পাতা:বঙ্কিম রচনাবলী (প্রথম খণ্ড).pdf/৪৮৭

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ब७कब ब्रष्नावली মনে করিয়াছিলাম, কিন্তু সেই রাত্রে আমার পিতার পীড়ার সংবাদ পাইয়া তখনই আমাকে কাশী যাইতে হইল। পিতা অনেক দিন রাগন হইয়া রহিলেন, কাশী হইতে প্রত্যাগমন করিতে আমার বৎসরাধিক বিলম্ব হইল। বৎসর পরে আমি ফিরিয়া আসিয়া আবার সেই কুটীরের সন্ধান করিলাম—কিন্তু তাহাদিগকে আর সেখানে দেখিলাম না।” রা। একটি কথা জিজ্ঞাসা করিতে ইচ্ছা করিতেছে। বোধ হয়, সে রথের দিন নিরাশ্রয়ে, বভিন্ট বাদলে, আপনাকে সেই কুটী আশ্রয় লইতে আপনি কতক্ষণ সেখানে অবসিথতি করিলেন ? র। অধিকক্ষণ নহে। আমি যাহা রাধারাণীর হাতে দিয়াছিলাম, তাহা দেখিবার জন্য রাধারাণী আলো জবালিতে গোল—আমি সেই অবসরে তাহার বসত্ৰ কিনিতে চলিয়া আসিলাম । রাধা। আর কি দিয়া আসিলেন ? র। আর কি দিব ? একখানি ক্ষদ্র নোট ছিল, তাহা কুটীরে রাখিয়া আসিলাম। রা। নোটখানি ওরপে দেওয়া বিবেচনা সিদ্ধ হয় নাই—তাহারা মনে করিতে পারে, আপনি নোটখানি হারাইয়া গিয়াছেন। র। না, আমি পেনসিলে লিখিয়া দিয়াছিলাম, “রাধারাণীর জন্য।" তাহাতে নাম স্বাক্ষর করিয়াছিলাম, “রক্ষ্মিণীকুমার রায়।” যদি সেই রক্ষ্মিণীকুমারকে সেই রাধারাণী অন্বেষণ করিয়া থাকে, এই ভরসায় বিজ্ঞাপনটি তুলিয়া রাখিয়াছিলাম। রাধা। তাই বলিতেছিলাম, আপনাকে দয়া দ্ৰ চিত্ত বলিয়া বোধ হয় না। যে রাধারাণী আপনার শ্ৰীচরণ দর্শন জন্য—এইটকু বলিতেই—আ ছি ছি, রাধারাণী ! ফলের কুড়ির ভিতর যেমন বন্টির জল ভরা থাকে, ফলটি নীচু করিলেই ঝরঝর করিয়া পড়িয়া যায়, রাধারাণী মািখ নত করিয়া এইটকু বলিতেই, তাহার চোখের জল ঝরঝর করিয়া পড়িতে লাগিল। অমনই যে দিকে রক্মিণীকুমার ছিলেন, সেই দিকের মাথার কাপড়টা বেশী করিয়া টানিয়া দিয়া সে ঘর হইতে রাধারাণী বাহির হইয়া গেল। রক্মিণীকুমার বোধ হয়, চক্ষের জলট,কু দেখিতে পান নাই, কি পাইয়াই থাকিবেন, বলা যায় না। ষষ্ঠ পরিচ্ছেদ বাহিরে আসিয়া, ম্যুখে চক্ষে জল দিয়া অশ্রাচিহ্ন বিলপতি করিয়া, রাধারাণী ভাবিতে লাগিল। ভাবিল, “ইনিই ত রক্ষ্মিণীকুমার। আমিও সেই রাধারাণী। দই জনে দাই জনের জন্য মন তুলিয়া রাখিয়াছি। এখন উপায় ? আমি যে রাধারাণী, তা উহাকে বিশ্ববাস করাইতে পারিতার পর ? উনি কি জাতি, তা কে জানে। জাতিটা এখনই জানিতে পারা যায়। কিন্তু উনি যদি আমার জাতি না হন ? তবে ধৰ্ম্মম বন্ধন ঘটিবে না, চিরন্তনের যে বন্ধন, তাহা ঘটিবে না, প্রাণের বন্ধন ঘটিবে না। তবে আর উহার সঙ্গে কথায় কাজ কি ? না হয়। এ জন্মটা রক্ষ্মিণীকুমার নাম জপ করিয়া কাটাইবি। এত দিন সেই জপ করিয়া কাটাইয়াছি, জোয়ারের প্রথম বেগটা কাটিয়া গিয়াছে—বাকি কাল কাটিবে না কি ?” এই ভাবিতে ভাবিতে রাধারাণীর আবার নাকের পাটা ফাঁপিয়া উঠিল, ঠোঁট দরখানা ফলিয়া উঠিল—আবার চোখ দিয়া জল পড়িতে লাগিল। আবার সে জল দিয়া মািখ চোখ ধাইয়া টোয়ালিয়া দিয়া মছিয়া ঠিক হইয়া আসিল। রাধারাণী আবার ভাবিতে লাগিল,--“আচ্ছা! যদি আমার জাতিই হন, তা হলেই বা ভরসা কি ? উনি ত দেখিতেছি বয়ঃপ্রাপত—কুমার, এমন সম্ভাবনা কি ? তা হলেনই বা বিবাহিত ? না! না! তা হবে না। নাম জপ করিয়া মরি, সে অনেক ভাল—সতীন সহিতে পারিব না।” “তবে এখন কত্তব্য কি ? জাতির কথাটা জিজ্ঞাসা করিয়াই কি হইবে। তবে রাধারাণীর পরিচয়টা দিই। আর উনি কে, তাহা জানিয়া লই; কেন না, রক্মিণীকুমার ত ওঁর নাম নয়— তা ত শানিলাম। যে নাম জপ করিয়া মরিতে হইবে, তা শনিয়া লই। তার পর বিদায় দিয়া কাঁদিতে বসি। আ পোড়ারমখী বসন্তা! না বঝিয়া, না জানিয়া এ সামগ্রী কেন পাঠাইলি ? জানিস না কি, এ জীবনসমদ্র অমন করিয়া মন্থন করিতে গেলে, কাহারও কপালে অমতে কাহারাও কপালে গরল উঠে !” 8切"Wり