পাতা:বঙ্কিম রচনাবলী (প্রথম খণ্ড).pdf/৪৬৭

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ब७दकब ब्रष्न्बव्ी আমীর হোসেন তাহার কথার উত্তর না দিয়া সমরকে বলিলেন, “সাহেব ! ইহার গ্রেপতারীর জন্য নবাব নাজিমের অনমতি আছে। আপনি আমার সঙ্গে সিপাহী দিন, ইহাকে লইয়া יין Gi.<bס সমর বিসিমত হইলেন। জিজ্ঞাসা করিলেন, “বত্তান্ত কি ?” আমীর হোসেন বলিলেন, “পশ্চাৎ বলিব।” সমর সঙ্গে প্রহরী দিলেন, আমীর হোসেন ফন্ডটরকে বধিয়া লইয়া গেলেন। পণ8ম পরিচ্ছেদ ঃ আবার বেদগ্রামে চন্দ্ৰশেখর শৈবলিনীকে সবদেশে লইয়া আসিয়াছিলেন। পরে আবার গহমধ্যে প্রবেশ করিলেন। দেখিলেন, সে গহ তখন অরণ্যাধিক ভীষণ হইয়া আছে। চালে প্রায় খড় নাই—প্রায় ঝড়ে উড়িয়া গিয়াছে; কোথায় বা চাল পড়িয়া গিয়াছে—গোরতে খড় খাইয়া গিয়াছে—বাঁশ বাঁকারি পাড়ার লোক পোড়াইতে লইয়া গিয়াছে। উঠানে নিবিড় জঙগল হইয়াছে—উরগজাতি নিভয়ে তন্মধ্যে ভ্ৰমণ করিতেছে। ঘরের কবাট সকল চোরে খালিয়া লইয়া গিয়াছে। ঘর খোলা—ঘরে দ্রব্যসামগ্রী কিছই নাই, কতক চোরে লইয়া গিয়াছে।--কতক সন্দেরী আপন গহে লইয়া গিয়া তুলিয়া রাখিয়াছে। ঘরে বল্ডিট প্রবেশ করিয়া জল বসিয়াছে। কোথাও পচিয়াছে, কোথাও ছাতা ধরিয়াছে। ইন্দর, আরসালা, বাদােড় পালে পালে বেড়াইতেছে। চন্দ্রশেখর, শৈবলিনীর হাত ধরিয়া দীঘ নিশবাস ত্যাগ করিয়া সেই গহমধ্যে প্রবেশ করিলেন। নিরীক্ষণ করিলেন যে, ঐখানে দাঁড়াইয়া, পস্তকরাশি ভস্ম করিয়াছিলেন। চন্দ্রশেখর ডাকিলেন, “শৈবলিনী।” শৈবলিনী কথা কহিল না; কক্ষদ্বারে বসিয়া পৰ্ব্ববস্বপনদন্ডট করবীর প্রতি নিরীক্ষণ করিতেছিল। চন্দ্রশেখর যত কথা কহিলেন, কোন কথার উত্তর দিল না—বিসফারিত-লোচনে চারি দিক দেখিতেছিল—একট, একটা টিপি টিপি হাসিতেছিল—একবার সািপম্পট হাসিয়া অঙ্গলির দবারা কি দেখাইল । এদিকে পল্লীমধ্যে রাইেভট্ট হইল।–চন্দ্রশেখর শৈবলিনীকে লইয়া আসিয়াছেন। অনেকে দেখিতে আসিতেছিল। সন্দরী সৰ্ব্ববাগ্রে আসিল । সন্দরী শৈবলিনীর ক্ষিপ্ততাবস্থার কথা কিছ, শনে নাই। প্রথমে আসিয়া চন্দ্রশেখরকে প্ৰণাম করিল। দেখিল, চন্দ্রশেখরের ব্ৰহ্মচারীর বেশী। শৈবলিনীর প্রতি চাহিয়া বলিল, “তা, ওকে এনেছ, বেশ করেছ। প্ৰায়শ্চিত্ত করিলেই হইল।” কিন্তু সন্দরী দেখিয়া বিস্মিত হইল যে, চন্দ্রশেখর রহিয়াছে, তব শৈবলিনী সরিলও না, ঘোমটাও টানিল না, বরং সন্দিরীর পানে চাহিয়া খিল খিল করিয়া হাসিতে লাগিল। সন্দরী ভাবিল, “এ বাঝি ইংরেজি ধরণ, শৈবলিনী ইংরেজের সংসগো শিখিয়া আসিয়াছে!” এই ভাবিয়া শৈবলিনীর কাছে গিয়া বসিল—একটি তফাৎ রহিল, কাপড়ে কাপড়ে না ঠেকে। হাসিয়া শৈবলিনীকে বলিল, “কি লা! চিনতে পারিস ?” শৈবলিনী বলিল, “পারি—তুই পাৰ্ব্বতী।” সন্দরী বলিল, “মরণ আর কি, তিন দিনে ভুলে গেলি ?” শৈবলিনী বলিল, “ভুলব কেন লো—সেই যে তুই আমার ভাত ছয়ে ফেলেছিলি বলিয়া, আমি তোকে মেরে গড়া নাড়া কল্লাম। পাৰ্ব্ববতী দিদি একটি গীত গা না ? আমার মরম কথা তাই লো তাই। আমার শ্যামের বামে কই সে রাই ? আমার মেঘের কোলে কই সে চাঁদ ? মিছে লো পেতেছি পিরীতি-ফদি। কিছ ঠিক পাই নে পাব্বিতী দিদি-কে যেন নেই—কে যেন ছিল, সে যেন নেই।-কে যেন আসবে, সে যেন আসে না—কোথা যেন এয়েছি, সেখানে যেন আসি নাই—কাকে যেন খাঁজি, তাকে যেন চিনি না।” 8 V V