পাতা:বঙ্কিম রচনাবলী (প্রথম খণ্ড).pdf/৫৬৮

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

क्रुश्काgख्छन्न ऐछझेल्न শনিবার বড় সাধ ছিল—কিন্তু তুমি যদি বলিলে না—তবে আমি শনিবা কি প্রকারে ? আমার বড় মন কেমন কেমন করিতেছে।” কেমন একটা বড় ভারি দঃখ ভোমরার মনের ভিতর অন্ধকার করিয়া উঠিতে লাগিল। যেমন বসন্তের আকাশ-বড় সন্দের, বড় নীল, বড় উক্তজবল,—কোথাও কিছ নাই—অকস্মাৎ একখানা মেঘ উঠিয়া চারি দিক আধার করিয়া ফেলে—ভোমরার বোধ হইল, যেন তার বকের ভিতর তেমনি একখানা মেঘ উঠিয়া, সহসা চারি দিক আধার করিয়া ফেলিল। ভ্রমরের চক্ষে জল আসিতে লাগিল। ভ্রমর মনে করিল, আমি অকারণে কাঁদিতেছি—আমি বড় দাম্পট হইয়াছি— আমার স্বামী রাগ করিবেন। অতএব ভ্রমর কাঁদিতে কাঁদিতে, বাহির হইয়া গিয়া, কোণে বসিয়া পা ছড়াইয়া অন্নদামঙ্গল পড়িতে বসিল। কি মাথা মন্ড পড়িল তােহা বলিতে পারি না, কিন্তু বকের ভিতর হইতে সে কালো মেঘখানা কিছতেই নামিল না। ऐछेनर्गव९* °ाज्ञिgPछन গোবিন্দলাল বাব জ্যেঠা মহাশয়ের সঙ্গে বৈষয়িক কথোপকথনে প্রবত্ত হইলেন। কথোপকথনচ্ছলে কোন জমীদারীর কিরােপ অবস্থা, তাহা সকল জিজ্ঞাসা করিতে লাগিলেন। কৃষ্ণকান্ত গোবিন্দলালের বিষয়ানরাগ দেখিয়া সন্তুস্ট হইয়া বলিলেন, “তোমরা যদি একটা একটি দেখ শন, তবে বড় ভাল হয়। দেখ, আমি আর কয় দিন ? তোমরা এখন হইতে সব দেখিয়া শনিয়া না। রাখিলে, আমি মরিলে, কিছর বাঝিতে পরিবে না। দেখ, আমি বড়ো হইয়াছি, আর কোথাও যাইতে পারি না। কিন্তু বিনা তদারকে মহাল সব খারাব হইয়া উঠিল।” গোবিন্দলাল বলিলেন, “আপনি পাঠাইলে আমি যাইতে পারি। আমারও ইচ্ছা, সকল মহালগলি এক একবার দেখিয়া আসি।” কৃষ্ণকান্ত আহাদত হইলেন। “আমার তাহাতে বড় আহাদ। আপাততঃ বন্দরখালিতে কিছর গোলমাল উপস্থিত। নায়েব যে, প্রজারা ধৰ্ম্মম ঘট করিয়াছে, টাকা দেয় না; প্রজারা বলে, আমরা খাজনা দিতেছি, নায়েব উসল দেয় না। তোমার যদি ইচ্ছা থাকে, তবে বল, আমি তোমাকে সেখানে পাঠাইবার উদ্যোগ করি।” গোবিন্দলাল সক্ষমত হইলেন। তিনি এই জন্যই কৃষ্ণকান্তের কাছে আসিয়াছিলেন। তাঁহার এই পণ্য যৌবন, মনোবাত্তি সকল উদ্বেলিত সাগরতরঙগতুল্য প্রবল, রােপতৃষ্ণা অত্যন্ত তীব্র। ভ্ৰমর হইতে সে তৃষ্ণা নিবারিত হয় নাই। নিদাঘের নীল মেঘমালার মত রোহিণীর রােপ, এই চাতকের লোচনপথে উদিত হইল-প্রথম বর্ষার মেঘদশনে চঞ্চলা ময়রীর মত গোবিন্দলালের মন, রোহিণীর রােপ দেখিয়া নাচিয়া উঠিল। গোবিন্দলাল তােহা বঝিয়া মনে মনে শপথ করিয়া, স্থির করিলেন, মরিতে হয় মরিবি, কিন্তু তথাপি ভ্রমরের কাছে অবিশ্ববাসী বা কৃতঘ্য হইব না। তিনি মনে মনে স্থির করিলেন যে বিষয়কশেম মনোভিনিবেশ করিয়া রোহিণীকে ভুলিব— সস্থানান্তরে গেলে, নিশ্চিত ভুলিতে পারিব। এই রােপ মনে মনে সঙ্কলপ করিয়া তিনি পিতৃব্যের কাছে গিয়া বিষয়ালোচনা করিতে বসিয়াছিলেন। বন্দরখালির কথা শনিয়া, আগ্রহ সহকারে তথায় গমনে সক্ষমত হইলেন। ভ্রমর শানিল, মেজ বাব দেহাত যাইবেন। ভ্ৰমর ধরিল, আমিও যাইব । কাঁদাকাটি, হাঁটাহাঁটি পড়িয়া গেল। কিন্তু ভ্ৰমরের শাশড়ী কিছতেই যাইতে দিলেন না। তরণী সক্তিজত করিয়া ভৃত্যবগে পরিবেষ্টিত হইয়া ভ্রমরের মািখচুম্বন করিয়া, গোবিন্দলাল দশ দিনের পথ বন্দরখালি যাত্ৰা করিলেন। ভ্রমর আগে মাটিতে পড়িয়া কাঁদিল। তার পর উঠিয়া, অন্নদামঙ্গল ছিড়িয়া ফেলিল, খাঁচার পাখী উড়াইয়া দিল, পতুল সকল জলে ফেলিয়া দিল, টবের ফলগাছ সকল কাটিয়া দিল—ননদের সঙ্গে কোন্দল করিল—এইরপ নানাপ্রকার দৌরাত্ম্য করিয়া, শয়ন করিল। শইয়া চাদর মাড়ি দিয়া আবার কাঁদিতে আরম্ভ করিল। এ দিকে অনকােল পবনে চালিত হইয়া, গোবিন্দলালের তরণী, তরঙিগণী-তরঙগ বিভিন্ন করিয়া চলিল । G. VCA