পাতা:বঙ্কিম রচনাবলী (প্রথম খণ্ড).pdf/৩৮১

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

वर्ग७दकत्र ज्ञष्नाबब्ी তিনি। ইন্দিরা নাম জানিলে কি প্রকারে ? আর আমার মনের গপত অভিপ্রায়ই বা জানিলে কি প্রকারে ? তুমি মানষ, না কোন মায়াবিনী ? আমি। সে পরিচয় পশ্চাৎ দিব। এখন আমি তোমাকে পালটা জেরা করিব, সাবরাপ উত্তর দাও । তিনি। (সািভয়ে) বল। আমি। সেদিন তুমি আমাকে বলিয়াছিলে যে, তোমার স্ত্রীকে পাওয়া গেলেও তুমি গ্রহণ করিবে না; কেন না, তাহাকে ডাকাতে কাড়িয়া লইয়া গিয়াছে; তোমার জাতি যাইবে। আমাকে ইন্দিরা বলিয়া ঘরে লইয়া গেলে সে ভয় নাই কেন ? তিনি। সে ভয় নাই ? খাবই আছে। তবে তাহাতে আমার প্রাণের দায় ছিল না—এখন আমার প্রাণ যায়—জাতি বড়, না প্ৰাণ বড় ? আর সেটাও তেমন বিষম সঙকট নয়। ইন্দিরা যে জাতিভ্রম্পটা হইয়াছিল, এমন কথা কেহ বলে না। কালদীঘিতে যাহারা ডাকাতি করিয়াছিল, তাহারা ধরা পড়িয়াছে। তাহারা একরার করিয়াছে। একরারে বলিয়াছে, ইন্দিরার গহনাগটি, মাত্ৰ কাড়িয়া লইয়া তাহাকে ছাড়িয়া দিয়াছে। কেবল এখন সে কোথায় আছে, কি হইয়াছে, তাই কেহ জানে না ; পাওয়া গেলে একটা কলঙকশন্য বক্তান্ত অনায়াসেই তৈয়ার করিয়া বলা যাইতে পারে। ভরসা করি, রমণ বােব যাহা লিখিয়া দিবেন, তাহাতে তাহার পোষকতা করিবে । তাতেও যদি কোন কথা উঠে, গ্রামে কিছ, সামাজিক দিলেই গোল মিটিবে। আমাদের টাকা আছে—টাকায় সবাইকে বশীভূত করা যায়। আমি। যদি সে আপত্তি কাটে, তবে আর আপত্তি কি ? তিনি। গোল তোমাকে লইয়া। তুমি জাল ইন্দিরা, যদি ধরা পড় ? আমি । তোমাদের বাড়ীতে আমাকেও কেহ চেনে না, আসল ইন্দিরাকেও কেহ চেনে না ; কেন না, কেবল একবার বালিকাবয়সে তাহাকে তোমরা দেখিয়াছিলে, তবে ধরা পড়িব কেন ? তিনি। কথায়। নািতন লোক গিয়া জানা লোক সাজিলে সহজে ধরা পড়ে। আমি । তুমি না হয়, আমাকে সব শিখাইয়া পড়াইয়া রাখিবে। তিনি। তা ত মনে করিয়াছি। কিন্তু সব কথা ত শিখােন যায় না। মনে কর, যদি যে কথা শিখাইতে মনে হয় নাই, এমন কথা পড়ে, তবে ধরা পড়িবে। মনে কর, যদি কখন আসল ইন্দিরা অনুসিয়া উপস্থিত হয়, উভয়ের মধ্যে বিচারকলে, পৰ্ব্বকথা জিজ্ঞাসাবাদ হইলে তুমিই ধরা পড়বে | আমি একটা হাসিলাম। এমন অবস্থায় হাসিটা আপনি আসে। কিন্তু এখন আমার প্রকৃত পরিচয় দিবার সময় হয় নাই। আমি হাসিয়া বলিলাম, “আমায় কেহ ঠকাইতে পারে না। তুমি এইমাত্র আমায় জিজ্ঞাসা করিয়াছিলে যে, আমি মানষিী কি মায়াবিনী। আমি মানষিী নাহি ; (তিনি শনিয়া শিহরিয়া উঠিলেন) আমি কি, তাহা পরে বলিব। এখন ইহাই বলিব যে, আমাকে কেহ ঠিকাইতে পারে না।” স্বামী মহাশয় স্তম্ভিত হইলেন। তিনি বদ্ধিমান কমােঠ লোক। নহিলে এত অলপ দিনে এত টাকা রোজগার করিতে পারিতেন না। মানষটা বাহিরে একটি নীরস,---কাঠকাঠি রকম, পাঠক তাহা বঝিয়া থাকিবেন—কিন্তু ভিতরে বড় মধর, বড় কোমল, বড় স্নেহশীল;—কিন্তু রমণ বাবর মত, এখনকার ছেলেদের মত, “উচ্চ শিক্ষায়' শিক্ষিত নহেন। তিনি ঠাকুর-দেবতা খাব মানিতেন। নানা দেশে ভ্ৰমণ করিয়া, ভূত-প্ৰেত, ডাকিনী-যোগিনী, যোগী-মায়াবিনী প্রভৃতির গলপ শনিয়াছিলেন। সে সকল একটা বিশ্ববাস করিতেন। তিনি আমার দবারা যেরােপ মগধ হইয়াছিলেন, তাহাও তাঁহার এই সময়ে সমরণ হইল; যাহাকে আমার অসাধারণ বন্ধি বলতেন, তাহাও সমরণ হইল ; যাহা বঝিতে পারেন নাই, তাহাও সমরণ হইল। অতএব আমি যে বলিলাম, আমি মানষিী নহি, তাহাতে তাঁহার একটা বিশ্ববাস হইল। তিনি কিছ. কাল স্তম্ভিত ও ভীত হইয়া রহিলেন। কিন্তু তার পর নিজ বন্ধিবলে, সে বিশ্ববাসটিকু দরে করিয়া বলিলেন, “আচ্ছা, তুমি কেমন মায়াবিনী, আমি যা জিজ্ঞাসা করি, বল দেখি ?” আমি । জিজ্ঞাসা কর। তিনি। আমার সন্ত্রীর নাম ইন্দিরা, জােন। তার বাপের নাম কি ? আমি । হরমোহন দত্ত । Ꮼ CᏄ Ꮜ