পাতা:বঙ্কিম রচনাবলী (প্রথম খণ্ড).pdf/৪৯৯

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

বঙিকম রচনাবলী যেন একটি প্রভাতপ্ৰফল্লি পদ্ম দলগালির দবারা আমার প্রকোম্ঠ বেড়িয়া ধরিল—যেন গোলাবের মালা গাঁথিয়া কে আমার হাতে বেড়িয়া দিল! আমার আর কিছ মনে নাই। বঝি সেই সময়ে ইচ্ছা হইয়াছিল—এখন মারি না কেন ? বঝি তখন গালিয়া জল হইয়া যাইতে ইচ্ছা! করিয়াছিল—বঝি ইচ্ছা করিয়াছিল, শচীন্দ্র আর আমি, দাইটি ফল হইয়া এইরহপ সংস্পলেট হইয়া কোন বন্য বক্ষে গিয়া এক বোঁটায় ঝালিয়া থাকি। আর কি মনে হইয়াছিল—তাহা মনে নাই। যখন সিড়ির উপরে উঠিয়া, ছোট বাবা হাত ছাড়িয়া দিলেন—তখন দীঘ নিশবাস ত্যাগ করিলাম—এ সংসার আবার মনে পড়িল—সেই সঙ্গে মনে পড়িল—“কি করিলে প্ৰাণেশ্ববর! না। বঝিয়া কি করিলে! তুমি আমার পাণিগ্রহণ করিয়াছ। এখন তুমি আমায় গ্রহণ করা না কর—তুমি আমার স্বামী-আমি তোমার পত্নী—ইহজন্মে অন্ধ ফসলওয়ালীর আর কেহ স্বামী হইবে না।” সেই সময় কি পোড়া লোকের চোেখ পড়িল ? বঝি তাই। পঞ্চম পরিচ্ছেদ ছোট বাবা ছোট মার কাছে গিয়া জিজ্ঞাসা করিলেন, “রাজনীকে কি বলিয়াছ গা ? সে কাঁদিতেছে।” ছোট মা আমার চক্ষে জল দেখিয়া অপ্রতিভ হইলেন,-আমাকে ভাল কথা বলিয়া কাছে বসাইলেন—বয়োজ্যেষ্ঠ সপত্নীপত্রের কাছে সকল কথা ভাঙিগয়া বলিতে পারিলেন না। ছোট বাবা ছোট মাকে প্রসন্ন দেখিয়া নিজ প্রয়োজনে বড় মার কাছে চলিয়া গেলেন। আমিও বাড়ী ফিরিয়া আসিলাম। এ দিকে গোপাল বাবার সঙ্গে আমার বিবাহের উদ্যোগ হইতে লাগিল। দিন স্থির হইল। আমি কি করিব ? ফলে গাঁথা বন্ধ করিয়া, দিবারাত্র কিসে এ বিবাহ বন্ধ করিব—সেই চিন্তা করিতে লাগিলাম। এ বিবাহে মাতার আনন্দ, পিতার উৎসাহ, লবঙ্গলতার যত্ন, ছোট বাব ঘটক—এই কথাটি সব্বাপেক্ষা কম্পটদায়ক—ছোট বাব ঘটক! আমি একা অন্ধ কি প্রকারে ইহার প্রতিবন্ধকতা করিব ? কোন উপায় দেখিতে পাইলাম না। মালা গাঁথা বন্ধ হইল। মাতাপিতা মনে করিলেন, বিবাহের আনন্দে আমি বিহবল হইয়া মালা গাঁথা ত্যাগ করিয়াছি। ঈশবর আমাকে এক সহায় আনিয়া দিলেন। বলিয়াছি, গোপাল বসার বিবাহ ছিল—তাঁহার পত্নীর নাম চাঁপা— বাপ রেখেছিল চম্পকলতা। চাঁপাই কেবল এ বিবাহে অসম্মমত। চাঁপা একটা শক্ত মেয়ে। যাহাতে ঘরে সপত্নী না হয়—তাহার চেস্টার কিছ: ত্রটি করিল না। হীরালাল নামে চাঁপার এক ভাই ছিল—চাঁপার অপেক্ষা দেড় বৎসরের ছোট। হীরালাল মদ খায়—তাহাও অলপ মাত্রায় নহে। শনিয়াছি, গাঁজাও টানে। তাহার পিতা তাহাকে লেখা-পড়া শিখান নাই—কোন প্রকারে সে হস্তাক্ষরটি প্রস্তুত করিয়াছিল মাত্র, তথাপি রামসদয় বাব তাহাকে কোথা কেরানিগিরি করিয়া দিয়াছিলেন। মাতলামির দোষে সে চাকরিটি গেল। হরনাথ বস, তাহার দমে ভুলিয়া লাভের আশায় তাহাকে দোকান করিয়া দিলেন। দোকানে লাভ দরে থােক, দেনা পড়িল-দোকান উঠিয়া গেল। তার পর কোন গ্রামে, বার টাকা বেতনে হীরালাল মাস্টার হইয়া গেল। সে গ্রামে মদ পাওয়া যায় না বলিয়া হীরালাল পলাইয়া আসিল । তার পর সে একখানা খবরের কাগজ করিল। দিনকতক তাহাতে খাব লাভ হইল, বড় পাসার জকিল—কিন্তু অশলীলতা দোষে পলিসে টানাটানি আরম্ভ করিল—ভয়ে হীরালাল কাগজ ফেলিয়ার পোষ হইল। কিছ দিন পরে হীরালাল আবার হঠাৎ ভাসিয়া উঠিয়া ছোট বাবর মোসায়েবি করিতে চেন্টা করিতে লাগিল। কিন্তু ছোট বাবার কাছে মদের চাল নাই দেখিয়া আপনা। আপনি সরিল। আনন্যোপায় হইয়া নাটক লিখিতে আরম্ভ করিল। নাটক একখানিও বিক্রয় হইল না। তবে ছাপাখানার দেনা শোধিতে হয় না বলিয়া সে যাত্রা রক্ষা পাইল । এক্ষণে এ ভবসংসারে আর কল-কিনারা না দেখিয়া-হীরালাল চাঁপাদিদির আচিল ধরিয়া বসিয়া রহিল। চাঁপা হীরালালকে স্বকাৰ্য্যোদ্ধার জন্য নিয়োজিত করিল। হীরালাল ভূগিনীর কাছে সুকুম শুনিয়া জিজ্ঞাসা করিল, “টাকার কথা সত্য ত? যেই কাণীকে বিবাহ করবে, সেই לל ק চাঁপা সে বিষয়ে সন্দেহভঞ্জন করিল। হীরালালের টাকার বড় দরকার। সে তখনই আমার পিতৃভবনে আসিয়া দশন দিল। পিতা তখন বাড়ী ছিলেন। আমি তখন সেখানে ছিলাম না। SN o