পাতা:বঙ্কিম রচনাবলী (প্রথম খণ্ড).pdf/৫৯৯

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ब७दक ब्रष्नाबव्ी কাটিয়া গেল, গোবিন্দলাল আসিল না। এদিকে ভ্রমরেরও পীড়া বদ্ধি হইতে লাগিল। হাঁপানি কাশি রোগ।— নিত্য শরীরীক্ষয়-যম অগ্রসর—বঝি আর ইহজন্মে দেখা হইল না। তার পর পঞ্চম বৎসর প্রবত্ত হইল। পঞ্চম বৎসরে একটা ভারি গোলযোগ উপস্থিত হইল। হরিদ্রাগ্রামে সংবাদ আসিল যে, গোবিন্দলাল ধরা পড়িয়াছে। সংবাদ আসিল যে, গোবিন্দলাল আনিয়াছে। যশোহরে তাঁহার বিচার হইবে। জনরবে এই সংবাদ ভ্রমর শনিলেন। জনরিবের সত্ৰ এই । গোবিন্দলাল, ভ্রমরের দেওয়ানজীকে পত্র লিখিয়াছিলেন যে, “আমি জেলে চলিলাম—আমার পৈতৃক বিষয় হইতে আমার রক্ষার জন্য অৰ্থ ব্যয় করা যদি তোমাদিগের অভিপ্রায়সম্মত হয়, তবে এই সময়। আমি তাহার যোগ্য নাহি । আমার বাঁচিতে ইচ্ছা নাই। তবে ফাঁসি যাইতে না হয়, এই ভিক্ষা। জনরবে এ কথা বাড়ীতে জানাইও, আমি পত্র লিখিয়াছি, এ কথা প্রকাশ করিও না।” দেওয়ানজী পত্রের কথা প্রকাশ করিলেন না—জনরব বলিয়া অন্তঃপারে সংবাদ পাঠাইলেন। ভ্রমর শনিয়াই পিতাকে আনিতে লোক পাঠাইলেন। শনিবামাত্র মাধবীনাথ কন্যার নিকট আসিলেন। ভ্রমর, তাঁহাকে নোটে কাগজে পঞ্চাশ হাজার টাকা বাহির করিয়া দিয়া সজলনয়নে বলিলেন, “বাবা, এখন যা করিতে হয় করা।—দেখিও—আমি আত্মহত্যা না করি।” মাধবীনাথও কাঁদিতে কাঁদিতে বলিলেন, “মা ! নিশিচনত থাকিও—আমি আজই যশোহরে যাত্রা করিলাম। কোন চিন্তা করিও না। গোবিন্দলাল যে খােন করিয়াছেন, তাহার কোন প্রমাণ নাই। আমি প্রতিজ্ঞা করিয়া যাইতেছি যে, তোমার আটচল্লিশ হাজার টাকা বাঁচাইয়া আনিব— আর আমার জামাইকে দেশে আনিব।” মাধবীনাথ তখন যশোহরে যাত্রা করিলেন। শনিলেন যে, প্রমাণের অবস্থা অতি ভয়ানক। ইনস্পেক্টর ফিচেল খাঁ মোকদ্দমা তদারক করিয়া সাক্ষী চালান দিয়াছিলেন। তিনি রংপো সোণা প্রভৃতি যে সকল সাক্ষীরা প্রকৃত অবস্থা জানিত, তাহাদিগের কাহারও সন্ধান পান নাই। সোণা নিশাকরের কাছে ছিল—রাপা কোন দেশে গিয়াছিল, তাহা কেহ জানে না। প্রমাণের এইরাপ দরবস্থা দেখিয়া নগদ কিছ দিয়া ফিচেল খাঁ তিনটি সাক্ষী তৈয়ার করিয়াছিল। সাক্ষীরা ম্যাজিস্ট্রেট সাহেবের কাছে বলিল যে, আমরা সবচক্ষে দেখিয়াছি যে, গোবিন্দলাল ওরফে চুনিলাল স্বহস্তে পিস্তল মারিয়া রোহিণীকে খােন করিয়াছেন—আমরা তখন সেখানে গান শনিতে গিয়াছিলাম। ম্যাজিস্ট্রেট সাহেব আহেলা বিলাতী—স শাসন জন্য সব্বদা গবৰ্ণমেণ্টের দ্বারা প্রশংসিত হইয়া থাকেন—তিনি এই প্রমাণের উপর নিভাির করিয়া গোবিন্দলালকে সেশনের বিচারে আপণ করিলেন। যখন মাধবীনাথ যশোহরে পৌছিলেন, তখন গোবিন্দলাল জেলে পচিতেছিলেন। মাধবীনাথ পৌছিয়া, সবিশেষ বত্তান্ত শনিয়া বিষন্ন হইলেন। তিনি সাক্ষীদিগের নাম ধাম সংগ্ৰহ করিয়া তাহাদিগের বাড়ী গেলেন। তাহাদিগকে বলিলেন, “বাপা! ম্যাজিস্ট্রেট সাহেবের কাছে যা বলিয়াছ, তা বলিয়াছ। এখন জজ সাহেবের কাছে ভিন্ন প্রকার বলিতে হইবে। বলিতে হইবে যে, আমরা কিছ জানি না। এই পাঁচ পাঁচ শত টাকা নগদ লও। আসামী খালাস হইলে আর পাঁচ পাঁচ শত দিব।” সাক্ষীরা বলিল, “খেলাপ হলফের দায়ে মারা যাইব যে ।” মাধবীনাথ বলিলেন, “ভয় নাই। আমি টাকা খরচ করিয়া সাক্ষীর দবারা প্রমাণ করাইব যে, ফিচেল খাঁ তোমাদিগের মারপিট করিয়া ম্যাজিস্ট্রেট সাহেবের কাছে মিথ্যা সাক্ষ্য দেওয়াইয়াছে।” .. "°" চতুদ্দশি পরিষ মধ্যে কখনও হাজার টাকা একত্রে দেখে নাই। তৎক্ষণাৎ সক্ষমত ठूठ्०ा । সেশনে বিচারের দিন উপস্থিত হইল। গোবিন্দলাল কাঠগড়ার ভিতর। প্রথম সাক্ষী উপস্থিত হইয়া হলফ পড়িল। উকীল সরকার তাহাকে জিজ্ঞাসা করিলেন, “তুমি এই গোবিন্দলাল ওরফে চুনিলালকে চেন ?” সাক্ষী। কই—না—মনে তা হয় না। উকীল। কখনও দেখিয়াছ ? जामी । ना। উকীল। রোহিণীকে চিনিতে ? ○ ふ げ