পাতা:বঙ্কিম রচনাবলী (প্রথম খণ্ড).pdf/৬৬৫

বণ্ডিকম রচনাবলী উদ্ঘাটিত করিয়া দেখিলেন। একজন পরিচারিকাকে ইঙিগত করিয়া ডাকিয়া জিজ্ঞাসা করিলেন, “কি এ ?” শানিলেন, একজন বিখ্যাত “জ্যোতিষী” এই বাড়ীতে থাকে। সহস্ৰ সহস্ৰ লোক তাহার কাছে প্রত্যহ গণনা করাইতে আসে। যাহারা গণাইতে আসিয়াছে, তাহারাই ভিড় করিয়াছে। নিম্পমাল আরও শনিলেন, “এই জ্যোতিষী সকল প্রকার প্রশন গণিতে পারে। এবং যাহাকে যাহা বলিয়া দিয়াছে, তাহা ঠিক ফলিয়াছে।” নিৰ্ম্মমল তখন দাসী দিগকে বলিলেন, “সঙেগ পাইকদিগকে বল, লোক সকল সরাইয়া দেয়। আমি ভিতরে গিয়া গণনা করাইব । কিন্তু আমার পরিচয় দিবার প্রয়োজন নাই।” পাইকদিগের বল্লমের গীতায় লোক সকল সরিল—নিম্পমালের শিবিকা জ্যোতিষীর গহমধ্যে প্রবেশ করিল। যে গণাইতে বসিয়াছিল--—সে উঠিয়া গেলে নিৰ্ম্মমল গিয়া প্রশনিকত্তার আসনে বসিল । জ্যোতিষীকে প্ৰণাম করিয়া কিঞ্চিৎ দর্শনী অগ্রিম দিল। জ্যোতিষী জিজ্ঞাসা করিলেন, “মা, তুমি কি গণাইবে ?” নিৰ্ম্মমল বলিল, “আমি যাহা জিজ্ঞাসা করিব, তাহা গণিয়া বলিয়া দিন।” জ্যোতিষী। প্রশন। ভাল, বল। নিশমল বলিল, “আমার এক প্রিয়সখী আছেন।” জ্যোতিষী একটা কি লিখিল। বলিল, “তার পর ?” নিৰ্ম্মমল বলিল, “তিনি অবিবাহিতা।” জ্যোতিষী আবার লিখিল। বলিল, “তার পর ?” নিম্পমাল। তাঁর কবে বিবাহ হইবে ? জ্যোতিষী আবার লিখিল। পরে খড়ি পাতিতে লাগিল। লগনসারণী দেখিল। শঙ্কুপট্ট দেখিল। নিম্পমালকে অনেক প্রশন জিজ্ঞাসা করিল। অনেক অণ্ডক কষিল। অনেক পথি খলিয়া পড়িল। শেষে নিৰ্ম্মমলের দিকে চাহিয়া ঘােড় নাড়িল । নিৰ্ম্মমল বলিল, “বিবাহ হইবে না ?” জ্যোতিষী। প্রায় সেইরােপ উত্তর শাস্ত্রে লেখে। নিম্পমাল। প্রায় কেন ? জ্যোতিষী। যদি সসাগরা পথিবীপতির মহিষী আসিয়া কখন তোমার সখীর পরিচয্যা কুন্তু ভূখন বিবাহ হইবে। নহিলে হইবে না। তাহা অসম্ভব বলিয়াই বলিতেছি, বিবাহ “অসম্ভব বটে!" বলিয়া নিৰ্ম্মল জ্যোতিষীকে আরও কিছ দিয়া চলিয়া গেল। ষষ্ঠ পরিচ্ছেদ ঃ আগােন জবালিবার প্রস্তাব চঞ্চলকুমারীর হরণে ভারতবর্ষে যে আগনি জবলিল, তাহাতে হয় মোগল সাম্রাজ্য, নয় রাজপতনা ধবংস প্রাপতি হইত। কেবল মহারাণা রাজসিংহের দয়া-দক্ষিণ্যের জন্য এতটা হইতে পারে নাই। সেই আশ্চৰ্য্য ঘটনাপরম্পরা বিবত করা, উপন্যাস গ্রন্থের উদ্দেশ্য হইতে পারে না। তবে কিছ কিছ না বলিলেও এই গ্রন্থের পরিশিষ্ট বাঝা যাইবে না। রপনগরের রাজকুমারীর হরণ-সংবাদ দিল্লীতে আসিয়া পৌছিল। দিল্লীতে অত্যন্ত কোলাহল পড়িয়া গেল। বাদশাহ রাগে স্বসৈন্যের নেতৃগণের মধ্যে কাহাকে পদচ্যুত, কাহাকে আবদ্ধ, কাহাকে বা নিহত করিলেন। কিন্তু যাহারা প্রধান অপরাধী—চঞ্চলকুমারী এবং রাজসিংহ—তাঁহাদের তত শীঘ্ৰ দণিডত করা দঃসাধ্য। কেন না, যদিও মেবার ক্ষদ্র রাজ্য, তথাপি বড় “কঠিন ঠাই।” চারি দিকে দলঙঘ্য পৰ্ব্ববতমালার প্রাচীর, রাজপতেরা সকলেই বীরপরিষ, এবং রাজসিংহ হিন্দবীরচড়ামণি। এ অবস্থায় রাজপতি কি করিতে পারে, তাহা প্রতাপসিংহ, আকবর শাহকেও শিখাইয়াছিল। দনিয়ার বাদশাহকে কিল খাইয়া কিছ দিনের জন্য কিল চুরি করিতে হইল। কিন্তু ঔরঙ্গজেব কাহারও উপর রাগ সহ্য করিবার লোক নহেন। হিন্দর অনিস্ট করিতে তাঁহার জন্ম, হিন্দরে অপরাধ বিশেষ অসহ্য। একে হিন্দ, মারহাট্টা পািনঃ পািনঃ অপমান \ჟ \ხტ8