পাতা:বঙ্কিম রচনাবলী (প্রথম খণ্ড).pdf/৫৭৯

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ब७दक ब्रष्नाबव्ी শ্রান্ধের সময়ে নিমন্ত্রণে আসিয়া এই কথা বঝাইয়া দিয়া গিয়াছেন। বিষয় তোমার, আমার নহে । গো। আমার জ্যোিন্ঠতাত মিথ্যাবাদী ছিলেন না। বিষয় তোমার, আমার নহে। তিনি যখন তোমাকে লিখিয়া দিয়া গিয়াছেন, তখন বিষয় তোমার, আমার নহে। ভ্র। যদি সেই সন্দেহই থাকে, আমি না হয় তোমাকে লিখিয়া দিতেছি। গো। তোমার দান গ্রহণ করিয়া জীবনধারণ করিতে হইবে ? ভ্ৰ। তাহাতেই বা ক্ষতি কি ? আমি তোমার দাসানদাসী বই ত নাই ? গো । আজি কালি ও কথা সাজে না, ভ্ৰমর। ভ্ৰ। কি করিয়াছি ? আমি তোমা ভিন্ন এ জগৎসংসারে আর কিছ জানি না। আট বৎসরের সময়ে আমার বিবাহ হইয়াছে—আমি সতের বৎসরে পড়িয়াছি। আমি এ নয়। বৎসর আর কিছ জানি না, কেবল তোমাকে জানি। আমি তোমার প্রতিপালিত, তোমার খেলিবার পত্তল---আমার কি অপরাধ হইল ? গো । মনে করিয়া দেখা । ভ্ৰ। অসময়ে পিত্ৰালয়ে গিয়াছিলাম—ঘাট হইয়াছে, আমার শত-সহস্র অপরাধ হইয়াছে— আমায় ক্ষমা কর। আমি আর কিছ জানি না, কেবল তোমায় জানি, তাই রাগ করিয়াছিলাম । গোবিন্দলাল তখন কথা কহিল না। তাহার অগ্রে, আলীলায়িতকুন্তলা, অশ্রবিপ্ৰলতা, বিবাশা, কাতরা, মগধা, পদপ্রান্তে বিলন্ঠিতা সেই সপতদশবষীয়া বনিতা। গোবিন্দলাল কথা কহিল না। গোবিন্দলাল তখন ভাবিতেছিল, “এ কালো! রোহিণী কত সন্দরী ! এর গণ আছে, তার রােপ আছে। এত কাল গণের সেবা করিয়াছি, এখন কিছ দিন রাপের সেবা করিব। ——আমার এ অসার, এ আশাশন্যে, প্রয়োজনশন্য জীবন ইচ্ছামত কাটাইবি। মাটির ভান্ড যে দিন ইচ্ছা সেই দিন ভাঙিগয়া ফেলিব।” ভ্রমর পায়ে ধরিয়া কাঁদিতেছে-ক্ষমা কর! আমি বালিকা ! যিনি অনন্ত সখদঃখের বিধাতা, অন্তৰ্য্যামী, কাতরের বন্ধ, অবশ্যই তিনি এ কথাগলি শনিলেন, কিন্তু গোবিন্দলাল তােহা শানিল না। নীরব হইয়া রহিল। গোবিন্দলাল রোহিণীকে ভাবিতেছিল। তীব্রজ্যোতিৰ্ম্মময়ী, অনন্তপ্রভাবশালিনী, প্রভাতশাক্কতারার পিণী, রপতিরঙিগণী, চণ8লা রোহিণীকে ভাবিতেছিল। ভ্ৰমর উত্তর না পাইয়া বলিল, “কি বল ?” গোবিন্দলাল বলিল, “আমি তোমায় পরিত্যাগ করিব।” কেমর পদত্যাগ করল। উঠিল। বাহিরে যাইতেছিল। চৌকাঠ বাধিয়া পড়িয়া মচ্ছিতা ठा । উনত্রিংশতত্তম পরিচ্ছেদ “কি অপরাধ আমি করিয়াছি যে আমাকে ত্যাগ করিবে ?” এ কথা ভ্রমর গোবিন্দলালকে মসুখে বলিতে পারিল না—কিন্তু এই ঘটনার পর পালে পলে, মনে মনে জিজ্ঞাসা করিতে লাগিল, আমার নিক অপরাধ ? গোবিন্দলালও মনে মনে অনসন্ধান করিতে লাগিল যে, ভ্ৰমরের কি অপরাধ ? ভ্ৰমরের যে বিশেষ গরতের অপরাধ হইয়াছে, তাহা গোবিন্দলালের মনে এক প্রকার স্থির হইয়াছে। কিন্তু অপরাধটা কি, তাহা তত ভাবিয়া দেখেন নাই! ভাবিয়া দেখিতে গেলে মনে হইত, ভ্রমর যে তাঁহার প্রতি অবিশ্ববাস করিয়াছিল, অবিশ্ববাস করিয়া তাঁহাকে এত কঠিন পত্র লিখিয়াছিলএকবার তাঁহাকে মাখে সত্য মিথ্যা জিজ্ঞাসা করিল না, এই তাহার অপরাধ। যার জন্য এত করি, সে এত সহজে আমাকে অবিশ্ববাস করিয়াছে, এই তাহার অপরাধ। আমরা কুমতি সমিতির কথা পর্বে বলিয়াছি। গোবিন্দলালের হৃদয়ে পাশাপাশি উপবেশন করিয়া, কুমতি সমিতি যে কথোপকথন করিতেছিল, তাহা সকলকে শনাইব। কুমতি বলিল, “ভ্রমরের প্রথম এইটি অপরাধ, এই অবিশবাস।” সম্মতি উত্তর করিল, “যে অবিশবাসের যোগ্য, তাহাকে অবিশ্ববাস না করিবে কেন ? তুমি ○ C げ