পাতা:বঙ্কিম রচনাবলী (প্রথম খণ্ড).pdf/৪৪১

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

७िक ब्रान्नाव्नीं বনমধ্যে ল্যুকাইয়া রহিল। সমস্ত দিন অনাহারে গেল। সায়াহ্নকাল অতীত হইল, প্রথম অন্ধকার, পরে জ্যোৎসনা উঠিবে। শৈবলিনী অন্ধকারে, গিরি আরোহণ আরম্ভ করিল। অন্ধকারে শিলাখণড সকলের আঘাতে পদদ্বয় ক্ষতবিক্ষত হইতে লাগিল; ক্ষদ্র লতাগলমমধ্যে পথ পাওয়া যায় না; তাহার কণাটকে ভগন শাখাগ্রভাগে, বা মালাবশেষের অগ্রভাগে, হস্তপদাদি সকল ছিড়িয়া রক্ত পড়িতে লাগিল। শৈবলিনীর প্রায়শিচত্ত আরম্ভ হইল। তাহাতে শৈবলিনীর দঃখ হইল না। স্বেচ্ছাক্ৰমে শৈবলিনী এ প্রায়শ্চিত্তে প্রবত্ত হইয়াছিল। স্বেচ্ছাক্ৰমে শৈবলিনী সখময় সংসার ত্যাগ করিয়া, এ ভীষণ কণ্টকময়, হিংস্ৰজন্তুপরিবত পাকিব ত্যারণ্যে প্রবেশ করিয়াছিল। এত কাল ঘোরতর পাপে নিমগন হইয়াছিল—এমন দঃখভোগ করিলে কি সে পাপের কোন উপশম হইবে ? অতএব ক্ষতবিক্ষতচরণে, শোণিতাক্ত কলেবরে, ক্ষধাত্ত পিপাসাপীড়িত হইয়া শৈবলিনী গিরি আরোহণ করিতে লাগিল। পথ নাই—লতা গলম এবং শিলারাশির মধ্যে দিনেও পথ পাওয়া যায় না-এক্ষণে অন্ধকার। অতএব শৈবলিনী বহন কন্টে অলপদার মাত্র আরোহণ করিল ; এমত সময়ে ঘোরতর মেঘাড়ম্বর করিয়া আসিল। রন্ধ্রুশকুন্য, ছেদশান্য, অনন্ত বিস্তৃত কৃষ্ণাবরণে আকাশের মািখ আটিয়া দিল। অন্ধকারের উপর অন্ধকার নামিয়া গিরি শ্রেণী, তলস্থা বনরাজি, দারস্থ নদী, সকল ঢাকিয়া ফেলিল। জগৎ অন্ধকারমাত্রাত্মক—শৈবলিনীর বোধ হইতে লাগিল, জগতে প্রস্তর, কণাটক, এবং অন্ধকার ভিন্ন আর কিছই নাই। আর পববতারোহণ-চেস্টা ব্যথা- শৈবলিনী হতাশ হইয়া সেই কণ্টকবনে উপবেশন করিল। আকাশের মধ্যস্থল হইতে সীমান্ত পৰ্য্যন্ত, সীমান্ত হইতে মধ্যস্থল পৰ্যন্ত বিদ্যুৎ চমকিতে লাগিল। অতি ভয়ঙকর । সঙ্গে সঙ্গে অতি গম্ভীর মেঘগজজািন আরম্ভ হইল। শৈবলিনী বঝিল, বিষম নৈদাঘা বাত্যা সেই অদ্রিসান দেশে প্রধাবিত হইবে। ক্ষতি কি ? এই পৰ্ব্ববতাঙ্গ হইতে অনেক বক্ষ, শাখা, পত্র, পশুপাদি স্থানচ্যুত হইয়া বিনম্ৰাট হইবে—শৈবলিনীর কপালে কি সে সখি ঘটিবে না ? অঙ্গে কিসের