পাতা:বঙ্কিম রচনাবলী (প্রথম খণ্ড).pdf/৫৮৩

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

বঙিকম রচনাবলী এই বলিয়া ভ্রমর, ভক্তিভা সবামীর চরণে প্ৰণাম করিয়া গজেন্দ্রগমনে করিয়া দবার রন্ধ করিল। একত্রিংশতত্তম পরিচ্ছেদ এই আখ্যায়িকা আরম্ভের কিছ পকেব ভ্রমরের একটি পত্র হইয়া সীতিকাগারেই নম্ৰাট হয়। ভ্ৰমর আজি কক্ষান্তরে গিয়া দবার রন্ধ করিয়া, সেই সাত দিনের ছেলের জন্য কাঁদিতে বসিল। মেঝের উপর পড়িয়া, ধলায় লটাইয়া অশমিত নিশবাসে পত্রের জন্য কাঁদিতে লাগিল। “আমার ননীর পত্তলী, আমার কােণ্ডগালের সোণা, আজ তুমি কোথায় ? আজি তুই থাকিলে আমায় কার সাধ্য ত্যাগ করে। আমার মায়া কাটাইলেন, তোর মায়া কে কাটাইত ? আমি কুরপো কুৎসিতা, তোকে কে কুৎসিত বলিত ? তোর চেয়ে কে সন্দের ? একবার দেখা দে বাপ—এই বিপদের সময় একবার কি দেখা দিতে পারিস না—মরিলে কি আর দেখা দেয় না ?--” ভ্রমর তখন যক্ত করে, মনে মনে উদ্ধাবমখে, অথচ অসফট বাক্যে দেবতা দিগকে জিজ্ঞাসা করিতে লাগিল, “কেহ আমাকে বলিয়া দাও-—আমার কি দোষে, এই সতের বৎসর মাত্র বয়সে এমন অসম্ভব দদশা ঘটিল; আমার পত্র মরিয়াছে—আমায় স্বামী ত্যাগ করিল-আমার সতের বৎসর মাত্র বয়স, আমি এই বয়সে স্বামীর ভালবাসা বিনা আর কিছ ভালবাসি নাই—আমার ইহলোকে আর কিছ. কামনা নাই—আর কিছ. কামনা করিতে শিখি নাই—আমি আজ এই সতের বৎসর বয়সে তাহাতে নিরাশ হইলাম কেন ?” ভ্রমর কাঁদিয়া কাটিয়া সিদ্ধান্ত করিল—দেবতারা নিতান্ত নিষ্পাঠাের। যখন দেবতা নিম্ঠর, তখন মনষ্যে আর কি করিবে—কেবল কাঁদিবে। ভ্রমর কেবল কাঁদিতে লাগিল। এ দিকে গোবিন্দলাল, ভ্ৰমরের নিকট হইতে বিদায় হইয়া ধীরে ধীরে বহিৰ্ব্ববাটীতে আসিলেন। আমরা সত্য কথা বলিব—গোবিন্দলাল চক্ষের জল মাছিতে মাছিতে আসিলেন। বালিকার অতি সরল যে প্ৰীতি-আকৃত্ৰিম, উদ্বেলিত, কথায় কথায় ব্যক্তি, যাহার প্রবাহ দিনরাত্রি ছটিতেছে—দ্রমরের কাছে সেই অমল্য প্রীতি পাইয়া গোবিন্দলাল সখী হইয়াছিলেন, গোবিন্দলালের এখন তাহা মনে পড়িল । মনে পড়িল যে, যাহা ত্যাগ করিলেন, তাহা আর পথিবীতে পাইবেন না। ভাবিলেন, যাহা করিয়াছি, তাহা আর এখন ফিরে না—এখন ত যাই। এখা যায়ু করিয়াছি, এখন যাই। বঝি আর ফেরা হইবে না। যাহা হউক, যাত্ৰা করিয়াছি, C R TT | সেই সময়ে যদি গোবিন্দলাল দই পা ফিরিয়া গিয়া, ভ্রমরের রােদ্ধ দবার ঠেলিয়া একবার বলিতেন—“ভ্রমর, আমি আবার আসিতেছি,” তবে সকল মিটিত । গোবিন্দলালের অনেক বার সে ইচ্ছা হইয়াছিল। ইচ্ছা হইলেও তােহা করিলেন না। ইচ্ছা হইলেও একটা লজজা করিল। ভাবিলেন, এত তাড়াতাড়ি কি ? যখন মনে করিব, তখন ফিরিব। ভ্রমরের কাছে গোবিন্দলাল অপরাধী। আবার ভ্রমরের সঙ্গে সাক্ষাৎ করিতে সাহসী হইল না। যাহা হয় একটা সিথর করিবার বদ্ধি হইল না। যে পথে যাইতেছেন, সেই পথে চলিলেন। তিনি চিন্তাকে বক্তজন করিয়া-- বহিব্বাটীতে আসিয়া সক্তিজত অশোেব আরোহণপৰ্ব্বক কশাঘাত করিলেন। পথে যাইতে যাইতে রোহিণীর রািপরাশি হৃদয়মধ্যে ফাটিয়া উঠিল। ○ brミ