পাতা:বঙ্কিম রচনাবলী (প্রথম খণ্ড).pdf/৩৭৬

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

थेक ब्रा থাকে কি না থাকে। যদি কালও এমনি ভালবাসা দেখিতে পাই, তখন তোমার সঙ্গে আবার আলাপ করিব। আজ এই পয্যন্ত।” আমি দবার খলিলাম না; অগত্যা তিনি অন্যত্র গিয়া বিশ্রাম করিলেন। জ্যৈষ্ঠ মাসের অসহ্য সন্তাপে, দারণ তৃষাপীড়িত রোগীকে স্বচ্ছ শীতল জলাশয়তীরে বসাইয়া দিয়া, মািখ বধিয়া দাও, যেন সে জল পান করিতে না পারে—বল দেখি, তার জলে ভালবাসা বাড়িবে কি না ? আমি আপনার করে তাঁহার কর গ্রহণ করিয়া বলিলাম, “প্ৰাণনাথ, হয় আমাকে রােমরাম দত্তের বাড়ী পাঠাইয়া দাও, নচেৎ অস্পটােহ আমার সঙ্গে আলাপ করিও না। এই অভটােহ তোমার পরীক্ষা।” তিনি অভটাহ পরীক্ষা সস্বীকার করিলেন। ষোড়শ পরিচ্ছেদ ৪ খন করিয়া ফাঁসি গেলাম পরিষকে দগধ করিবার যে কোন উপায় বিধাতা সত্ৰীলোককে দিয়াছেন, সেই সকল উপায়ই অবলম্বন করিয়া আমি অন্টােহ স্বামীকে জবালাতন করিলাম। আমি সত্ৰীলোক—কেমন করিয়া মািখ ফটিয়া সে সকল কথা বলিব। আমি যদি আগনি জবালিতে না জানিতাম, তবে গত রাত্ৰিতে এত জীবলিত না। কিন্তু কি প্রকারে আগন জবালিলাম—কি প্রকারে ফৎকার দিলাম —কি প্রকারে স্বামীর হৃদয় দগধ করিলাম, লজায় তাহার কিছই বলিতে পারি না। যদি আমার কোন পাঠিকা নরহত্যার ব্রত গ্রহণ করিয়া থাকেন, এবং সফল হইয়া থাকেন, তবে তিনিই বঝিবেন। যদি কোন পাঠক কখন এইরােপ নরঘাতিনীর হস্তে পড়িয়া থাকেন, তিনিই বঝিবেন। বলিতে কি, সত্ৰীলোকই পথিবীর কণ্টক। আমাদের জাতি হইতে পথিবীর যত অনিষট ঘটে, পরিষ হইতে তত ঘটে না। সৌভাগ্য এই যে, এই নরঘাতিনী বিদ্যা সকল সত্ৰীলোকে জানে না, তাহা হইলে এত দিনে পথিবী নিৰ্ম্মমনিষ্যে হইত। এই অম্পটােহ আমি সব্বদা সবামীর কাছে কাছে থাকিতাম—আদর করিয়া কথা কহিতাম—- নীরস কথা একটি কাহিতাম না। হাসি, চাহনি, অঙ্গভঙ্গী,-সে সকল ত ইতর সত্ৰীলোকের অস্ত্র। আমি প্রথম দিনে আদর করিয়া কথা কঁহিলাম।— দ্বিতীয় দিনে অন্যরাগ লক্ষণ দেখাইলাম —তৃতীয় দিনে তাঁহার ঘরকন্নার কাজ করিতে আরম্ভ করিলাম; যাহাতে তাঁহার আহারের পারিপাট্য, শয়নের পারিপাট্য, সন্নানের পারিপাট্য হয়, সব্বাংশে যাহাতে ভাল থাকেন, তাহা করিতে আরম্ভ করিলাম—স্বহস্তে পাক করিতাম; খড়িকাটি পয্যন্ত স্বয়ং প্রস্তুত করিয়া রাখিতাম। তাঁর এতটকু অসখি দেখিলে সমস্ত রাত্রি জাগিয়া সেবা করিতাম। এখন যন্ত করে আপনাদের নিকট নিবেদন যে, আপনার না মনে করেন যে, এ সকলই কৃত্রিম। ইন্দিরার মনে এতটকু গৰ্ব্ব আছে যে, কেবল ভরণপোষণের লোভে, অথবা সবামীর ধনে ধনেশবরী হইব, এই লোভে, সে এই সকল করিতে পারে না। স্বামী পাইবা এই লোভে, কৃত্রিম প্রণয় প্রকাশ করিতে পারিতাম না; ইন্দ্রের ইন্দ্রাণী হইব, এমন লোভেও পারিতাম না। স্বামীকে মোহিত করিব বলিয়া হাসি-চাহনির ঘটা ঘটাইতে পারি, কিন্তু সবামীকে মোহিত করিব বলিয়া কৃত্রিম ভালবাসা ছড়াইতে পারি না। ভগবান সে মাটিতে ইন্দিরাকে গড়েন নাই। যে অভাগী এ কথাটা না বঝিতে পরিবে,- যে নারকিনী আমায় বলিবো, “হাসি-চাহনির ফাঁদ পাতিতে পাের, খোঁপা খালিয়া আবার বাঁধতে পাের, কথার ছলে সগন্ধি কুণ্ডিতালিকগলি হতভাগ্য মিনাসের গালে ঠেকাইয়া তাকে রোমাণ্ডিত করিতে পার-আর পার না তার পাখানি তুলিয়া লইয়া টিপিয়া দিতে, কিম্বা হকার ছিলিমটায় ফন দিতে!”—যে হতভাগী আমাকে এমন কথা বলিবে, সে পোড়ারমখী আমার এই জীবনব্যুত্তান্ত যেন পড়ে না। তা, তোমরা পাঁচ রকমের পাঁচ জন মেয়ে আছে, পরষ পাঠকদিগের কথা আমি ধরি না— তাহারা এ শাস্ত্রের কথা কি বঝিবে-তোমাদের আসল কথাটা বঝাইয়া বলি। ইনি আমার স্বামী-পতিসেবাতেই আমার আনন্দ—তাই,---কৃত্রিম নহে—সমস্ত অন্তঃকরণের সহিত, আমি তাহা করিতেছিলাম। মনে মনে করিতেছিলাম যে, যদি আমাকে গ্রহণ নাই করেন, তবে আমার পক্ষে পথিবীর যে সার সখ,-যাহা আর কখনও ঘটে নাই, আর কখনও ঘটিতে নাও পারে, তাহা অন্ততঃ এই কয় দিনের জন্য প্ৰাণ ভরিয়া ভোগ করিয়া লই। তাই প্ৰাণ ভরিয়া পতিসেবা V) Գ V)