পাতা:বঙ্কিম রচনাবলী (প্রথম খণ্ড).pdf/৫৩৪

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

જ[3દા રાજપ ऊद्र्69 59 প্রথম পরিচ্ছেদ এই অন্ধ পক্ষপনারী কি মোহিনী জানে, তাহা বলিতে পারি না। চক্ষে কটাক্ষ নাই, অথচ আমার মত সন্ন্যাসীকেও মোহিত করিল। আমি মনে করিয়াছিলাম, লবঙ্গলতার পর আর কখন কাহাকেও ভালবাসিব না। মনষ্যের সকলই অনাথক দম্ভ । অন্য দরে থােক, সহজেই এই অন্ধ পক্ষপনারী কর্তৃক মোহিত হইলাম। মনে করিয়াছিলাম—এ জীবন অমাবস্যার রাত্রির সবরপ—অন্ধকারেই কাটিবে—সহসা চন্দ্রোদয় হইল! মনে করিয়াছিলাম—এ জীবন সিন্ধ, সত্যিারিয়াই আমাকে পার হইতে হইবে-সহসা সম্মখে সবেণ সেতু দেখিলাম। মনে করিয়াছিলাম, এ মরভূমি চিরকাল এমনই দগধক্ষেত্র থাকিবে, রজনী সহসা সেখানে, নন্দনকানন আনিয়া বসাইল! আমার এ সখের আর সীমা নাই। চিরকাল যে অন্ধকার গহ মধ্যে বাস করিয়াছে, সহসা সে যদি এই সােয্যকিরণসমতজবল তর-পল্লবকুসম-সংশোভিত মনষ্যলোকে স্থাপিত হয়, তাহার যে আনন্দ, আমার সেই আনন্দ ! যে চিরকাল পরাধীন পরপীড়িত দাসানদাস ছিল, সে যদি হঠাৎ সব্বেশবর সাব্বভৌম হয়, তাহার যে আনন্দ, আমার সেই আনন্দ ! রজনীর মত যে জন্মান্ধ, হঠাৎ তাহার চক্ষ ফাটিলে যে আনন্দ, রজনীকে ভালবাসিয়া আমার সেই আনন্দ ! কিন্তু এ আনন্দে পরিণামে কি হইবে, তাহা বলিতে পারি না। আমি চোর! আমার পিঠে, আগমনের অক্ষরে লেখা আছে যে, আমি চোর ! যে দিন রজনী সেই অক্ষরে হাত দিয়া জিজ্ঞাসা করিবে, এ কিসের দাগ-আমি তাহাকে কি বলিব! বলিব কি যে, ও কিছল নহে? সে অন্ধ, কিছ জানিতে পরিবে না। কিন্তু যাহাকে অবলম্বন করিয়া আমি সংসারে সখী হইতে চাহিতেছি—তাহাকে আবার প্রতারণা করিবা! যে পারে, সে করােক, আমি যখন পারিয়াছি, তখন ইহার অপেক্ষাও গারতের দন্ডকাৰ্য্য করিয়াছি-করিয়া ফলভোগ করিয়াছি।--আর কেন ? আমি লবঙ্গলতার কাছে বলিয়াছিলাম, সকল কথা রজনীকে বলিব, কিন্তু বলিতে মািখ ফটে নাই। এখন বলিব । যে দিন রজনী শচীন্দ্রকে দেখিয়া আসিয়াছিল, সেই দিন অপরাহে আমি রজনীকে এই কথা বলিতে গেলাম। গিয়া দেখিলাম যে, রজনী একা বসিয়া বাঁদিতেছে। আমি তখন তাহাকে কিছ না বলিয়া, রজনীর মাসীকে জিজ্ঞাসা করিলাম যে, রজনী কাঁদিতেছে কেন ? তাহার মাসী বলিল যে, কী জানি ? মিত্ৰাদিগের বাড়ী হইতে আসিয়া অবধি রজনী কাঁদিতেছে। আমি স্বয়ং শচীন্দ্রের নিকট যাই নাই-আমার প্রতি শচীন্দ্র বিরক্ত, যদি আমাকে দেখিয়া তাহার পীড়াবন্ধি হয়, এই আশঙ্কায় যাই নাই-সতরাং সেখানে কি হইয়াছিল, তাহা জানিতাম না। রজনীকে জিজ্ঞাসা করিলাম, "কেন কাঁদিতেছ?” রজনী চক্ষ মাছিয়া চুপ করিয়া রহিল। আমি বড় কাতর হইলাম। বলিলাম, “দেখ রজনি, তোমার যাহা কিছর দঃখ, তাহা জানিতে পারিলে আমি প্ৰাণপাত করিয়া তাহা নিবারণ করিব—তুমি কি দঃখে কাঁদিতেছ, আমায় বালিবে না ?” রজনী আবার কাঁদিতে আরম্ভ করিল। বহ কন্টে আবার রোদন সক্ষবরণ করিয়া বলিল, “আপনি এত অনগ্রহ করেন, কিন্তু আমি তাহার যোগ্য নাহি ।” আমি। সে কি রজনী ? আমি মনে জানি, আমি তোমার যোগ্য নাহি। আমি তোমাকে সেই কথাই বলিতে আসিয়াছি। রজনী। আমি আপনার অন্যগহীত দাসী, আমাকে আমন কথা কেন বলেন ? আমি। শন রজনী। আমি তোমাকে বিবাহ করিয়া, ইহজন্মে সখে কাটাইবি, এই আমার একান্ত ভরসা। এ আশা আমার ভগন হইলে, বঝি আমি মরিব । কিন্তু সে আশাতেও যে বিঘর, তাহা তোমাকে বলিতে আসিয়াছি। শনিয়া উত্তর দিও, না। শনিয়া উত্তর দিও না। প্রথম Ꮹ Ꮼ Ꮼ