পাতা:বঙ্কিম রচনাবলী (প্রথম খণ্ড).pdf/৪৮৮

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ब्राक्षाद्भाशी “আচ্ছা! পরিচয়টা ত দিই।” এই ভাবিয়া রাধারাণী, যাহা প্রাণের অধিক যত্ন করিয়া তুলিয়া রাখিয়াছিল, তাহা বাহির করিয়া আনিল। সে সেই নোটখানি ; বলিয়াছি, রাধারাণী তাহা তুলিয়া রাখিয়াছিল। রাধারাণী তাহা অাঁচলে বাঁধিল । বাঁধতে বাঁধিতে ভাবিতে লাগিল— “আচ্ছা, যদি মনের বাসনা পরিবার মতনই হয় ? তবে শেষ কথাটা কে বলিবে ?” এই ভাবিয়া রাধারাণী আপনা। আপনি হাসিয়া কুটপাট হইল। “আ. ছি—ছি—ছি! তা ত আমি পারিব না। বসন্তকে যদি আনাইতাম! ভাল, উহাকে এখন দদিন বসাইয়া রাখিয়া বসন্তকে আনাইতে পারিব না ? উনি না হয়। সে দই দিন আমার লাইব্রেরী হইতে বহি লইয়া পড়ন না! পড়া শনা করেন না কি ? ওপরই জন্য ত লাইব্রেরী করিয়া রাখিয়াছি। তা যদি দই দিন থাকিতে রাজি না হন ? উপহার যদি কাজ থাকে ? তবে কি হবে ? ওঁতে আমাতেই সে কথাটা কি হবে ? ক্ষতি কি, ইংরেজের মেয়ের কি হয় ? আমাদের দেশে তাতে নিন্দা আছে, তা আমি দেশের লোকের নিন্দার ভয়ে কোন কাজটাই করি ? এই যে উনিশ বৎসর বয়স পৰ্যন্ত আমি বিয়ে করলেম না, এতে কে না কি বলে ? আমি ত বড়ো বয়স পৰ্য্যন্ত কুমারী;— তা এ কাজটাও না হয় ইংরেজের মেয়ের মত হইল।” তার পর রাধারাণী বিষগ্ন মনে ভাবিল, তা যেন হলো ; তাতেও বড় গোল! মমবাতিতে গড়া মেয়েদের মাঝখানে প্রথাটা এই যে, পরিষ মানষেই কথাটা পাড়িবে। ইনি যদি কথাটা না পাড়েন ? না পাড়েন, তবে--তবে হে ভগবান! বলিয়া দাও, কি করিব! লাজাও তুমি গড়িয়াছ—যে আগনে আমি পড়িতেছি, তাহাও তুমি গড়িয়াছ ! এ আগানে সে লতাজা কি পড়িবে না ? তুমি এই সহায়হীনা, অনাথাকে দয়া করিয়া, পবিত্রতার আবরণে আমাকে আব্বত করিয়া লজার আবরণ কাড়িয়া লও। তোমার কৃপায় যেন আমি এক দন্ডেব জন্য মািখরা হই!” সপতম পরিচ্ছেদ ভগবান বঝি সে কথাও শানিলেন। বিশদ্ধচিত্তে যাহা বলিবে, তাহাই বঝি তিনি শনেন। রাধারাণী মদ হাসি হাসিতে হাসিতে, গজেন্দ্রগমনে রক্ষ্মিণীকুমারের নিকট আসিয়া উপস্থিত হইলেন। রক্সিণীকুমার তখন বলিলেন, “আপনি আমাকে বিদায় দিয়াও যান নাই, আমি যে কথা জানিবার জন্য আসিয়াছি, তাহাও জানিতে পারি নাই। তাই এখনও যাই নাই।” রাধা। আপনি রাধারাণীর জন্য আসিয়াছেন, তাহা আমারও মনে আছে। এ বাড়ীতে একজন রাধারাণী আছে, সত্য বটে। সে আপনার নিকট পরিচিত হইবে কি না, সেই কথাটা ঠিক করিতে গিয়েছিলাম । র। তার পর ? রাধারাণী তখন অলপ একট, হাসিয়া, একবার আপনার পর দিকে চাহিয়া, আপনার হাতের অলঙ্কার খটিয়া, সেই ঘরে বসান একটা প্রস্তরনিৰ্ম্মিত Niobe প্রতিকৃতি পানে চাহিয়া রক্সিণীকুমারের পানে না। চাহিয়া, বলিল—“আপনি বলিয়াছেন, রক্সিণীকুমার আপনার যথার্থ নাম নহে। রাধারণীর যে আরাধ্য দেবতা, তাহার নাম পৰ্য্যন্ত এখনও সে শনিতে পায় নাই।” রক্সিণীকুমার বলিলেন, “আরাধ্য দেবতা ! কে বলিল ?” রাধারাণী কথাটা অনবধানে বলিয়া ফেলিয়াছিলেন, এখন সামলাইতে গিয়া বলিয়া ফেলিলেন, “নাম ঐরাপে জিজ্ঞাসা করিতে হয়।” কি বোকা মেয়ে ! রক্সিণীকুমার বলিলেন, “আমার নাম দেবেন্দ্রনারায়ণ রায়।” রাধারাণী গপতভাবে দই হাত যন্ত করিয়া মনে মনে ডাকিল, “জয় জগদীশবর! তোমার কৃপা অনন্ত। প্রকাশ্যে বলিল, “রাজা দেবেন্দ্রনারায়ণের নাম শানিয়াছি।” দেবেন্দ্রনারায়ণ বলিলেন, “আমন সকলেই রাজা কবলায় । আমাকে যে কুমার বলে, সে যথেস্ট সম্পমান করে।” রা। এক্ষণে আমার সাহস বাড়িল। জানিলাম যে, আপনি আমার স্বজাতি। এখন সপন্ধা হইতেছে, আজি আপনাকে আমার আতিথ্য স্বীকার করাই। 8 C.