পাতা:বঙ্কিম রচনাবলী (প্রথম খণ্ড).pdf/৩৬১

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

বঙ্কিম" রচনাবলী সভা। ও ইয়াস! বিবি পাণ্ডব ফাস্ট কেলাস বাবচি ছিল। এখন আমার শাশড়ীকে বঝিতে পারিলে ত ? আমি বলিলাম, “বড় নয়। কাউগালের আর বড় মানষের মেয়ের সঙ্গে সকলেই একটা প্ৰভেদ করে । ” সভাষিণী হাসিয়া উঠিল। বলিল, “মরণ আর কি তোমার! এই বঝি বঝিয়াছ ? তুমি বড় মানষের মেয়ে ব’লে বঝি তোমার আদর করেছেন ?” আমি বলিলাম, “তবে কি ?” সভা। ওর ছেলে পেট ভরে খাবে, তাই তোমার এত আদর। এখন যদি তুমি একটি কোট কর, তবে তোমার মাহিনা ডবল হইয়া যায়। আমি বলিলাম, “আমি মাহিনা চাই না। না লইলে যদি কোন গোলযোগ উপস্থিত হয়, এজন্য হােত পাতিয়া মাহিয়ানা লইব । লইয়া তোমার নিকট রাখিব, তুমি কাণ্ডগাল গরীবকে দিও । আমি আশ্রয় পাইয়াছি, এই আমার যথেস্ট । ” নবম পরিচ্ছেদ ঃ পাকাচুলের সমুখ দঃখ আমি আশ্রয় পাইলাম। আর একটি অমল্য রত্ন পাইলাম—একটি হিতৈষিণী সখী । দেখিতে লাগিলাম যে, সভাষিণী আমাকে আন্তরিক ভালবাসিতে লাগিল—আপনার ভগিনীর সঙেগ যেমন ব্যবহার করিতে হয়, আমার সঙ্গে তেমনই ব্যবহার করিত। তাঁর শাসনে দাসদাসীরাও আমাকে অমান্য করিত না। এদিকে রান্নাবান্না সম্পবন্ধেও সখে হইল। সেই বাড়ী ব্রাহ্মণ-ঠাকুরাণী—তাহার নাম সোণার মা—তিনি বাড়ী গেলেন না। মনে করিলেন, তিনি গেলে আর চাকরিটি পাইবেন না, আমি কায়েমী হইব। তিনি এই ভাবিয়া নানা ছতো করিয়া বাড়ী গেলেন না। সভাষিণীর সােপারিসে আমরা দই জনেই রহিলাম। তিনি শাশড়ীকে বঝাইলেন যে, কুমদিনী ভদ্রলোকের মেয়ে, একা সব রান্না পারিয়া উঠিবে না—আর সোণার মা বাড়া মানষেই বা কোথায় যায় ? শাশাড়ী বলিল, “দই জনকেই কি রাখিতে পারি? এত টাকা যোগায় কে ?” বধ বলিল, “তা এক জনকে রাখিতে হলে সোণার মাকে রাখিতে হয়। কুম, এত পারবে না।” গহিণী বলিলেন, “না না। সোণার মার রান্না আমার ছেলে খেতে পারে না। তবে দাই জনেই থাক।” আমার কন্টেনিবারণ জন্য সভাষিণী এই কৌশলট,কু করিল। গিন্নী তার হাতে কলের পর্তুল ; কেন না, সে রামণের বৌ-রমণের বেীর কথা ঠেলে কার সাধ্য ? তাতে আবার সভাষিণীর বন্ধি যেমন প্রখর, সর্বভাবও তেমনি সন্দির। এমন বন্ধ পাইয়া, আমার এ দঃখের দিনে একটা সখি হইল। আমি মাছ-মাংস রাঁধি, বা দই একখানা ভাল ব্যঞ্জন রাঁধি—বাকি সময়ট,কু সভাষিণীর সঙেগ গলপ করি—তার ছেলে-মেয়ের সঙ্গে গলপ করি ; হলো বা স্বয়ং গাহিণীর সঙ্গে একটা ইয়ারকি করি। কিন্তু শেষ কাজটায় একটা বড় গোলে পড়িয়া গেলাম। গহিণীর বিশবাস, তাঁর বয়স কাঁচা, কেবল আদন্টিদোষে গাছকতক চুল পাকিয়াছে, তাহা তুলিয়া দিলেই তিনি আবার যাবতী হইতে পারেন। এই জন্য তিনি লোক পাইলেই এবং অবসর পাইলেই পাকা চুল তুলাইতে বসিতেন। এক দিন আমাকে এই কাজে বেগার ধরিলেন। আমি কিছল ক্ষিপ্ৰহসন্ত, শীঘ্র শীঘ্রই ভাদ্র মাসের উল, ক্ষেত সাফ করিতেছিলাম। দরি হইতে দেখিতে পাইয়া সম্ভাষিণী আমাকে অঙগলির ইঙ্গিতে ডাকিল। আমি গহিণীর কােছ হইতে ছটি লইয়া বধরে কাছে গেলাম। সভাষিণী বলিল, “ও কি কান্ড ! আমার শাশড়ীকে নেড়া-মড়া করিয়া দিতেছ। কেন ?” আমি বলিলাম, ‘ও পাপ একদিনে চুকানই ভাল।” সভা। তা হলে কি টেকতে পারবে ? যাবে কোথায় ? আমি । আমার হােত থামে না যে। সভা। মরণ আর কি ? দই একগাছি তুলে চলে আসতে পার না! আমি। তোমার শাশড়ী যে ছাড়ে না। সভা। বল গে যে, কই, পাকা চুল ত বেশী দেখিতে পাই না-এই ব’লে চ'লে এসো। Ꮤ) Ꮹ bᎴ