পাতা:বঙ্কিম রচনাবলী (প্রথম খণ্ড).pdf/৩৯০

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

झेन्द्भ নাচিব স্বীকার করিয়াছিলাম, তা নাচিয়াছি। আমার কথা রাখিয়াছি। তোমরা দেখিতে পাইলে না, তোমাদের আদর্টের দোষ। এখন আমি যে শিকল কিনিয়া রাখিয়াছি, তার কি হবে ? কামিনী যদি নাচের দায়ে এড়াইল, তবে আমার স্বামী গানের জন্য ধরা পড়িলেন। মজলিস হইতে হকুম হইল তোমাকে গায়িতে হইবে। তিনি পশ্চিমাঞ্চলে রীতিমত গীতবিদ্যা শিখিয়াছিলেন। তিনি সনদী খিয়াল গায়িলেন। শনিয়া সে অপসরোমন্ডলী হাসিল। ফরমায়েস করিল, “বদন অধিকারী, কি দাশ, রায়।” তাতে উ-বাবা অপটি। সতরাং অপসরোগণ সন্তুস্ট হইল না। এইরূপে দাই প্রহর রাত্ৰি কাটিল। এ পরিচ্ছেদটা না লিখিলেও লিখিতে পারিতাম। তবে এ দেশের গ্রাম্য সত্ৰীদিগের জীবনের এই ভাগটি বুকু এখন লোপ পাইয়াছে বলিয়া আমার বিশ্ববাস । লোপ পাইয়াছে, ভালই হইয়াছে; কেন না, ইহার সঙ্গে অশলীলতা, নিল্লািডজতা, কদাচিৎ বা দনীতি, আসিয়া মিশিত। কিন্তু যাহা লোপ পাইয়াছে, তাহার একটা চিত্ৰ দিবার বাসনায় এই পরিচ্ছেদটা লিখিলাম। তবে জানি না, অনেক সস্থানে এ কুরীতি লোপ না পাইয়াও থাকিতে পারে। যদি তাহা হয়, তবে যাঁহারা জামাই দেখিতে পৌরস্ত্রীদিগকে যাইতে নিষেধ করেন না, তাঁহাদের চোখ কাণ ফটাইয়া দেওয়া প্রয়োজনীয়। তাই, ধরি মাছ, না ছাই পানি করিয়া তাঁহাদের ইঙিগত করিলাম। দবাবিংশতিতম পরিচ্ছেদ ঃ উপসংহার আমি পরদিন সবামীর সঙ্গে শিবিকারোহণে শবশরিবাড়ী গেলাম। স্বামীর সঙ্গে যাইতেছি, সে একটা সখি বটে ; কিন্তু সে বার যে যাইতেছিলাম, সে আর এক প্রকারের সখ্য। যাহা কখন পাই নাই, তাই পাইবার আশায় যাইতেছিলাম ; এখন, যাহা পাইয়াছিলাম, তাই আচিলে বাঁধিয়া লইয়া যাইতেছিলাম। একটা কবির কাব্য, অপরটা ধনীর ধন। ধনীর ধন কবির কাব্যের সমান কি ? যাহারা ধনোেপাজন করিয়া বাড়া হইয়াছে, কাব্য হারাইয়াছে, তাহারাও এ কথা বলে না। তাহারা বলে, ফল যতক্ষণ গাছে ফটে, ততক্ষণই সন্দির ; তুলিলে আর তেমন সন্দের থাকে না। স্বপন যেমন সখের, সাবপেইেনর সফলতা কি তত সখের হয় ? আকাশ যেমন বস্তুতঃ নীল নয়, আমরা নীল দেখি মাত্র, ধন তেমনই। ধন সখের নয়, আমরা সখের বলিয়া মনে করি। কাব্যই সখ। কেন না, কাব্য আশা, ধন ভোগমাত্র। তাও সকলের কপালে নূয়। অনেক ধনী লোক কেবল ধনাগারের প্রহরী মাত্র । আমার একজন কুটািমব বলেন, “ত্রেজীর গাড।” ” তব সমুখে সমুখেই শবশঙ্কুরবাড়ী চলিলাম। সেখানে, এবার নিবিবাঘে পৌছিলাম। স্বামী মহাশয়, মাতাপিতার সমীপে সমস্ত কথা সবিশেষ নিবেদন করিলেন। রমণ বাবর পলিন্দা ਜ হইল। তাঁহার কথার সঙ্গে আমার সকল কথা মিলিল। আমার শব্বশর শাবাশড়ী সন্তুটি }হইলেন। সমাজের লোকেও সবিশেষ বত্তিান্ত জানিতে পারিয়া, কোন কথা তুলিল না। ! আমি সকল ঘটনা বিবত কবিয়া, সভাষিণীকে পত্র লিখিলাম। সভাষিণীর জন্য সব্বদা আমার প্রাণ কাঁদিত। আমার স্বামী আমার অন্যুরোধে রমণ বাবার নিকট হারাণীর জন্য পাঁচ শত টাকা পাঠাইয়া দিলেন। শীঘ্রই সভাষিণীর উত্তর পাইলাম। উত্তর আনন্দ-পরিপািণ ! সভাষিণী র-বাবার হস্তাক্ষরে পত্র লিখিয়াছিল। কিন্তু কথাগালো সভাষিণীর নিজের, তাহা কথার রকমেই বৰ্ব্বা গেল। সে সকলেরই সংবাদ লিখিয়াছিল। দই একটা সংবাদ উদ্ধত করিতেছি। সে লিখিতেছে, “হারাণী প্রথমে কিছতেই টাকা লইবে না। বলে, আমার লোভ। বাড়িয়া যাইবে। এটা যেন ভাল কাজই করিয়াছিলাম, কিন্তু এ রকম কাজ ত মন্দই হয়। আমি যদি লোভে পড়িয়া মন্দেই রাজি হই ? আমি পোড়ারমখীকে বঝাইলাম যে, আমার ঝাঁটা না খাইলে কি তুই এ কাজ করিতিস ? সবার বেলাই কি তুই আমার হাতের ঝাঁটা খেতে পাবি ? মন্দ কাজের বেলা কি আমি তোকে তেমনই তোর সােধ মাখে ঝাঁটা খাওয়াইব ? দটো গালােগালিও খাবি না। নাকি ? ভাল কাজ করেছিলি, বখশিশ, নে। এইরহপ অনেক বঝান-পড়ানতে সে টাকা নিয়াছে। এখন নানা ব্ৰত-নিয়ম করিবার ফাঁদ করিতেছে। যত দিন না তোমার এই সংবাদ পাওয়া গিয়াছিল, ত দিন সে আর হাসে নাই, কিন্তু এখন তার হাসির জবালায় বাড়ীর লোক অস্থির হইয়াছে।” Ծ) ԵԳ