পাতা:বঙ্কিম রচনাবলী (প্রথম খণ্ড).pdf/৫৩৫

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ब७का ज्ञा5नाववी যৌবনে একদিন আমি রপোন্ধ হইয়া উন্মত্ত হইয়াছিলাম—জ্ঞান হারাইয়া চোরের কাজ করিয়াছিলাম। অণ্ডেগ আজিও তাহার চিহ্ন আছে। সেই কথাই তোমাকে বলিতে আসিয়াছি। তখন ধীরে ধীরে, নিতান্ত ধৈৰ্য্যমাত্ৰ সহায় করিয়া, সেই অকথনীয় কথা রজনীকে বলিলাম। রজনী অন্ধ, তাই বলিতে পারিলাম। চক্ষে চক্ষে সন্দশন হইলে বলিতে পারিতাম না। রজনী নীরব হইয়া রহিল। আমি তখন বলিলাম, “রজনি! রপোন্মাদে উন্মত্ত হইয়া প্ৰথমযৌবনে একদিন এই অজ্ঞানের কায্য করিয়াছিলাম। আর কখন কোন অপরাধ করি নাই। চিরজীবন সেই একদিনের অপরাধের প্রায়শ্চিত্ত করিয়াছি। আমাকে কি তুমি গ্রহণ করিবে ?” রজনী কাঁদিতে কাঁদিতে বলিল, “আপনি যদি চিরকাল দস্যুবত্তি করিয়া থাকেন—আপনি যদি সহস্ৰ ব্ৰহ্মহত্যা, গোহ ত্যা, সত্ৰীহত্যা করিয়া থাকেন, তাহা হইলেও আপনি আমার কাছে দেবতা। আপনি আমাকে চরণে স্থান দিলেই আমি আপনার দাসী হইব। কিন্তু আমি আপনার যোগ্য নাহি। সেই কথাটি আপনার শনিতে বাকি আছে।” আমি । সে কি রাজনি ? রজনী। আমার এই পাপ মন পরের কাছে বিক্ৰীত । আমি চমকিয়া শিহরিয়া উঠিলাম। জিজ্ঞাসা করিলাম, “সে কি রাজনি ?” রজনী বলিল, “আমি সত্ৰীলোক—আপনার কাছে ইহার অধিক আর কি প্রকারে বলিব ? কিন্তু লবঙ্গ ঠাকুরাণী সকল জানেন। যদি আপনি তাঁহাকে জিজ্ঞাসা করেন, তবে সকল শনিতে পাইবেন। বলিবেন, আমি সকল কথা বলিতে বলিয়াছি।” আমি তখনই মিত্রদিগের গহে গেলাম। যে প্রকারে লবঙ্গের সাক্ষাৎ পাইলাম, তাহা লিখিয়া ক্ষদ্র বিষয়ে কালক্ষেপ করিব না। দেখিলাম, লবঙ্গলতা ধাতুল্যবলণিষ্ঠতা হইয়া শচীন্দ্রের জন্য কাঁদিতেছে। যাইবামাত্র লবঙগলতা আমার পা জড়াইয়া আরও কাঁদিতে লাগিল—বলিল, “ক্ষমা কর! অমরনাথ, ক্ষমা করা! তোমার উপর আমি এত অত্যাচার করিয়াছিলাম বলিয়া বিধাতা আমাকে দণিডত করিতেছেন। আমার গভাজ পত্রের অধিক প্রিয় পত্র শচীন্দ্ৰ বঝি আমারই দোষে প্রাণ হারায়! আমি বিষ খাইয়া মরিব ! আমি তোমার সম্মখে বিষ খাইয়া মরিব।” আমার বািক ভাঙিগয়া গেল। রজনী কাঁদিতেছে, লবঙ্গ কাঁদিতেছে। ইহারা সত্ৰীলোক, চক্ষের জল ফেলে; আমার চক্ষের জল পড়িতেছিল না— কিন্তু রজনীর কথায় আমার হৃদয়ের ভিতর হইতে রোদনধৰ্বনি উঠিতেছিল। লবঙগ কদিতেছে, রজনী কাঁদিতেছে, আমি কাঁদিতেছি। —আর শচীন্দ্রের এই দশা। কে বলে সংসার সখের ? সংসার অন্ধকার! আপনার দঃখ রাখিয়া আগে লবঙ্গের দঃখের কথা জিজ্ঞাসা করিলাম। লবঙগ তখন কাঁদিতে কাঁদিতে শচীন্দ্রের পীড়ার বক্তান্ত সমন্দিয় বলিল। সন্ন্যাসীর বিদ্যা পরীক্ষা হইতে রণনশয্যায় রজনীর সঙেগ সাক্ষাৎ পৰ্য্যন্ত লবঙ্গ সকল বলিল। তার পর রজনীর কথা জিজ্ঞাসা করিলাম। বলিলাম, “রাজনী সকল কথা বলিতে বলিয়াছে —-বল।” লবঙ্গ তখন, রজনীর কাছে যাহা যাহা শনিয়াছিল, অকপটে সকল বলিল । রজনী শচীন্দ্রের, শচীন্দ্র রজনীর ; মাঝখানে আমি কে ? এবার বস্ত্ৰে মািখ লকাইয়া কাঁদিতে কাঁদিতে আমি ঘরে ফিরিয়া আসিলাম । দিবতীয় পরিচ্ছেদ এ ভবের হাট হইতে আমার দোকানপাট উঠাইতে হইল। আমার আদলেট সািখ বিধাতা লিখেন নাই-পরের সখ কাড়িয়া লইব কেন ? শচীন্দ্রের রজনী শচীন্দ্রকে দিয়া আমি এ সংসার ত্যাগ করিব। এ হাট ভাঙিগব, এ হৃদয়কে শাসিত করিব—যিনি সখেদঃখের অতীত, তাঁহারই চরণে সকল সমাপণ করিব। প্রভো, তোমায় অনেক সন্ধান করিয়াছি, কই তুমি ? দর্শনে বিজ্ঞানে তুমি নাই। জ্ঞানীর জ্ঞানে, ধ্যানীর ধ্যানে তুমি নাই। তুমি অপ্রমেয়, এজন্য তোমার পক্ষে প্রমাণ নাই। এই সফটিতোন্মখ হৃদপদ্মই তোমার প্রমাণ—ইহাতে তুমি আরোহণ করা। আমি অন্ধ পক্ষপনারীকে পরিত্যাগ করিয়া, তোমার ছায়া সেখানে সন্থাপন করি। তুমি নাই ? না থােক, তোমার নামে আমি সকল উৎসগা করিব। অখন্ডমন্ডলাকারং ব্যাপতং C. VS