পাতা:বঙ্কিম রচনাবলী (প্রথম খণ্ড).pdf/৪৯১

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

বঙিকম রচনাবলী দেবেন্দ্রনারায়ণ। ইচ্ছাপাকবািক মত্তাহার পরিয়া আসিয়াছিলেন, তাহা রাধারাণীর কন্ঠে পরাইয়া দিয়া বলিলেন, “এই ফেরত দিলাম।” এমন সময়ে পোঁ করিয়া শাঁকি বাজিল । রাধারাণী হাসিয়া জিজ্ঞাসা করিল, “শাঁকি বাজাইল কে ? “ তাঁহার একজন দাসী, চিত্রা, উত্তর করিল, “আজ্ঞে, আমি।” রাধারাণী জিজ্ঞাসা করিল, “কেন বাজাইলি ?” চিত্রা বলিল, “কিছ পাইব বলিয়া।” বলা বাহদুল্য যে, চিত্রা পরস্কৃত হইল। কিন্তু তাহার কথাটা মিথ্যা। রাধারাণী তাহাকে শিখাইয়া পড়াইয়া দবারের নিকট বসাইয়া আসিয়াছিল। তার পবে দাই জনে বিরলে বসিয়া মনের কথা হইল। রাধারাণী দেবেন্দ্রনারায়ণের বিস্ময় দর করিবার জন্য, সেই রথের দিনের সাক্ষাতের পর যাহা যাহা ঘটিয়াছিল, তাহার পিতামহের বিষয়সম্পপত্তির কথা, পিতামহের উইল লইয়া মোকদ্দমার কথা, তজজন্য রাধারাণীর মার দৈন্যের কথা, মার মাতৃত্যুর কথা, কামাখ্যা বাবার আশ্রয়ের কথা, প্রিবি কোন্সিলের ডিক্লীর কথা, কামাখ্যা বাবর মাতুত্যুর কথা, সব বলিল। বসন্তের কথা, বলিল, আপনার বিজ্ঞাপনের কথা বলিল । কাঁদিতে কাঁদিতে, হাসিতে হাসিতে, বম্পিট বিদ্যুতে, চাতকী চিরসঞিািন্ত প্রণয়সম্পভাষণপিপাসা পরিতৃপিত করিল। নিদাঘসন্তাপত পৰ্ব্বত যেমন বর্ষার বারিধারা পাইয়া শীতল হয়, দেবেন্দ্রনারায়ণও তেমনি শীতল হইলেন । তিনি রাধারাণীকে জিজ্ঞাসা করিলেন, “তোমার ত কেহ নাই। কিন্তু এ বাড়ী বড় জনাকীর্ণ দেখিতেছি। ” r রাধারাণী বলিল, “দঃখের দিনে আমার কেহ ছিল না। এখন আমার অনেক আত্মীয় কুটম্বব জটিয়াছে। আমি এ অলপ বয়সে একা থাকিতে পারি না, এজন্য যত্ন করিয়া তাহাদিগকে সথান দিয়া রাখিয়াছি।” দে। তাঁহাদের মধ্যে এমন সম্পবিন্ধবিশিশুটি কেহ আছে যে, তোমাকে এই দীন দরিদ্রকে দান করিতে পারে ? KI I VSDTVG3 VONT (Z2 | দে। তবে তিনি কেন এই শােভলগনযক্ত সাতহিবাক যোগটা খাজন না ? রা। বোধ করি, এতক্ষণ সে কাজটা হইয়া গেল। তোমার সঙ্গে রাধারাণীর এরপে সাক্ষাৎ অন্য কোন কারণে হইতে পারে না, এ পরীতে সকলহেঁই জানে। সংবাদ লইব কি ? দে। বিলম্বে কাজ কি ? ডাকিল, “চিত্রে!” চিত্ৰা আসিল। রাধারাণী জিজ্ঞাস করিল, “দিন টিন কিছ ॐ ? יי চিত্রা বলিল, “হাঁ, দেওয়ানজি মহাশয় পরোহিত মহাশয়কে ডাকাইয়াছিলেন। পরোহিত পর দিন বিবাহের উত্তম দিন বলিয়া গিয়াছেন। দেওয়ানজি মহাশয় সমস্ত উদ্যোগ করিতেছেন।” তখন বসন্ত আসিল, কামাখ্যা বাবর পত্রেরা এবং পরিবারবাগ সকলেই আসিল, আর যত বসন্তের কোকিল, সময়ের বন্ধ, যে যেখানে ছিল, সকলেই আসিল । দেবেন্দ্রনারায়ণের বন্ধ ও অনাচার-বগ সকলেই আসিল । বসন্ত আসিলে রাধারাণী বলিল, “তোমার কি আক্কেল ভাই বসন্ত ?” বসন্ত বলিল, “কি আক্কেল ভাই রাধারাণী ?” রা। যাকে তাকে তুমি পত্ৰ দিয়া পঠাইয়া দাও কেন ? বসন্ত। কেন, লোকটা কি করেছে বল দেখি ? রাধারাণী তখন সকল বলিল। বসন্ত বলিল, “রাগের কথা ত বটে। সদে শািন্ধ দেনা পাওনা বঝিয়া নেয়, এমন মহাজনকে যে বাড়ী চিনাইয়া দেয়, তার উপর রাগের কথা বটে।” রাধারাণী বলিল, “তাই আজ আমি তোর গলায় দড়ি দিব!” এই বলিয়া রাধারাণী যে হীরকহার রক্ষ্মিণীকুমারকে পরাইতে গিয়াছিলেন, তাহা আনিয়া বসন্তের গলায় পরাইয়া দিলেন। তার পর শােভ লগেন শােভ বিবাহ হইয়া গেল। SS O