পাতা:বঙ্কিম রচনাবলী (প্রথম খণ্ড).pdf/৬২৩

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

बस्किम ब्रष्नावली জেব-উন্নিসা একটা ফলের তোররা ফেলিয়া দরিয়াকে এমন জোরে মারিলেন যে, দরিয়ার কৰ্ণ ভূষায় লাগিয়া, কাণ কাটিয়া রক্ত পড়িল। তখন জেব-উন্নিসা তাহাকে আরও কিছ, অথ দিয়া, বিদায় করিলেন। বলিলেন, “আর আসিস না।” দরিয়া তসলিমীম দিয়া বিদায় হইল। মনে মনে বলিল, “আবার আসিব—আবার জবালাইব —আবার মারা খাইব—আবার টাকা নিব। তোমার সব্বনাশ করিব।” পঞ্চম পরিচ্ছেদ ঃ উদিপত্রী বেগম ঔরঙগজেব জগৎপ্রথিত বাদশাহ। তিনি জগৎপ্রথিত সাম্রাজ্যের অধিকারী হইয়াছিলেন। নিজেও বদ্ধিমান, কৰ্ম্মদক্ষ, পরিশ্রমী এবং অন্যান্য রাজগণে গণবান ছিলেন। এই সকল অসাধারণ গণ থাকিতেও সেই জগৎপ্ৰথিতনামা রাজাধিরাজ, আপনার জগৎপ্রথিত সাম্রাজ্য একপ্রকার ধবংস করিয়া মানবলীলা সংবরণ করিলেন। ইহার একমাত্র কারণ, ঔরঙ্গজেব মহাপাপিঠ ছিলেন। তাঁহার ন্যায় ধত্তি, কপটাচারী, পাপে সঙ্কোচশন্য, সাবাথ পর, পরপীড়ক, প্রজাপীড়ক দই একজন মাত্র পাওয়া যায়। এই কপটাচারী সম্রাট জিতেন্দ্ৰিয়তার ভাণ করিতেন—কিন্তু অন্তঃপর অসংখ্য সন্দিরীরাজিতে মধমক্ষিক পরিপািণ মধ্যচক্রের ন্যায় দিবারাত্র আনন্দধবনিতে ধবনিত হইত। তাঁহার মহিষীও অসংখ্য—আর সরাব বিধানের সঙ্গে সম্পন্বন্ধশান্য বেতনভোগিনী বিলাসিনীও অসংখ্য। এই পাপিঠাদিগের সঙ্গে এই গ্রন্থের সম্প্ৰবন্ধ বড় অলপ। কিন্তু কোন কোন মহিষীর সঙেগ এই উপাখ্যানের ঘনিষ্পাঠ সম্পবিন্ধ আছে। মোগল বাদশাহেরা যাঁহাকে প্রথম বিবাহ করিতেন, তিনিই প্রধানা মহিষী হইতেন। হিন্দন্বেষী ঔরঙ্গজেবের দভাগ্যক্রমে একজন হিন্দ-কন্যা তাঁহার প্রধানা মহিষী। আককবর বাদশাহ রাজপত রাজগণের কন্যা বিবাহ করার প্রথা প্রবত্তিত করিয়াছিলেন। সেই নিয়ম অনসারে, সকল বাদশাহেরই হিন্দমহিষী ছিল। ঔরঙ্গজেবের প্রধানা মহিষী যোধপরী বেগম। যোধপরী বেগম প্রধান মহিষী হইলেও প্ৰেয়সী মহিষী ছিলেন না। যে সব্বাপেক্ষা প্রেয়সী, সে একজন খিন্টিয়ানী; উদিপরেী নামে ইতিহাসে পরিচিত। উদয়পরের সঙ্গে ইহার কোন সম্প্ৰবন্ধ ছিল বলিয়া ইহার নাম উদিপরেী নহে। আসিয়া খন্ডের দরপশ্চিমপ্রান্তস্থিত যে জজিয়া এখন রাষিয়া রাজ্যভুক্ত, তাহাই ইহার জন্মস্থান। বাল্যকালে একজন দাসব্যবসায়ী ইহাকে বিক্রয়ার্থে ভারতবষে আনে, ঔরঙ্গজেবের অগ্রজ দারা ইহাকে ক্ৰয় করেন। বালিকা বয়ঃপ্ৰাপত হইলে অদ্বিতীয় রােপলাবণ্যবতী হইয়া উঠিল। তাহার রাপে মগধ হইয়া দারা তাহার অত্যন্ত বশীভূত হইলেন। বলিয়াছি, উদিপরেী মসলমান ছিল না, খিন্টিয়ান। প্রবাদ আছে যে, দারাও শেষে খিলন্টিয়ান হইয়াছিলেন। দারাকে যন্ধে পরাস্ত করিয়া, ঔরঙ্গজেব সিংহাসনে বসিতে পাইয়াছিলেন। দারাকে পরাস্ত করিয়া ঔরঙ্গজেব প্রথমে তাহাকে বন্দী করিয়া, পরে বধ করেন। দারাকে বধ করিয়া নরাধম ঔরঙ্গজেব এক আশ্চৰ্য্য প্রসঙ্গ উত্থাপিত করিল। উড়িয়াদিগের কলঙ্ক আছে যে, বড় ভাই মরিলে ছোট ভাই বিধবা ভ্ৰাতৃজায়াকে বিবাহ করিয়া তাহার শোকাপনোদন করে। এই শ্রেণীর একজন উড়িয়াকে আমি একদা জিজ্ঞাসা করিয়াছিলাম, “তোমরা এমন দম্পকম্পম কেন করা ?” সে ঝটিতি উত্তর করিল, “আৰ্জেজ্ঞ, ঘরের বৌ কি পরকে দিব ?” ভারতেশবের ঔরঙ্গজেবও বোধ হয়, সেইরােপ বিচার করিলেন। তিনি কোরাণের বচন উদ্ধত করিয়া প্রমাণ করিলেন যে, ইসলাম ধৰ্ম্মানসারে তিনি অগ্রজপত্নী বিবাহ করিতে বাধ্য। অতএব দারার দাইটি প্রধানা মহিষীকে স্বীয় অদ্ধাঙ্গের ভাগিনী হইতে আহত করিলেন। একটি রাজপত্যকন্যা; আর একজন এই উদিপরেী মহাশয়। রাজপন্তকন্যা এই আজ্ঞা পাইয়া যাহা করিল, হিন্দ কন্যা মাত্রেই সেই অবস্থায় তাহা করিবে, কিন্তু আর কোন জাতীয়া কন্যা তাহা পরিবে না;—সে বিষ খাইয়া মরিল। খিন্টিয়ানীটা সানন্দে ঔরঙ্গজেবের কণঠলগনা হইল। ইতিহাস এই গণিকার নাম কীৰ্ত্তিত করিয়া জন্ম সার্থক করিয়াছেন, আর যে ধৰ্ম্মম রক্ষার জন্য বিষ পান করিল, তাহার নাম লিখিতে ঘণা বোধ করিয়াছেন। ইতিহাসের মল্য এই। উদিপরেীর যেমন অতুল্য রােপ, তেমনি অতুল্য মদ্যাসক্তি। দিল্লীর বাদশাহেরা মসলমান V RR