পাতা:বঙ্কিম রচনাবলী (প্রথম খণ্ড).pdf/৬৪০

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ब्राङर्गनश्ङ् এদিকে উদয়পাের হইতে কোন সংবাদ আসিল না—মিশ্র ঠাকুর ফিরিলেন না। তখন চঞ্চলকুমারী উদ্ধাবমখে, যন্ত করে বলিল, “হে অনাথিনােথ দেবাদিদেব ! অবলাকে বধ করিও না।” রজনীতে নিৰ্ম্মল আসিয়া তাঁহার কাছে শয়ন করিল। সমস্ত রাত্ৰি দাই জনে দাই জনকে বক্ষে রাখিয়া রোদন করিয়া কাটাইল। নিম্পমাল বলিল, “আমি তোমার সঙেগ যাইব ।” কয় দিন ধরিয়া সে এই কথাই বলিতেছিল। চঞ্চল বলিল, “তুমি আমার সঙ্গে কোথায় যাইবে ? আমি মরিতে যাইতেছি।” নিৰ্ম্মল বলিল, “আমিও মরিব । তুমি আমায় ফেলিয়া গেলেই কি আমি বাঁচিব ? “ চন্8ল বলিল, “ছি! আমন কথা বলিও না—আমার দঃখের উপর কেন দঃখ বাড়াও ?” নিৰ্ম্মল বলিল, “তুমি আমাকে লইয়া যাও বা না যাও, আমি নিশ্চয় তোমার সঙ্গে যাইব-কেহ রাখিতে পরিবে না।” দই জনে কাঁদিয়া রাত্রি কাটাইল । অস্টেম পরিচ্ছেদ ঃ মেহেরজান। যে কয় দিন, মোগল সৈনিকেরা রহপনগরে শিবির সংস্থাপন করিয়া রহিলেন, সে কয় দিন বড় আমোদ প্রমোদে কাটিল। মোগল সৈন্যের সঙ্গে সঙ্গে নৰ্ত্তকীর দল ছাটিত ; যখন যন্ধ না হাইতি, তখন তাম্বর ভিতর নাচ-গানের ধােম পড়িত। সৈনিকদিগের রহপনগরে আসা কেবল আনন্দ করিতে আসা। সতরাং রাত্ৰিতে তাম্বতে নিত্য-গীতের বড় ধর্ম। নাত্ত কীদিগের মধ্যে সহসা একজনের নাম অত্যন্ত খ্যাতি লাভ করিল। দিল্লীতে কেহ কখন মেহেরজানের নাম শনে নাই—কিন্তু যাহাঁদের নাম প্ৰসিদ্ধ, তাহারাও রপনগরে আসিয়া মেহেরজানের তুল্য যশস্বিনী হইতে পারিল না । মেহেরজান আবার নৰ্ত্তকী হইয়াও সচ্চরিত্রা, এজন্য সে আরও যশস্বিনী হইল। মোগল সেনাপতি সৈয়দ হাসান আলি তাহার সঙ্গীত শনিতে ইচ্ছা করিলেন। কিন্তু মেহেরজান প্রথমে স্বীকৃত হইল না। বলিল, “আমি অনেক লোকের সাক্ষাতে নিত্যগীত করিতে পারি না।” সৈয়দ হাসান আলি স্বীকার করিলেন যে, বন্ধবেগ কেহ উপস্থিত থাকিবে না। নৰ্ত্তকী আসিয়া তাঁহাকে নিত্যগীত শনাইল । তিনি অতিশয় প্রীত হইয়া নৰ্ত্তকীকে অৰ্থ দিয়া পরিস্কৃত করিলেন। কিন্তু নৰ্ত্তকী তাহা লইল না। বলিল, “আমি অর্থ চাহি না। যদি সন্তুটি হইয়া থাকেন, তবে আমি যে পরিস্কার চাই, তাহাই দিবেন। নহিলে কোন পরিস্কার চাহি না।” সৈয়দ হাসান আলি জিজ্ঞাসা করিলেন, “তুমি কি পরিস্কার চাও ?” মেহেরজান বলিল, “আমি আপনার অশবারোহি সৈন্যভুক্ত হইবার ইচ্ছা করি।” হাসান আলি অবাক-হািতবন্ধি হইয়া মেহেরজানের সন্দের সাহাস্য মনুখখানির প্রতি চাহিয়া রহিলেন । মেহেরজান তাঁহাকে নিরািত্তর দেখিয়া বলিল, “আমি ঘোড়া, হাতিয়ার, পোষাকের দাম দিব ।” হাসান আলি বলিল, “সত্ৰীলোক আশীবারোহী সৈনিক ?” মেহেরজান বলিল, “ক্ষতি কি ? যাদ্ধ ত হইবে না। যন্ধ হইলেও পলাইব না।” হাসান আলি। লোকে কি বলিবে ? মেহেরজান। আপনি আর আমি জানিলাম, আর কেহ জানিবে না। হাসান আলি । তুমি এ কামনা কেন করা ? মেহেরজান । যে জন্যই হোক-বাদশাহের ইহাতে ক্ষতি নাই। হাসান আলি প্রথমে কিছতেই স্বীকৃত হইলেন না। কিন্তু মেহেরজানও কিছতেই ছাড়িল না। শেষে হাসান আলি স্বীকৃত হইল। মেহেরজানের প্রার্থনা মঞ্জর হইল। মেহেরজান, সেই দরিয়া বিবি । নবম পরিচ্ছেদ ঃ প্ৰভুভক্তি এই সময়ে, একবার মাণিকল্যালের কথা পাড়িতে হইল। মাণিকলাল রাণার নিকট হইতে বিদায় লইয়া প্রথমে আবার সেই পৰ্ব্বতগহায় ফিরিয়া গেল। আর সে দস্যতা করিবে, এমন বাসনা ছিল না; কিন্তু পৰব বন্ধগণ মরিল, কি বাঁচিল, তাহা দেখিবে না কেন ? যদি কেহ U ON