পাতা:বঙ্কিম রচনাবলী (প্রথম খণ্ড).pdf/৬২৪

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ब्राङर्गञ्ज९छ হইয়াও অত্যন্ত মদ্যাসন্ত ছিলেন। তাঁহাদিগের পৌরবগাঁ এ বিষয়ে তাঁহাদের দলটান্তানগামী হইতেন। রঙমহলেও এ রঙেগর ছড়াছড়ি! এই নরকমধ্যেও উদিপরেী নাম জাহির করিয়া তুলিয়াছিল। জেব-উন্নিসা। হঠাৎ উদিপরীর শয়নগহে প্রবেশ করিতে পারিল না। কেন না, ভারতেশ বরের প্রিয়তমা মহিষী মদ্যপানে প্রায় বিলপতিচেতনা; বসনভূষণ কিছ বিপৰ্য্যস্ত, বাঁদীরা সজা পািনবিন্যস্ত করিল; ডাকিয়া সচেতন ও সাবধান করিয়া দিল। জেব-উন্নিসা আসিয়া দেখিল, উদিপরেীর বাম হাতে সর্টকা, নয়ন অন্ধনিমীলিত, অধরবান্ধলীর উপর মাছি উড়িতেছে; ঝটিকাবিভিন্ন ভূপতিত বন্টিনিষিক্ত পক্ষপরাশির মত উদিপরেী বিছানায় পড়িয়া আছে। জেব-উন্নিসা আসিয়া কুণিশা করিয়া বলিল, “মা! আপনার মেজাজ, উত্তম ত ?” উদিপরেী অন্ধ জাগ্রাতের সবরে, রসনার জড়তার সহিত বলিল, “এত রাত্রে কেন ?" জে। একটা বড় খবর আছে। উ। কি ? মারহাট্টা ডাকু মরেছে ? জো । তারও অপেক্ষা খোশ খবর। এই বলিয়া জেব-উন্নিসা গছাইয়া বাড়াইয়া রঙ ঢালিয়া দিয়া, চঞ্চলকুমারীর সেই তসবির ভাঙ্গার গলপটা করিলেন। উদিপরেী জিজ্ঞাসা করিল, “এ আর খোশ খবর কি ?” দেখিতে পারি না। রােপনগরের সেই সন্দরী রাজকুমারী আসিয়া হজরতের তামাকু সাজিবে, বাদশাহের কাছে এই ভিক্ষা চাহিও ।” উদিপরেী না বঝিয়া, নেশার ঝোঁকে বলিল, “বহত আচ্ছা।” ইহার কিছ পরে রাজকাৰ্য্যপরিশ্রমক্সান্ত বাদশাহ শ্রমাপনয়ন জন্য উদিপরীর মন্দিরে উপস্থিত হইলেন। উদিপরেী নেশার ঝোঁকে চঞ্চলকুমারীর কথা, জেব-উন্নিসার কাছে যেমন শনিয়াছিল, তেমনই বলিল। “সে আসিয়া আমার তামাকু সাজিবে,” এ প্রার্থনাও জানাইল । বলিবামাত্র ঔরঙ্গজেব শপথ করিয়া সম্বীকার করিলেন। কেন না, ক্ৰোধে অস্থির হইয়াছিলেন। ষষ্ঠ পরিচ্ছেদ ঃ যোধপরী বেগম পরদিন রাজাজ্ঞা প্রচারিত হইল। রািপনগরের ক্ষদ্র রাজার উপর এক আদেশপত্ৰ জারি হইল। যে অদ্বিতীয় কুটিলতা-ভয়ে জয়সিংহ ও যশোবন্ত সিংহ প্রভৃতি সেনাপতিগণ ও আজিম শাহ প্রভৃতি শাহজাদাগণ সব্বদা শশব্যস্ত—যে অভেদ্য কুটিলতাজালে বন্ধ হইয়া চাতুরাগ্রগণ্য শিবাজীও দিল্লীতে কারাবদ্ধ হইয়াছিলেন—এই আজ্ঞাপত্ৰ সেই কুটিলতাপ্ৰসত। তাহাতে লিখিত হইল যে, “বাদশাহ রািপনগরের রাজকুমারীর অপব্ব রােপলাবণ্যবত্তান্ত শ্রবণে মগধ হইয়াছেন। আর রহপনগরের রাওসাহেবের সংসাবভাব ও রাজভক্তিতে বাদশাহ প্রীত হইয়াছেন। অতএব বাদশাহ রাজকুমারীর পাণিগ্রহণ করিয়া তাঁহার সেই রাজভক্তি পরিস্কৃত করিতে ইচ্ছা করেন। রাজকন্যাকে দিল্লীতে পাঠাইবার উদ্যোগ করিতে থাকুন; শীঘ্র রাজসৈন্য আসিয়া কন্যাকে দিল্লীতে লইয়া যাইবে।” এই সংবাদ রািপনগরে আসিবামাত্র মহা হলস্থল পড়িয়া গেল। রািপনগরে আর আনন্দের সীমা রহিল না। যোধপর, অম্বর প্রভৃতি বড় বড় রাজপত রাজগণ মোগল বাদশাহকে কন্যা দান করা অতি গরতের সৌভাগ্যের বিষয় বলিয়া বিবেচনা করিতেন। সে স্থলে রািপনগরের ক্ষদ্রজীবী রাজার অদলেট এই শােভ ফল বড়ই আনন্দের বিষয় বলিয়া সিদ্ধ হইল। বাদশাহের বাদশাহ—যাঁহার সমকক্ষ মনষ্যলোকে কেহ নাই—তিনি জামাতা হইবেন, -চঞ্চলকুমারী পথিবীশবরী হইবেন—ইহার অপেক্ষা আর সৌভাগ্যের বিষয় কি আছে? রাজা, রাজরাণী, পৌরজন, রািপনগরের প্রজাবগ আনন্দে মাতিয়া উঠিল। রাণী দেবমন্দিরে পজা পাঠাইয়া দিলেন ; রাজা এই সংযোগে কোন ভূম্যধিকারীর কোন কোন গ্রাম কাড়িয়া লইবেন, তাহার ফান্দ করিতে লাগিলেন। কেবল চঞ্চলকুমারীর সখীজন নিরানন্দ। তাহারা জানিত যে, এ সম্পবন্ধে মোগলদ্বেষিণী চণ্ডলকুমারীর সখ নাই। \Ն ՀՖ