পাতা:বঙ্কিম রচনাবলী (প্রথম খণ্ড).pdf/৪৬৮

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

basa সন্দরী বিস্মিতা হইল।–চন্দ্ৰশেখরের মািখপানে চাহিল—“চন্দ্রশেখর সন্দরীকে কাছে ডাকিলেন। সন্দরী নিকটে আসিলে তাহার কণে বলিলেন, “পাগল হইয়া গিয়াছে।” সন্দরী তখন বঝিল। কিছদ্ম্মক্ষণ নীরব হইয়া রহিল। সন্দরীর চক্ষ প্রথমে চকচকে হইল, তার পরে পাতার কোলে ভিজা ভিজা হইয়া উঠিল, শেষ জলবিন্দ ঝরিল—সন্দরী কাঁদিতে লাগিল। সত্ৰীজাতিই সংসারের রত্ন ! এই সন্দরী আর এক দিন কায়মনোবাক্যে প্রার্থনা করিয়াছিল, শৈবলিনী যেন নৌকাসহিত জলমগন হইয়া মরে। আজি সন্দেরীর ন্যায় শৈবলিনীর জন্য কেহ কাতর নহে । সন্দরী আসিয়া ধীরে ধীরে, চক্ষের জল মাছিতে মাছিতে শৈবলিনীর কাছে বসিল-—ধীরে ধীরে কথা কহিতে লাগিল—ধীরে ধীরে পািব্ব কথা স্মরণ করাইতে লাগিল—শৈবলিনী কিছ সমরণ করিতে পারিল না। শৈবলিনীর সমিতির বিলোপ ঘটে নাই।—তাহা হইলে পাৰ্ব্ববতী নাম মনে পড়িবে কেন ? কিন্তু, প্রকৃত কথা মনে পড়ে না—বিকৃত হইয়া, বিপরীতে বিপরীত সংলগন হইয়া মনে আসে। সন্দেরীকে মনে ছিল, কিন্তু সন্দরীকে চিনিতে পারিল না। সন্দরী, প্রথমে চন্দ্রশেখরকে আপনাদিগের গহে সনানাহারের জন্য পাঠাইলেন; পরে সেই ভগন গহ শৈবলিনীর বাসোপযোগী করিতে প্রবত্ত হইলেন। ক্ৰমে ক্ৰমে, প্রতিবাসিনীরা একে এক মাসিয়া তাঁহার সাহায্যে প্রবত্ত হইল; আবশ্যক সামগ্ৰী সকল আসিয়া পড়তে গল । এদিকে প্রতাপ মঙ্গের হইতে প্রত্যাগমন করিয়া, লাঠিয়াল সকলকে যথাসস্থানে সমাবেশ করিয়া, একবার গহে আসিয়াছিলেন। গহে আসিয়া শানিলেন, চন্দ্রশেখর গহে আসিয়াছেন। ত্বরায় তাঁহারে দেখিতে বেদগ্রামে আসিলেন। সেই দিন রমানন্দ স্বামীও সেই সস্থানে পকেবাঁ আসিয়া দর্শন দিলেন। আহাদ সহকারে সন্দরী শানিলেন যে, রমানন্দ স্বামীর উপদেশানসারে, চন্দ্ৰশেখরের ঔষধ প্রয়োগ করবেন। ঔষধ প্রয়োগের শােভ লগন অবধারিত হইল। ষষ্ঠ পরিচ্ছেদ ঃ যোগবল না। PSYCHIC FORCE ? ঔষধ কি, তাহা বলিতে পারি না, কিন্তু ইহা সেবন করাইবার জন্য, চন্দ্রশেখর বিশেষরপে আত্মশদ্ধি করিয়া আসিয়াছিলেন। তিনি সহজে জিতেন্দ্ৰিয়, ক্ষৎপিপাসাদি শারীরিক বাত্তি সকল অন্যাপেক্ষা তিনি বশীভূত করিয়াছিলেন; কিন্তু এক্ষণে তাহার উপরে কঠোর অনশনৱত আচরণ করিয়া আসিয়াছিলেন। মনকে কয় দিন হইতে ঈশবিরের ধ্যানে নিযক্ত রাখিয়াছিলেন —পারমাথিক চিন্তা ভিন্ন অন্য কোন চিন্তা মনে সন্থান পায় নাই। অবধারিত কালে চন্দ্রশেখর ঔষধ প্রয়োগাৰ্থ উদ্যোগ করিতে লাগিলেন। শৈবলিনীর জন্য, শয্যা রচনা করিতে বলিলেন; সন্দেরীর নিযক্তা পরিচারিকা শয্যা রচনা করিয়া দিল। চন্দ্রশেখর তখন সেই শয্যায় শৈবলিনীকে শায়াইতে অনািমতি করিলেন। সন্দরী শৈবলিনীকে ধরিয়া বলপািব্বক শয়ন করাইল—শৈবলিনী সহজে কথা শানে না। সন্দরী গহে। গিয়া সন্নান করিবে—প্ৰত্যহ করে। চন্দ্রশেখর তখন সকলকে বলিলেন, “তোমরা একবার বাহিরে যাও। আমি ডাকিবামাত্র ऊाज९3 ।” সকলে বাহিরে গেলে, চন্দ্রশেখর, করস্থ। ঔষধপাত্ৰ মাটিতে রাখিলেন। শৈবলিনীকে বলিলেন, “উঠিয়া বস দেখি।” শৈবলিনী, মদ, মদ, গীত গায়িতে লাগিল—উঠিল না। চন্দ্রশেখর স্থিরদন্টিতে তাহার নয়নের প্রতি নয়ন সথাপিত করিয়া ধীরে ধীরে গন্ডািষ গণন্ডষে করিয়া এক পাত্ৰ হইতে ঔষধ খাওয়াইতে লাগিলেন। রমানন্দ স্বামী বলিয়াছিলেন, “ঔষধ আর কিছ নহে, কমন্ডলস্থিত জলমাত্র।” চন্দ্রশেখর জিজ্ঞাসা করিয়াছিলেন, “ইহাতে কি হইবে ?” স্বামী বলিয়াছিলেন, “কিন্যা। ইহাতে যোগবল পাইবে।” তখন চন্দ্রশেখর তাহার ললাট, চক্ষ, প্রভৃতির নিকট নানা প্রকার বক্ৰগতিতে হসন্ত সঞ্চালন 8 VC