পাতা:বঙ্কিম রচনাবলী (প্রথম খণ্ড).pdf/৫৫২

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

কৃষ্ণকান্তের উইল স। তবে সকল কথা কেন গোবিন্দের কাছে খলিয়া বলিয়া, তাঁহার পায়ে কাঁদিয়া পড় না ? সে দয়াল, অবশ্য তোমাকে রক্ষা করিবে । কু। সেই কথা। কিন্তু গোবিন্দলালকে অবশ্য এ সকল কথা কৃষ্ণকান্তের কাছে জানাইতে হইবে, নইলে উইলের বদলে ভাঙিগবে না। কৃষ্ণকান্ত যদি থানায় দেয়, তবে গোবিন্দলাল রাখিবে কি প্রকারে ? বরং আর এক পরামর্শ আছে। এখন চুপ করিয়া থাক—আগে কৃষ্ণকান্ত মর্যক, তার পর তোমার পরামর্শ মতে গোবিন্দলালের কাছে গিয়া তাঁহার পায়ে জড়াইয়া পড়িব । তখন তাঁহাকে উইল দিব। সী। তখন ব্যথা হইবে। যে উইল কৃষ্ণকান্তের ঘরে পাওয়া যাইবে, তাহাই সত্য বলিয়া গ্রাহ্য হইবে। গোবিন্দলাল সে উইল বাহির করিলে, জালের অপরাধগ্রসঙ্গত হইতে পারে। কু। তবে চুপ করিয়া থাক—যা হইয়াছে, তা হইয়াছে। সতরাং সন্মতি চুপ করিল-তাহার পরাজয় হইল। তার পর দই জনে সন্ধি করিয়া, সখ্যভাবে আর এক কায্যে প্রবত্ত হইল। সেই বাপী তীরবিরাজিত, চন্দ্রলোকপ্ৰতিভাসিত, চম্পকদামবিনিশ্চিমত দেবমাত্তি আনিয়া, রোহিণীর মানস চক্ষের আগ্ৰে ধরিল। রোহিণী দেখিতে লাগিল—দেখিতে, দেখিতে, দেখিতে, কাঁদিল । রোহিণী সে রাত্রে ঘনমাইল না। নবম পরিচ্ছেদ সেই অবধি নিত্য কলসী কক্ষে রোহিণী বারণী পাির্করিণীতে জল আনিতে যায়; নিত্য কোকিল ডাকে, নিত্য সেই গোবিন্দলালকে পশুপকানানমধ্যে দেখিতে পায়, নিত্য সমিতি কুমতিতে সন্ধিবিগ্রহ। উভয়ই ঘটনা হয়। সমিতি কুমতির বিবাদ বিসম্পবাদ মনতুষ্যের সহনীয়; কিন্তু সন্মতি কুমতির সদ্ভাব অতিশয় বিপত্তিজনক। তখন সমিতি কুমতির রােপ ধারণ করে, কুমতি সমিতির কাজ করে। তখন কে সমিতি, কে কুমতি, চিনিতে পারা যায় না। লোকে সমিতি বলিয়া কুমতির বিশ হয়। যাহা হউক, কুমতি হউক, সনুমতি হউক, গোবিন্দলালের রােপ রোহিণীর হৃদয়পটে দিন দিন BDBB BBBBSL BBBD BBBD BDBBB SS BBBB BBBLeSTkBeSB BBBB SS BBB DB tm উত্তজবলতর, চিত্ৰপট গাঢ়তর অন্ধকার হইতে লাগিল। তখন সংসার তাহার চক্ষে—যাক, পরাতন কথা তুলিয়া আমার কাজ নাই। রোহিণী, সহসা গোবিন্দলালের প্রতি মনে মনে অতি গোপনে প্রণয়াসক্ত হইল। কুমতির পনেকবার জয় হইল। কেন যে এত কালের পর, তাহার এ দন্দশা হইল, তাহা আমি বঝিতে পারি না, এবং বাঝাইতেও পারি না। এই রোহিণী এই গোবিন্দলালকে বালককাল হইতে দেখিতেছে—কখনও তাহার প্রতি রোহিণীর চিত্ত আকৃষ্ণটি হয় নাই। আজি হঠাৎ কেন ? জানি না। যাহা যাহা ঘটিয়াছিল, তাহা বলিয়াছি। সেই দলটি কোকিলের ডাকাডাকি, সেই বাপবীতীরে রোদ্দন, সেই কাল, সেই সস্থান, সেই চিত্তভােব, তাহার পর গোবিন্দলালের অসময়ে করণী—আবার গোবিন্দলালের প্রতি রোহিণীর বিনাপরাধে অন্যায়াচরণ---এই সকল উপলক্ষে কিছ, কাল ব্যাপিয়া গোবিন্দলাল রোহিণীর মনে সথান পাইয়াছিল। তাহাতে কি হয় না হয়, তাহা আমি জানি না, যেমন ঘটিয়াছে, আমি তেমনি লিখিতেছি। রোহিণী অতি বদ্ধিমতী, একেবারেই বঝিল যে, মরিবার কথা। যদি গোবিন্দলাল ঘণাক্ষরে একথা জানিতে পারে, তবে কখনও তাহার ছাযা মাড়াইবে না। হয়ত গ্রামের বাহিব করিয়া দিবে। কাহারও কাছে। এ কথা নহে। বোহিণী অতি যত্নে, মনের কথা মনে লকাইয়া রাখিল । কিন্তু যেমন লক্কায়িত অগিন ভিতর হইতে দগধ করিয়া আইসে, রোহিণীব চিত্তে তাঁহাই হইতে লাগিল। জীবনভার বহন করা, রোহিণীর পক্ষে কস্টদায়ক হইল। রোহিণী মনে মনে রাত্রিদিন মাতৃকামনা করিতে লাগিল। কত লোকে যে মনে মনে মাতুত্যুকামনা করে, কে তাহার সংখ্যা রাখে ? আমার বোধ হয়, যাহারা সখী, যাহারা দঃখী, তাহদের মধ্যে অনেকেই কায়মনোবাক্যে মাতৃকামনা কবে। এ পথিবীর সখ সখি নহে, সখেও দঃখময়, কোন সখেই সখি নাই, কোন সখই সমপণ নহে, C CS