর ছিটের মেরজাই গায়ে দিয়া, মসমস্যা করিয়া নাগরা জনতার শব্দ করিয়া চলিল। --খান সামারা গামছা কাঁধে, গোট কাঁকালে, মাঠাকুরাণীকে ফিরাতে চলিল। কতকগলি আত্মীয় লোক গাড়ি লইয়া বড় রাস্তায় গেল। গ্রামস্থ লোক মাঠে ঘাটে খাজিয়া দেখিতে লাগিল; কোথাও বা গাছতলায় কমিটি করিয়া তামাকু পোড়াইতে লাগিল। ভদ্রলোকেরাও বারোইয়ারির আটচালায়, শিবের মন্দিরের রকে, ন্যায়কচকচি ঠাকুরের টােলে এবং অন্যান্য তথাবিধ স্থানে বসিয়া ঘোঁটি করিতে লাগিলেন। মাগী-ছাগী সন্নানের ঘাটগলাকে ছোট আদালত করিয়া তুলিল। বালকমহলে ঘোর পক্ৰবাহ বাধিয়া গেল; অনেক ছেলে ভরসা করিতে লাগিল, পাঠশালার ছটি হইবে। প্রথমে শ্ৰীশচন্দ্র, নগেন্দ্র এবং কমলকে ভরসা দিতে লাগিলেন, “তিনি কখনও পথ হাঁটেন নাই—কত দরে যাইবেন ? এক পোওয়া, আধ ক্লোশ পথ গিয়া কোথাও বসিয়া আছেন, এখনই OSO