পাতা:বঙ্কিম রচনাবলী (প্রথম খণ্ড).pdf/৫২৭

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

७क झनावव्ौ আমি বলিলাম, “বিষয় রজনীর ; আমাকে ধরাইয়া দিলে কি হইবে ? যাহার বিষয়, সে ভোগ করিতে থাকিবে ।” লবঙ্গ। তুমি কস্মিন কালে সত্ৰীলোক চিনিলে না। যাহাকে ভালবাসে, তাহাকে রক্ষার জন্য রজনী এখনই বিষয় ছাড়িয়া দিবে। আমি। অর্থাৎ আমার রক্ষার জন্য বিষয়টা তোমায় ঘাষ দিবে। লবঙগ। তাই । আমি। তবে এত দিন সে ঘর্ষ চাও নাই, আমাদিগের বিবাহ হয় নাই বলিয়া। বিবাহ হইলেই সে ঘর্ষ চাহিবে। লবঙগ। তোমার মত ছোটলোকে বঝিবে কি প্রকারে ? চোরেরা বঝিতে পারে না যে, পরের দ্রব্য অসপশ্য। রজনীর সম্পত্তি রাখিতে পারিলেও আমি রাখিব কেন ? আমি বলিলাম, “তুমি যদি এমন না হবে, তবে আমার সে মরণকুবদ্ধি ঘটিবে কেন ? যদি আমার এত অপরাধ মাজজনা করিয়াছ, এত অনগ্ৰহ করিয়াছ, তবে আর একটি ভিক্ষা আছে। যাহা জানি, তাহা যদি অন্যের কাছে না বলিয়াছ, তবে রজনীর কাছেও বলিও না।” দপিতা লবঙ্গলতা ভ্ৰভঙ্গী করিল—কি সন্দির ভ্ৰভঙ্গী! বলিল, “আমি কি ঠিক ! যে আসিয়াছি ?” এই বলিয়া লবঙ্গলতা হাসিল। তাহার হাসির মৰ্ম্মম আমি কিছর কখন বঝিতে পারি না। লবঙ্গ বিলক্ষণ রাগিয়া উঠিয়াছিল—কিন্তু হাসিতে সব রাগ ভাসিয়া গেল। যেন জলের উপর হইতে মেঘের ছায়া সরিয়া গেল, তাহার উপর মেঘমন্ত চন্দ্রের ন্যায় জীবলিতে লাগিল। আমি লবঙ্গলতার মৰ্ম্মম কখন বঝিতে পারিলাম না। হাসিয়া লবঙ্গ বলিল, “তবে আমি রজনীর কাছে যাই।” '2Ig ” ললিতলবঙ্গলতা, ললিত লবঙ্গলতার মত দলিতে দলিতে চলিল। ক্ষণেক পরে আমাকে ডাকিয়া পাঠাইল। গিয়া দেখিলাম, লবঙ্গলতা দাঁড়াইয়া আছে। রজনী তাহার পায়ে হাত দিয়া কাঁদিতেছে। আমি গেলে লবঙ্গলতা বলিল, “শন, তোমার ভবিষ্যৎ ভাৰ্য্যা কি বলিতেছে! তোমার সম্পমাখে নহিলে এমন কথা আমি কাণে শনিব না।” লবঙগলতা রজনীকে বলিল, “বল। তোমার বর আসিয়াছেন—” রজনী সকাতরে অশ্রপািণলোচনে ললিতলবঙ্গলতার চরণসপশ করিয়া বলিল, “আমার এই ভিক্ষা, আমার যে কিছ. সম্পত্তি আছে, এই বাবর যত্নে আমার যে সম্পত্তি উদ্ধত হইয়াছে, আমি লেখাপড়া করিয়া আপনাকে দান করিব, আপনি গ্রহণ করিবেন না কি ?” আহাদে আমার সকবৰ্ণান্তঃকরণ পলাবিত হইল—আমি রজনীর জন্য যে যত্ন করিয়াছিলামযে ক্লেশ স্বীকার করিয়াছিলাম—তাহা সাৰ্থক বোধ হইল। আমি পকেবই বঝিয়াছিলাম, এখন আরও পরিস্কার বঝিলাম যে, রমণীকুলে, অন্ধ রজনী অদ্বিতীয় রত্ন! লবঙ্গলতার প্রোক্তজবল জ্যোতিও তাহার কাছে মালান হইল। আমি ইতিপকেবই রজনীর অন্ধ নয়নে আত্মসমপণ করিয়াছিলাম— আজি তাহার কাছে বিনামলে) বিক্ৰীত হইলাম। এই অমল্য রত্নে আমার অন্ধকারপরী প্রভাসিত করিয়া, এ জীবন সমুখে কাটাইব। বিধাতা আমার কি সেদিন করবেন না! তৃতীয় পরিচ্ছেদ ঃ লবঙ্গলতার কথা আমি মনে করিয়াছিলাম, রজনীর এই বিস্ময়কর কথা শনিয়া, অমরনাথ আগনে সেকা কলাপাতের মত শকাইয়া উঠিবে। কই, তাহা ত কিছই দেখিলাম না। তাহার মািখ না। শকাইয়া বরং প্ৰফল্প হইল। বিস্মিত হতবন্ধি, যা • হাইবার, তাহা আমিই হইলাম। আমি প্রথমে তামাসা মনে করিলাম, কিন্তু রজনীর কাতরতা, অশ্রপাত এবং দার্ট্য দেখিয়া আমার নিশ্চয় প্রতীতি জন্মিল যে, রজনী আন্তরিক বালিতেছে। আমি বলিলাম, “রজনি, d:ՀԿ