পাতা:বঙ্কিম রচনাবলী (প্রথম খণ্ড).pdf/৪৬২

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

bëra Gases মহম্মদ তাঁক বলিলেন, “না বিশ্ববাস করেন, পরওয়ানা দেখােন।” দ। তবে আপনি পরওয়ানা পড়িতে পারেন নাই। মহম্মদ তাঁক দলনীকে নবাবের সহিমোহরের পরওয়ানা পড়িতে দিলেন। দলনী পরওয়ানা পড়িয়া, হাসিয়া দরে নিক্ষেপ করিলেন। বলিলেন, “এ জাল। আমার সঙ্গে এ রহস্য কেন ? মরিবে সেই জন্য ?” মহ । আপনি ভীতা হইবেন না। আমি আপনাকে রক্ষা করিতে পারি। দ। ও হো! তোমার কিছর মতলব আছে! তুমি জাল পরওয়ানা লইয়া আমাকে ভয় দেখাইতে আসিয়াছ ? মহ। তবে শািনন। আমি নবাবকে লিখিয়াছিলাম যে, আপনি আমিয়টের নৌকায় তাহার উপপত্নীস্বরপ ছিলেন, সেই জন্য এই হাকুম আসিয়াছে। শনিয়া দলনী ভ্ৰ কুণ্ডিত করিলেন। স্থিরবরিশালিনী ললাট-গঙগায় তরঙ্গ উঠিল— ভ্ৰািধনীতে চিন্তা-গণ দিল—মহম্মদ তকি মনে মনে প্ৰমাদ গণিল। দলনী বলিলেন, “কেন লিখিয়াছিলে ?” মহম্মদ তাকি আন পঝিবাক আদ্যোপােন্ত সকল কথা বলিল। তখন দলনী বলিলেন, “দেখি, পরওয়ানা আবার দেখি।” মহম্মদ তােক পরওয়ানা আবার দলনীর হস্তে দিল। দলনী বিশেষ করিয়া দেখিলেন, যথাৰ্থ বটে। জাল নহে। “কই বিষ ?” “কই বিষ ?” শানিয়া মহম্মদ তাঁকি বিস্মিত হইল। বলিল, “বিষ কেন ?” দ। পরওয়ানায় কি হকুম আছে ? মহ । আপনারে বিষপান করাইতে । দ। তবে কই বিষ ? মহ। আপনি বিষপান করবেন না কি ? দ। আমার রাজার হকুম আমি কেন পালন করিব না ? মহম্মদ তাঁকে মন্মের ভিতর লডজায় মরিয়া গেল। বলিল, “যাহা হইয়াছে, হইয়াছে। আপনাকে বিষপান করিতে হইবে না। আমি ইহার উপায় করিব।” দলনীর চক্ষ হইতে ক্ৰোধে অগিনসাফলিঙগী নিগত হইল। সেই ক্ষদ্র দেহ উন্নত করিয়া দাঁড়াইয়া দলনী বলিলেন, “যে তোমার মত পাপিন্ঠের কাছে প্ৰাণদান গ্রহণ করে, সে তোমার অপেক্ষাও অধম—-বিষ আন ।” মহম্মদ তাঁক দলনীকে দেখিতে লাগিল। সন্দরী-নবীন-সবে মাত্র যৌবন-বিষায় রাপের নদী পরিয়া উঠিতেছে—ভরা বসন্তে অঙ্গ-মহকুল সব ফটিয়া উঠিয়াছে। বসন্ত বর্ষায় একত্রে মিশিয়াছে। যাকে দেখিতেছি—সে দঃখে ফাটিতেছে—কিন্তু আমার দেখিয়া কত সখা! জগদীশবর! দঃখ এত সন্দের করিয়াছ কেন ? এই যে কাতরা বালিকা—বাত্যাতাড়িত, প্রস্ফটিত কুসম--তরঙেগাৎপীড়িতা প্রমোদ-নৌকা— ইহাকে লইয়া কি করিব—কোথায় রাখিব ? সয়তন আসিয়া তাকির কাণে কাণে বলিল,—হৃদয়-মধ্যে ।” তকি বলিল, “শন সন্দেরী-আমাকে ভজ—বিষ খাইতে হইবে না।” শনিয়া দলনী—লিখিতে লজা করে—মহম্মদ তাকিকে পদাঘাত করিলেন। মহম্মদ তাঁকির বিষ দান করা হইল না—মহম্মদ তকি দলনীর প্রতি, আন্ধােদম্পিটতে চাহিতে চাহিতে ধীরে ধীরে, ফিরিয়া গেল। তখন দলনী মাটিতে লাটাইয়া পড়িয়া কাঁদিতে লাগিলেন—“ও রাজরাজেশবর! শাহানশাহা! বাদশাহের বাদশাহ! এ গরীব দাসীর উপর কি হকুম দিয়াছ! বিষ খাইব ? তুমি হকুম দিলে, কেন খাইব না! তোমার আদরই আমার আমন্ত-তোমার ক্ৰোধাই আমার বিষ-তুমি যখন রাগ করিয়াছ—তখন আমি বিষ পান করিয়াছি। ইহার অপেক্ষা বিষে কি অধিক যন্ত্রণা! হে রাজাধিরাজ্য—জগতের আলো—অনাথার ভরসা——পথিবীপতি-ঈশবিরের প্রতিনিধি—দয়ার সাগর --কোথায় রহিলে ? আমি তোমার আদেশে হাসিতে হাসিতে বিষপান করিব—কিন্তু তুমি দাঁড়াইয়া দেখিলে না—এই আমার দঃখ ।” করিমন নামে একজন পরিচারিকা দলনী বেগমের পরিচয্যায় নিযক্ত ছিল। তাহাকে ডাকিয়া, দলনী আপনার অবশিস্ট অলঙ্কার তাহার হস্তে দিলেন। বলিলেন, “লকাইয়া 8W >