পাতা:বঙ্কিম রচনাবলী (প্রথম খণ্ড).pdf/৬৩৬

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ज्ञाङन्निश्छ् মাণিকলাল তখন রাণার পদধলি গ্রহণ করিল এবং রাণাকে ক্ষণকাল অবস্থিতি করাইয়া গহামধ্যে প্রবেশ করিয়া তথা হইতে অপহৃত মক্তাবলয়, পত্র দইখানি এবং আশরাফি চারি ভাগ আনিয়া দিল। বলিল, “ব্রাহ্মণের যাহা আমরা কাড়িয়া লইয়াছিলাম, তাহা শ্ৰীচরণে অপােণ করিতেছি। পত্র দইখানি আপনারই জন্য। দাস যে উহা পাঠ করিয়াছে, সে অপরাধ মাজজনা করবেন।” রাণা পত্র হসোত লইয়া দেখিলেন, তাঁহারই নামাঙ্কিত শিরোনামা। বলিলেন, “মাণিকলাল— পত্ৰ পড়িবার এ সােথান নহে। আমার সঙেগ আইস— তোমরা পথ জান, পথ দেখাও।” মাণিকলাল পথ দেখাইয়া চলিল। রাণা দেখিলেন যে, দস্য একবারও তাহার ক্ষত ও আহত হস্তের প্রতি দভিটপাত করিতেছে না বা তৎসম্বন্ধে একটি কথাও বলিতেছে না—বা একবার মািখ বিকৃত করিতেছে না। রাণা শীঘ্রই বন হইতে বেগবতী ক্ষীণা তটিনীতীরে এক সরম্য নিভৃত সম্প্রথানে আসিয়া উপস্থিত হইলেন। পঞ্চম পরিচ্ছেদ ঃ চঞ্চলকুমারীর পত্ৰ তথায়, উপলঘাতিনী কালনাদিনী তটিনীরব সঙ্গে সমন্দ মধর বায়, এবং সবরলহরীবিকীর্ণকারী কুঞ্জবিহঙ্গমগণধপনি মিশাইতেছে। তথায় স্তবকে স্তবকে বন্য কুসম সকল প্রস্ফটিত হইয়া, পাববতীয় বাক্ষরাজি আলোকময় করিতেছে। তথায়, রােপ উছলিতেছে, শবদ তরঙ্গায়িত হইতেছে, গন্ধ মাতিয়া উঠিতেছে, এবং মন প্রকৃতির বশীভূত হইতেছে। এইখানে রাজসিংহ এক বহৎ প্রস্তরখন্ডের উপর উপবেশন করিয়া পত্র দইখানি পড়িতে প্রবত্ত হইলেন। প্রথম রাজা বিক্রমসিংহের পত্ৰ পড়িলেন । পড়িয়া ছিড়িয়া ফেলিলেন। মনে করিলেন, ব্রাহ্মণকে কিছ দিলেই পত্রের উদ্দেশ্য সফল হইবে। তার পর চ৭৪লকুমারীর পত্ৰ পড়িতে লাগিলেন। পত্র এইরহপ;— “রাজনী—আপনি রাজপতি-কুলের চড়া—হিন্দরে শিরোভূষণ। আমি অপরিচিতা হীনমতি বালিকা-নিতান্ত বিপন্ন না হইলে কখনই আপনাকে পত্র লিখিতে সাহস করতাম না। নিতান্ত বিপন্ন বঝিয়াই আমার এ দঃসাহস মাজজনা করবেন। “যিনি এই পত্ৰ লইয়া যাইতেছেন, তিনি আমার গরদেব। তাঁহাকে জিজ্ঞাসা করিলে জানিতে পরিবেন—আমি রাজপন্তকন্যা। রােপনগর অতি ক্ষদ্র রাজ্য—তথাপি বিক্রমসিংহ সোলাণ্ডিক রাজপত—রাজকন্যা বলিয়া আমি মধ্য দেশাধিপতির কাছে গণ্যা না হই—ব্রাজপত্যকন্যা বলিয়া দয়ার পাত্রী। কেন না, আপনি রাজপতপতি-রাজপতিকুলতিলক । “অনগ্ৰহ করিয়া আমার বিপদ শ্রবণ করেন। আমার দরদভ্ৰাটক্লমে, দিল্লীর বাদশাহ আমার পাণিগ্রহণ করিতে মানস করিয়াছেন। অনতিবিলম্বে তাঁহার সৈন্য, আমাকে দিল্লী লইয়া যাইবার জন্য আসিবে। আমি রাজপত কন্যা, ক্ষত্রিয়োকুলোদাভবা—কি প্রকারে তাহদের দাসী হইব ? রাজহংসী হইয়া কেমন করিয়া বকসহচরী হইব ? হিমালয়ানন্দনী হইয়া কি প্রকারে পণ্ডিকল তড়াগে মিশাইব ? বাজকুমারী হইয়া কি প্রকারে তুরকী বাববারের আজ্ঞাকারিণী হইব ? আমি সিথর করিয়াছি, এ বিবাহের অগ্ৰে বিষভোজনে প্রাণত্যাগ করব। “মহারাজাধিরাজ ! আমাকে অহঙকৃত মনে করিবেন না। আমি জানি যে, আমি ক্ষ-দ্র ভূম্যধিকারীর কন্যা-যোধপর, অমবর প্রভৃতি দোদ “ডপ্রতাপশালী রাজাধিরাজগণও দিল্লীর বাদশাহকে কন্যাদান করা কলঙক মনে করেন না-কলঙক মনে করা দরে থােক, বরং গৌরব মনে করেন। আমি সে সব ঘরের কাছে কোন ছার ? আমার এ অহঙ্কার কেন, এ কথা। আপনি জিজ্ঞাসা করিতে পারেন। কিন্তু মহারাজ ! সৰ্যদেব অস্ত গেলে খদ্যোত কি জবলে না ? শিশিরভারে নলিনী মাদ্রিত হইলে, ক্ষদ্র কুন্দকুসম কি বিকশিত হয় না ? যোধপর, অম্পবর কুলধবংস করিলে রািপনগরে কি কুলরক্ষা হইতে পারে না ? মহারাজ, ভাটমখে শনিয়াছি যে, বনবাসী রাণা প্ৰতাপের সহিত মহারাজ মানসিংহ ভোজন করিতে আসিলে, মহারাণা ভোজন করেন নাই ; বলিয়াছিলেন, “যে তুককে ভগিনী দিয়াছে, তাহার সহিত ভোজন করিব না।” সেই মহাবীরের বংশধরকে কি আমায় বঝোইতু হইবে যে, এই সম্মবন্ধ রাজপতিকুলকামিনীর পক্ষে ইহলোক পরলোকে ঘণাস্পদ ? মহারাজ ! আজিও আপনার বংশে তুক বিবাহ করিতে U O (e