পাতা:বঙ্কিম রচনাবলী (প্রথম খণ্ড).pdf/৪৮৫

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

व७कभ ज्ञ5नादब्नी রাধারাণী একটি স্থির হইলেন—আগন্তুক বলিতে লাগিলেন—“যথার্থ রবিশ্বনীকুমার নাম ধরে, এমন কাহাকেও চিনি না। যদি কেহ আমারই তল্লাস করিয়া থাকে-তােহা সম্ভব নহে— তথাপি কি জানি—সাত পাঁচ ভাবিয়া বিজ্ঞাপনটি তুলিয়া রাখিলাম—কিন্তু কামাখ্যা বাবর কাছে আসিতে সাহসী হইল না।”

    • ק 651)2^*י “পরে কামাখ্যা বাবর শ্রান্ধে তাঁহার পত্ৰগণ আমাকে নিমন্ত্ৰণ করিল, কিন্তু আমি কাৰ্য্যগতিকে আসিতে পারি নাই। সম্প্রতি সেই ত্রটির ক্ষমাপ্রার্থনার জন্য তাঁহার পত্রদিগের নিকট আসিলাম। কৌতুকবশতঃ বিজ্ঞাপন সঙ্গে আনিয়াছিলাম। প্রসঙ্গক্ৰমে উহার কথা উত্থাপন করিয়া কামাখ্যা বাবার জ্যেষ্ঠ পত্রিকে জিজ্ঞাসা করিলাম যে, এ বিজ্ঞাপন কেন দেওয়া হইয়াছিল ? কামাখ্যা বাবর পত্র বলিলেন যে, রাধারাণীর অননুরোধে । আমিও এক রাধারাণীকে চিনিতাম —এক বালিকা—আমি একদিন দেখিয়া তাহাকে আর ভুলিতে পারিলাম না। সে মাতার পথ্যের জন্য, আপনি অনাহারে থাকিয়া বনফলের মালা গাঁথিয়া——সেই অন্ধকার বন্টিতে—” বক্তা। আর কথা কহিতে পারিলেন না—তাঁহার চক্ষ জলে পরিয়া গেল। রাধারাণীরও চক্ষ জলে ভাসিতে লাগিল। চক্ষ মাছিয়া রাধারাণী বলিল, “ইতর লোকের কথায় এখন প্রয়োজন কি ? আপনার কথা বলন।”

আগন্তুক উত্তর করিলেন, “রাধারাণী ইতর লোক নহে। যদি সংসারে কেহ দেবকন্যা থাকে তবে সেই রাধারাণী। যদি কাহাকে পবিত্র, সরলচিত্ত, এ সংসারে আমি দেখিয়া থাকি, তবে সেই রাধারাণী—যদি কাহারও কথায় অমত থাকে, তবে সেই রাধারাণী—যথাৰ্থ আমােত! বর্ণে বর্ণে অপসরার বীণা বাজে, যেন কথা কহিতে বাধ বাধ করে অথচ সকল কথা পরিভাকার, সমাধাের,- অতি সরল! আমি এমন কন্ঠ কখন শনি নাই –এমন কথা কখনও শনি নাই!” রক্সিণীকুমার-এক্ষণে ইহাকে রাব্বিাণীকুমারই বলা হউক—ঐ সঙ্গে মনে মনে বলিলেন, “আবার আজ বঝি তেমনি কথা শনিতেছি!” রক্সিণীকুমার মনে মনে ভাবিতেছিলেন, আজি এত দিন হইল, সেই বালিকার কন্ঠস্বর শনিয়াছিলাম, ঠিক আজিও সে কণঠ আমার মনের ভিতর জাগিতেছে! যেন কাল শনিয়াছি। অথচ আজি এই সন্দরীর কন্ঠস্বর শনিয়া আমার সেই রাধারাণীকেই বা মনে পড়ে কেন ? এই কি সেই ? আমি মািখ! কোথায় সেই দীনদঃখিনী, কুটীরবাসিনী ভিখাবিণী—আর কোথায় এই উচ্চপ্রাসাদবিহারিণী" ইন্দ্রাণী ! আমি সে রাধারাণীকে অন্ধকারে ভাল করিয়া দেখিতে পাই নাই, সতরাং জানি না যে, সে সন্দেরী, কি কুৎসিত, কিন্তু এই শচী নিন্দিতা রােপসীর শতাংশের একাংশ রােপও যদি তাহার থাকে, তাহা হইলে সেও লোকমনোমোহিনী বটে ! এ দিকে রাধারাণী, অতৃপিতিশ্রবণে রক্মিণীকুমারের মধরে বচনগলি৷ শনিতেছিলেন—মনে মনে ভাবিতেছিলেন, তুমি যাহা পাপিঠা, রাধারাণীকে বলিতেছ, কেবল তোমাকেই সেই কথাগালি বলা যায়! তুমি আজি আট বংসরের পর রাধারাণীকে ছলিবার জন্য কোন নন্দনকানন ছাড়িয়া পথিবীতে নামিলে ? এত দিনে কি আমার হৃদয়ের পজায় প্রীত হইয়াছ ? তুমি কি অন্তৰ্য্যামী ? নহিলে আমি লকাইয়া লাকাইয়া, হৃদয়ের ভিতরে লাকাইয়া তোমাকে যে পজা করি, তাহা তুমি কি প্রকারে জানিলে ? এই প্রথম, দই জনে সপস্ট দিবসালোকে, পরস্পরের প্রতি দল্টিপাত করিলেন। দই জনে, দাই জনের মািখপানে চাহিয়া ভাবিতে লাগিলেন, আর এমন আছে কি ? এই সসাগর, নদনদী চিত্রিতা, জীবসতকুলা পথিবীতলে এমন তেজোময়, এমন মধরে, এমন সখময়, এমন চঞ্চল। অথচ স্থির, এমন সহাস্য অথচ গম্ভীর, এমন প্রফতুল্ল অথচ ব্ৰীড়াময়, এমন আর আছে কি ? চিরপরিচিত অথচ অত্যন্ত অভিনব, মহত্তে মহত্তে অভিনব মধরিমাময়, আত্মীয় অথচ অত্যন্ত পর, চিরস্মাত অথচ আদালন্টপকেব। --কখন দেখি নাই, আর এমন দেখিব না, এমন আর আছে কি ? রাধারাণী বলিল,—বড় কন্টে বলিতে হইল, কেন না, চক্ষের জল থাকে না, আবার সেই চক্ষের জলের উপর কোথা হইতে পোড়া হাসি আসিয়া পড়ে—ব্রাধারাণী বলিল, “তা, আপনি এতক্ষণဗူဖို့' সেই ভিখারিণীর কথাই বলিলেন, আমাকে যে কেন দশন দিয়াছেন, তা ত এখনও 0ं का ?’ 8b'8