পাতা:বঙ্কিম রচনাবলী (প্রথম খণ্ড).pdf/৪৩৯

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ब७कन ब्रा5नावक्षी জীবনের ভার সহিতে চায় ? চাঁদের আলোয় এই স্থির গঙ্গার মাঝে যদি এ বোঝা নামাইতে পারি, তবে তার চেয়ে আর সখি কি ? উপরে চন্দ্ৰ হাসিতেছিল। শৈবলিনী বলিল, “তোমার শপথ—কি বলিব ?” প্রা। শপথ কর, আমাকে সপশ করিয়া শপথ করা—আমার মরণ বাঁচন শভাশাভের তুমি দায়ী শৈ। তোমার শপথ—তুমি যা বলিবে, ইহজন্মে তাঁহাই আমার স্থির। প্ৰতাপ অতি ভয়ানক শপথের কথা বলিল। সে শপথ শৈবলিনীর পক্ষে অতিশয় কঠিন, অতিশয় রক্ষ, তাহার পালন অসাধ্য, প্রাণান্তকর : শৈবলিনী শপথ করিতে পারিল না। বলিল, “এ সংসারে আমার মত দঃখী কে আছে, প্ৰতাপ ?” প্রা। আমি ! শৈ। তোমার ঐশবষ্য আছে—বল আছে।--কীত্তি আছে—বন্ধ আছে-ভরসা আছে— রপসী আছে—আমার কি আছে প্ৰতাপ ? প্ৰ। কিছ না-আইস। তবে দাই জনে ডুবি । শৈবলিনী কিছফক্ষণ চিন্তা করিল। চিন্তার ফলে, তাহার জীবন-নদীতে প্রথম বিপরীত তরঙ্গ বিক্ষিপত হইল। “আমি মারি তাহাতে ক্ষতি কি ? কিন্তু আমার জন্য প্ৰতাপ মরিবে: কেন ?” প্রকাশ্যে বলিল, “তীরে চল ।” প্ৰতাপ অবলম্বন ত্যাগ করিয়া ডুবিল। তখনও প্রতাপের হাতে শৈবলিনীর হাত ছিল। শৈবলিনী টানিল। প্রতাপ উঠিল। শৈ। আমি শপথ করিব । কিন্তু তুমি একবার ভাবিয়া দেখ। আমার সব্বস্ব কাড়িয়া লাইতেছ। আমি তোমাকে চাই না। তোমার চিন্তা কেন ছাড়িব ? প্ৰতাপ হাত ছাড়িল। শৈবলিনী আবার ধরিল। তখন অতি গম্ভীর, সাপটেশ্রত, অথচ বা অপবিকৃত সত্বরে শৈবলিনী কথা কহিতে লাগিল—বলিল, “প্ৰতাপ, হাত চাপিয়া ধর। প্রতাপ, শন, তোমায় সপশ করিয়া শপথ করিতেছি—তোমার মরণ বাঁচন শভাশােভ আমার দায়। শনি, তোমার শপথ। আজি হইতে তোমাকে ভুলিব। আজি হইতে আমার সব্বাসখে জলাঞ্জলি! আজি হইতে আমি মনকে দমন করিব। আজি হইতে শৈবলিনী মরিল ।” শৈবলিনী প্রতাপের হাত ছাড়িয়া দিল। কাঠ ছাড়িয়া দিল। প্ৰতাপ গদগদ কন্ঠে বলিল, “চল, তীরে উঠি।” উভয়ে গিয়া তীরে উঠিল। পদব্রজে গিয়া বাঁক ফিরিল। ছিপ নিকটে ছিল, উভয়ে তাহাতে উঠিয়া ছিপ খালিয়া দিল । উভয়ের মধ্যে কেহই জানিত না যে, রমানন্দ স্বামী তাহাদিগকে বিশেষ অভিনিবেশের সহিত লক্ষ্য করিতেছেন। এদিকে ইংরেজের লোক তখন মনে করিল, কয়েদী পলাইল। তাহারা পশ্চাদবত্তীর্ণ হইল। কিন্তু ছিপ শীঘ্ৰ আদশ্য হইল। রাপসীর সঙেগ মোকদ্দমায় আরজি পেশ না হইতেই শৈবলিনীর হার হইল। সপতম পরিচ্ছেদ ঃ রামচরণের মন্তি প্ৰতাপ যদি পলাইল, তবে রামচরণের মন্তি সহজেই ঘটিল। রামচরণ ইংরেজের নৌকায় বন্দিভাবে ছিল না। তাঁহারই গলিতে যে ফন্টরের আঘাত ও সান্ত্রীর নিপাত ঘটিয়াছিল, তাহা কেহ জানিত না। তাহাকে সামান্য ভূত্য বিবেচনা করিয়া আমিয়ট মঙ্গের হইতে যাত্রাকালে ছাড়িয়া দিলেন। বলিলেন, “তোমার মনিব বড় বদজাত, উহাকে আমরা সাজা দিব, কিন্তু তোমাতে আমাদের কোন প্রয়োজন নাই। তুমি যেখানে ইচ্ছা যাইতে পাের।” শনিয়া রামচরণ সেলাম করিয়া যক্ত করে বলিল, “আমি চাষা গোয়ালা—কথা জানি না-রাগ করিবেন নাআমার সঙ্গে আপনার কি কোন সম্পক আছে ?” আমিয়টকে কেহ কথা বঝাইয়া দিলে, আমিয়াট জিজ্ঞাসা করিলেন, “কেন ?” 8 ○した