পাতা:বঙ্কিম রচনাবলী (প্রথম খণ্ড).pdf/৪০৩

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

3 cG পাপীয়সী। প্রথম পরিচ্ছেদ ঃ দলনী বেগম সবে বাওগালা বেহার ও উড়িষ্যার অধিপতি নবাব আলিজা মীরকাসেম খাঁ মঙ্গেরের দাগে বসতি করেন। দগমধ্যে, অন্তঃপারে, রঙগমহলে, এক স্থানে বড় শোভা। রাত্রির প্রথম প্রহর এখনও অতীত হয় নাই। প্রকোম্পঠমধ্যে, সরঞ্জিত হৰ্ম্মমািতলে, সংকোমল গালিচা পাতা। রজতদীপে গন্ধ তৈলে জবালিত আলোক জনলিতেছে। সগন্ধ কুসমদামের ঘাণে গহ পরিপরিত হইয়াছে। কিওখাবের বালিশে একটি ক্ষদ্র মস্তক বিন্যস্ত করিয়া একটি ক্ষদ্রকায়া বালিকাকৃতি যাবতী শয়ন করিয়া গালেস্তাঁ পড়িবার জন্য যত্ন পাইতেছে। যাবতী সপতদশবষীয়া, কিন্তু কৃতা, বালিকার ন্যায় সবুকুমার। গলেসােতাঁ পড়িতেছে, এক একবার উঠিয়া চাহিয়া দেখিতেছে, এবং আপন মনে কতই কি বলিতেছে। কখন বলিতেছে, “এখনও এলেন না কেন ?” আবার বলিতেছে, “কেন আসিবেন ? হাজার দাসীর মধ্যে আমি এক জন দাসীমাত্র, আমার জন্য এত দর আসিবেন কেন ? “ বালিকা আবার গালেস্তাঁ পড়িতে প্রবত্ত হইল। আবার অলপ দর পড়িয়াই বলিল, “ভাল লাগে না। ভাল, নাই আসন, আমাকে সমরণ করিলেই তা আমি যাই। তা আমাকে মনে পড়িবে কেন ? আমি হাজার দাসীর মধ্যে এক জন বৈ তা নাই।” আবার গলেসােতাঁ পড়িতে আরম্ভ করিল, আবাব পািন্তক ফেলিল, বলিল, “ভাল, ঈশবর কেন এমন করেন ? এক জন কেন আর এক জনের পথ চেযে পড়িয়া থাকে ? যদি তাই ঈশবিরের ইচ্ছা, তবে যে যাকে পায়, সে তাকেই চায় না কেন ? যাকে না পায়, তাকে চায় কেন ? আমি লতা হইয়া শালবক্ষে উঠিতে চাই কেন ? “ তখন যাবতী পােস্তক ত্যাগ করিয়া, গাত্ৰোখান করিল। নিদোষগঠন ক্ষদ্র মস্তকে লম্বিত ভুজঙগরাশি-তুল্য নিবিড় কুণ্ডিত কেশভার দলিল—সবণ রচিত সগন্ধ-বিকীর্ণকারী উত্তজবল উত্তরীয় দলিল--তাহার অঙ্গসঞ্চালন মাত্র গহমধ্যে যেন রাপের তরঙগ উঠিল। অগাধ সলিলে যেমন চাণ8ল্য মাত্রে তরঙগ উঠে, তেমনি তরঙ্গ উঠিল । তখন, সন্দরী এক ক্ষদ্র বীণা লইয়া তাহাতে ঝঙ্কার দিল, এবং ধীরে ধীরে, অতি মদসবরে, গীত আরম্ভ করিল—যেন শ্রোতার ভয়ে ভীত হইয়া গায়িতেছে। এমত সময়ে, নিকটস্থ প্রহরীর অভিবাদন-শবদ এবং বাহ কদিগের পদধবনি তাহার কণরন্ধুে প্রবেশ করিল। বালিকা চমকিয়া উঠিয়া, ব্যস্ত হইয়া দবাবে গিয়া দাঁড়াইল । দেখিল, নবাবের তাঞ্জাম । নবাব মীরকাসেম আলি খাঁ তাঞ্জাম হইতে অবতরণপৰ্ব্বক, এই গহমধ্যে প্রবেশ করিলেন। নবাব আসন গ্রহণ করিয়া বলিলেন, “দলনী বিবি, কি গীত গায়িতেছিলে ?” যাবতীর tBBDS SBB DBS BDBDBDBDBBBD S BBB DDBD BB BBDBBB S SJDBBDS BBBLDS SSBBB পৌরজন সকলেই ‘দলনী বেগম" বা ‘দালানী বিবি” বলিত । দলনী লতাজাবানতমখী হইয়া রহিল। দলনীর দভাগ্যক্ৰমে নবাব বলিলেন, “তুমি যাহা গায়িতেছিলো, গাও -আমি শনিব।” তখন মহাগোলযোগ বাধিল । তখন বীণার তার অবাধ্য হইল—কিছতেই সাের বাঁধে না । বীণা ফেলিয়া দলনী বেহালা লইল, বেহালাও বেসরা বলিতে লাগিল, বোধ হইল। নবাব বলিলেন, “হইয়াছে, তুমি উহার সঙ্গে গাও ।” তাহাতে দলনীর মনে হইল যেন, নবাব মনে করিয়াছেন, দলনীর সরবোধ নাই। তার পর,-তার পর, দলনীর মািখ ফটিল না! দলনী মািখ ফটাইতে কত চেন্টা করিল, কিছতেই মািখ কথা শানিল না—কিছতেই ফটিল না! মখি, ফোটে ফোটে, ফোটে না। মেঘাচ্ছন্ন দিনে সথালকমলিনীর ন্যায়, মািখ যেন ফোটে ফোটে, তব, ফোটে না। ভীর স্বভাব কবির, কবিতা-কুসমের ন্যায়, মািখ যেন ফোটে ফোটে, তব ফোটে না। মানিনী সত্ৰীলোকের মানকালীন কণ্ঠাগত প্রণয়সম্বোধনের ন্যায়, ফোটে ফোটে, তব ফোটে না। তখন দলনী সহসা বীণা ত্যাগ করিয়া বলিল, “আমি গায়িব না।” নবাব বিস্মিত হইয়া জিজ্ঞাসা করিলেন, “কেন ? রাগ না কি ?” 8O SR