শীতল সপশা অনভূত হইল। এক বিন্দ বান্টি। ফোঁটা, ফোঁটা, ফোঁটা! তার পর দিগন্তব্যাপী গঙ্গজনি। সে গজজািন বাল্টির, বায়ার এবং মেঘের ; তৎসঙ্গে কোথাও বাক্ষশাখাভঙ্গের শব্দ, কোথাও ভীত পশির চীৎকার, কোথাও সন্থানচু্যত উপলখন্ডের অবতরণDBB SS DSB KDDBBB DBDBDBD DBBDBBBB BBB BDBSS BDB BBB BBBB BBeBB শৈবলিনী বসিয়া-মাথার উপরে শীতল জলরাশি বর্ষণ হইতেছে। অঙেগব। উপর বক্ষ লতা গলম্যাদির শাখা সকল বায়তাড়িত হইয়া প্ৰহত হইতেছে, আবার উঠিতেছে, আবার প্রহিত হইতেছে। শিখরাভিমখ হইতে জলপ্রবাহ বিষম বেগে আসিয়া শৈবলিনীর উর, দেশ। পয্যন্ত ডুবাইয়া ছটিতেছে। তুমি জড় প্রকৃতি! তোমায় কোটি কোটি কোটি প্ৰণাম! তোমার দয়া নাই, মমতা নাই, স্নেহ নাই,--জীবের প্রাণনাশে সঙেকাচ নাই, তুমি অশেষ ক্লেশের জননী- অথচ তোমা হইতে সব পাইতেছি—তুমি সব্বাসখের আকর, সৰ্ব্বমঙ্গলময়ী, সৰ্ব্ববর্তীর্থসাধিকা, সৰ্ব্ব কামনাপািণকারিণী, সব্বাঙ্গসন্দরী ! তোমাকে নমস্কার। হে মহাভয়ঙকরি নানার পরঙিগণি! কালি তুমি ললাটে চাঁদের টিপ পরিয়া, মস্তকে নক্ষত্ৰকিরীটি ধরিয়া, ভুবন-মোহন হাসি হাসিয়া, ভুবন মোহিয়াছ। গঙ্গার ক্ষমদ্রোমিতে পািপমালা গাঁথিয়া পক্ষেপ পক্ষেপ চন্দ্র ঝালাইয়ােছ; সৈকতবালিকায় কত কোটি কোটি হীরক জবালিয়াছ ; গ~গার হৃদয়ে নীলিমা ঢালিয়া দিয়া, তাতে কত সখে যােবক যাবতীকে ভাসাইয়াছিলো! যেন কত আদর জান——কত আদর করিয়াছিলো। আজি এ কি ? তুমি অবিশ্ববাসযোগ্যা সৰ্ব্বনাশিনী। কেন জীব লইয়া তুমি ক্ৰীড়া কর, তাহা জানি না—তোমার বন্ধি নাই, জ্ঞান নাই, চেতনা নাই—কিন্তু তুমি সব্বময়ী, সব্বকত্রী, সব্বনাশিনী এবং সব্বশক্তিময়ী। তুমি ঐশী মায়া, তুমি ঈশবরের কীৰ্ত্তি, তুমিই অজেয়। তোমাকে কোটি কোটি কোটি প্ৰণাম। অনেক পরে বন্টি থামিল——ঝড় থামিল না—কেবল মন্দীভূত হইল মাত্র। অন্ধকার যেন গাঢ়তর হইল। শৈবলিনী বঝিল যে, জলসিক্ত পিচ্ছিল পৰ্ব্বতে আরোহণ অবতরণ উভয়ই অসাধ্য। শৈবলিনী সেইখানে বসিয়া শীতে কাঁপিতে লাগিল। তখন তাহার গাহস্থ্যি-সখপণ বেদগ্রামে পতিগহ সমরণ হইতেছিল। মনে হইতেছিল যে, যদি আর একবার সে সখাগার 88O