পাতা:বঙ্কিম রচনাবলী (প্রথম খণ্ড).pdf/৩৫৬

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

/शगब्रा ಫ್ಲಿ: না যাও, আমি ধরিয়া লইয়া যাইব । কিন্তু যে কথাটা বলিয়াছি—মাকে বশ করিতে হহবে।” সভাষিণী আমাকে টানিয়া লইয়া গিয়া গাড়িতে তুলিল। পরোহিত মহাশয়ের দেওয়া রাঙ্গাপেড়ে কাপড় দইখানির মধ্যে একখানি আমি পরিয়াছিলাম—আর একখানি দাঁড়িতে শকাইতেছিল—তাহা লইয়া যাইতে সময় দিল না। তাহার পরিবত্তে আমি সভাষিণীর পত্রকে কোলে লইয়া মািখচুম্বন করিতে করিতে চলিলাম। সপতম পরিচ্ছেদ ঃ কালির বোতল মা—সম্ভাষিণীর শাশড়ী।। তাঁহাকে বশ করিতে হইবে-সতরাং গিয়াই তাঁহাকে প্ৰণাম করিয়া পায়ের ধলা লইলাম, তার পর এক নজর দেখিয়া লইলাম, মানষটা কি রকম। তিনি তখন ছাদের উপর অন্ধকারে, একটা পাটী পাতিয়া, তাকিয়া মাথায় দিয়া শইয়া পড়িয়া আছেন, একটা ঝি পা টিপিয়া দিতেছে। আমার বোধ হইল, একটা লক্ষবা কালির বোতল গলায় গলায় কালি ভরা, পাটীর উপর কাত হইয়া পড়িয়া গিয়াছে। পাকা চুলগলি বোতলটির টিনের ঢাকনির* মত শোভাগ পাইতেছে। অন্ধকারটা বাড়াইয়া তুলিয়াছে। আমাকে দেখিয়া গাঁহিণী ঠাকুরাণী বধকে জিজ্ঞাসা করিলেন, “এটি কে ?” বধ বলিল, “তুমি একটি রাঁধানী খাঁজিতেছিলে, তাই একে নিয়ে এসেছি।” গহিণী। কোথায় পেলে ? বধ । মােসীমা দিয়েছেন। গ। বামন না কয়েৎ ? বা । কয়েৎ | গ। আঃ, তোমার মােসীমার পোড়া কপাল! কায়েতের মেয়ে নিয়ে কি হবে ? এক দিন বামনকে ভাত দিতে হলে কি দিব ? ব। রোজ ত আর বামনকে ভাত দিতে হবে না—যে কয় দিন চলে চলকে-তার পর বামনী পেলে রাখা যাবে—তা বামনের মেয়ের ঠ্যাকার বড়—আমরা তাঁদের রান্নাঘরে গেলে হাঁড়িকুড়ি ফেলিয়া দেন—আবার পাতের প্রসাদ দিতে আসেন ! কেন, আমরা কি মচি ? আমি মনে মনে সভাষিণীকে ভূয়সী প্রশংসা করিলাম—কালিভরা লম্বা বোতলটাকে সে মঠোর ভিতর আনিতে জানে দেখিলাম। গহিণী বলিলেন, “তা সত্যি বটে। মা—ছোট লোকের এত অহঙ্কার সওয়া যায় না। তা এখন দিন কতক কায়েতের মেয়েই রেখে দেখি | মাইনে কত द6०ा6छ ?' ব। তা আমার সঙ্গে কোন কথা হয় নাই। গা। হায় রে, কলিকালের মেয়ে! লোক রাখতে নিয়ে এসেছ, তার মাইনের কথা কও নাই ? আমাকে গহিণী জিজ্ঞাসা করিলেন, “কি নেবে তুমি ?” আমি বলিলাম, “যখন আপনাদের আশ্রয় নিতে এসেছি, তখন যা দিবেন। তাই নিব।” গ। তা বামনের মেয়েকে কিছ, বেশী দিতে হয় বটে, কিন্তু তুমি কায়েতের মেয়ে— তোমায় তিন টাকা মাসে আর খোরাক-পোষাক দিব। আমার একটা আশ্রয় পাইলেই যথেস্ট-সতরাং তাঁহাতে সম্মত হইলাম। বলা বাহাল্য যে, মাহিয়ানা লইতে হইবে শনিয়াই প্ৰাণ কাঁদিয়া উঠিল। আমি বলিলাম, “তাই দিবেন।” মনে করিলাম, গোল মিটিল—কিন্তু তােহা নহে। লম্পবা বোতলটায় কালি অনেক। তিনি বলিলেন, “তোমার বয়স কি গা ? অন্ধকারে বয়স ঠাওর পাইতেছি না—কিন্তু গলাটা ছেলেমানষের মত বোধ হইতেছে।” আমি বলিলাম, “বয়স এই উনিশ-কুড়ি।” গহিণী। তবে বাছা, অন্যত্র কাজের চেষ্টা দেখা গিয়া যাও। আমি সমত্ত লোক রাখি না। সভাষিণী মাঝে হইতে বলিল, “কেন মা, সমত্ত লোকে কি কাজ কৰ্ম্ম পারে না ?”

  • Capsule,

ᏬᏩ Ꮼ R\O