পাতা:বঙ্কিম রচনাবলী (প্রথম খণ্ড).pdf/৩৮৪

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

हेर्शकाद्रा DDDB BBBYDS S DDDBD DBBuBD এইরুপ কথাবাৰ্ত্তা হইলে পর আমরা যথাকলে উভয়ে কলিকাতা হইতে যাত্ৰা করিলাম। তিনি আমাকে কালােদীঘি নামক সেই হতভাগ্য দীঘি পার করিয়া দিয়া নিজালয়ের অভিমখে যাত্রা করিলেন। সঙেগর লোকজন আমাকে মহেশপার লইয়া গেল। গ্রামের বাহিরে বাহক ও রক্ষকদিগকে অবস্থিতি করিতে বলিয়া দিয়া আমি পদব্রজে গ্রামের মধ্যে প্রবেশ করিলাম। পিতার গহ সম্মখে দেখিয়া, এক নিজজন স্থানে বসিয়া অনেক রোদন করিলাম। তাহার পর গহমধ্যে প্রবেশ করিলাম। সমখেই পিতাকে দেখিয়া প্ৰণাম করিলাম। তিনি আমাকে চিনিতে পারিয়া আহাদে বিবশি হইলেন। সে সকল কথা এসথানে বলিবার অবসর নাই। আমি এত দিন কোথায় ছিলাম, কি প্রকারে আসিলাম—তাহা কিছই বলিলাম না। পিতামাতা জিজ্ঞাসা করিলে বলিলাম, “এর পরে বলিব ।” সময়ান্তরে সস্থল কথা তাঁহাদিগকে বলিলাম, কিন্তু সব কথা নহে। এতটকু বঝিতে দিলাম যে, পরিশেষে আমি সবামীর নিকটেই ছিলাম এবং স্বামীর নিকট হইতেই আসিয়াছি। এবং তিনিও দই একদিনের মধ্যে এখানে আসিবেন। সব কথা ভাঙিগয়া-চুরিয়া কামিনীকে বলিলাম। কামিনী আমার অপেক্ষা দই বৎসরের ছোট। বড় রঙ্গ ভালবাসে। সে বলিল, “দিদি ! যখন মিত্ৰজা এত বড় গোবরগণেশ, তা’কে নিয়া একটি রঙ্গ করিলে হয় না ?” আমি বলিলাম, “আমারও সেই ইচ্ছা।” তখন দই বহিনে পরামর্শ আটিলাম। সকলকে শিখাইয়া ঠিক করিলাম। বাপমাকেও একটা শিখাইতে হইল। কামিনী তাঁহাদিগকে বঝাইল যে, প্রকাশ্যে গ্রহণ করাটা এখনও হয় নাই। সেটা এইখানে হইবে। আমরাই তাহা করিয়া লইব। তবে আমি যে এখানে আসিয়াছি, এই কথাটা তাঁহারা জামাতা আসিলে তাঁহার সাক্ষাতে প্রকাশ না করেন। পরদিন, সে জামাতা আসিলেন। পিতা-মাতা তাঁহাকে যথেস্ট আদর-অপেক্ষা করিলেন। আমি আসিয়াছি, এ কথা বাহিরে কাহারও মখে তিনি শনিলেন না। কাহাকেও জিজ্ঞাসা করিতে পারিলেন না। যখন অন্তঃপরে জলযোগ করিতে আসিলেন, তখন বড় বিষন্নবদন। জলযোগের সময়, আমি সম্মখে রহিলাম না। কামিনী বসিল, আর দই চারি জন জ্ঞাতি ভগিনী ভাইজ বসিল । তখন সন্ধ্যাকােল উত্তীণ হইয়াছে। কামিনী অনেক কথা জিজ্ঞাসা করিতে লাগিল; তিনি যেন কলে উত্তর দিতে লাগিলেন। আমি আড়ালে দাঁড়াইয়া সব শানিতে দেখিতে লাগিলাম। পরিশেষে তিনি কামিনীকে জিজ্ঞাসা করিলেন, “তোমার দিদি। কোথায় ?” কামিনী খাব একটা দীঘনিঃশবাস ফেলিয়া বলিল, “কি জানি কোথায় ? কালােদীঘিতে সেই যে সব্বনাশটা হইয়া গেল, তার পর ত আর কোন খবর পাওয়া যায় নাই।“ তাঁর মখখানা বড় লক্ষবা হইয়া গেল। কথা আর কহিতে পারেন না। বঝি কুম হারাইলাম, এ কথা মনে করিয়া থাকিবেন; কেন না, তাঁর চক্ষা দিয়া দর বিগলিত ধারা বহিতে লাগিল । আসিয়াছিল কি ?” কামিনী বলিল, “কুমদিনী কি কে, তাহা বলিতে পারি না, একটা স্ত্রীলোক পরশ দিন পালকী করিয়া আসিয়াছিল বটে। সে বরাবর মহাভৈরবীর মন্দিরে গিয়া উঠিয়া দেবীকে প্ৰণাম করিল। অমনিই একটা আশ্চয্য ব্যাপার উপস্থিত হইল। হঠাৎ মেঘ অন্ধকার হইয়া ঝড়বভিট হইল। সেই সত্ৰীলোকটা সেই সময় ত্রিশলে হাতে করিয়া জীবলিতে জীবলিতে আকাশে উঠিয়া কোথায় চলিয়া গেল।” প্রাণনাথ জলযোগ ত্যাগ করিলেন। হাত ধাইয়া মাথায় হাত দিয়া অনেকক্ষণ বসিয়া রহিলেন ; অনেকক্ষণ পর বলিলেন, “যে স্থান হইতে কুমদিনী অন্তদ্ধান করিয়াছে, তাহা দেখিতে পাই না ?” কামিনী বলিল, “পাও বৈ কি ? অন্ধকার হয়েছে-আলো নিয়ে আসি।” Ꮤ)Ꮜ Ꮪ