পাতা:বঙ্কিম রচনাবলী (প্রথম খণ্ড).pdf/৬৭১

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ब७दकब ब्रष्नाबव्ी কোতোয়াল তখনই একজন অস্ত্ৰধারী রাজপরিষকে উপযক্ত উপদেশ দিয়া নিম্পমালকে বাদশাহের অন্তঃপারে পাঠাইয়া দিলেন। বাদশাহের প্রধান মহিষীর পাঞ্জা দেখিয়া খোেজারা কেহ কিছ আপত্তি করিল না। নিৰ্ম্মলকুমারী একটা চাতুরীর সহিত জিজ্ঞাসাবাদ করিতে করিতে যোধপরী বেগমের সন্ধান পাইল। তাঁহাকে প্ৰণাম করিয়া সেই পাঞ্জা দেখাইল । দেখিবামাত্র সতক হইয়া, রাজমহিষী তাহাকে নিভৃতে লইয়া গিয়া জিজ্ঞাসাবাদ করিলেন। বলিলেন, “তুমি এ পাঞ্জা কোথায় পাইলে ?” নিৰ্ম্মলকুমারী বলিল, “আমি সমস্ত কথা সবিস্তারে বলিতেছি।” নিন্মলকুমারী প্রথমে আপনার পরিচয় দিল। তার পর দেবীর রােপনগরে যাওয়ার কথা, সে যাহা বলিয়াছিল, সে কথা, পাঞ্জা দেওয়ার কথা, তার পর চঞ্চল ও নিৰ্ম্মমলের যাহা যাহা ঘটিয়াছিল, তাহা বলিল। মাণিকল্যালের পরিচয় দিল। মাণিকল্যালের সঙেগ যে নিৰ্ম্মমল আসিয়াছিল, চঞ্চলকুমারীর পত্ৰ লইয়া আসিয়াছিল, তাহা বলিল। পরে দিল্লীতে আসিয়া যে র বিপদে পড়িয়াছিল, তাহা বলিল; যে প্রকারে উদ্ধার পাইয়া, যে কৌশলে মহাল মধ্যে প্রবেশ করিয়াছিল, তাহা বলিল। পরে চঞ্চলকুমারী উদিপরেীর জন্য যে পত্ৰ দিয়াছিলেন, তাহা দিল। শেষ বলিল, “এই পত্র কি প্রকারে উদিপরী বেগমের কাছে পৌছাইতে পারিব, সেই উপদেশ পাইবার জন্যই আপনার কাছে আসিয়াছি।” রাজমহিষী বলিলেন, “তাহার কৌশল আছে। জেব-উন্নিসা বেগমের হকুমের সাপেক্ষ। তাহা এখন চাহিতে গেলে গোলযোগ হইবে, রাত্রে যখন এই পাপিঠারা শরাব খাইয়া বিহবল হইবে, তখন সে উপায় হইবে। এখন তুমি আমার হিন্দ, বাঁদনীদিগের মধ্যে থােক। হিন্দর অন্নজল খাইতে পাইবে।” নিৰ্ম্মমলকুমারী সম্মত হইলেন। বেগম। সেইরােপ আজ্ঞা প্রচার করিলেন। চতুৰ্থ পরিচ্ছেদ ঃ সমিধসংগ্রহ-উদিপত্রী রাত্রি একটি বেশী হইলে যোধপরী বেগম নিন্মলিকে উপযক্ত উপদেশ দিয়া, একজন তুকী (তাতারী) প্রহরিণী সঙেগ দিয়া জেব-উন্নিসার কাছে পাঠাইয়া দিলেন। নিম্পমাল জেব-উন্নিসার কক্ষমধ্যে প্রবেশ করিয়া আতর গোলাপের, পশুপরাশির, এবং তামাকুর সদগন্ধে বিমাগধ হইল। নানাবিধ রত্নরাজিখচিত হম্মমৰ্য্যতল, শয্যাভরণ এবং গহাভরণ দেখিয়া বিস্মিত হইল। সব্বাপেক্ষা জেব-উন্নিসার বিচিত্র, রত্নপাল্পমিশ্রিত অলঙ্কারপ্রভায়, চন্দ্রসযাতুল্য উক্তজবল সৌন্দৰ্য্যপ্ৰভায় চমকিত হইল। এই সকলে সজিজতা পাপিঠা জেব-উন্নিসাকে দেবলোকবাসিনী অপসরা বলিয়া বোধ হইতে লাগিল। কিন্তু অপসরার তখন চক্ষর ঢল ঢল ; মািখ রক্তবর্ণ; চিত্ত বিভ্রান্ত; দ্রাক্ষাসধার তখন সুকুর। নির্মলকুমারী তাঁহার সম্মুখে দাঁড়াইলে, তিনি জড়িত রমনায় জিজ্ঞাসা করলেন, জেব। মোগল বাদশাহের তন্তে তাউস লইয়া যাইতে আসিয়াছিস ? নিম্পমাল। না। চিঠি লইয়া আসিয়াছি। জেব। চিঠি কি হইবে ? পড়াইয়া রোশনাই করিবি ? নিৰ্ম্মল। না। উদিপরেী বেগম সাহেবকে দিব। জেব। সে বাঁচিয়া আছে, না মরিয়া গিয়াছে ? নিম্পমালা। বোধ হয়। বাঁচিয়া আছেন। জেব। না। সে মরিয়া গিয়াছে। এ দাসীটাকে কেহ তাহার কাছে লইয়া যা। জেব-উন্নিসার উন্মত্ত প্ৰলাপবাক্যের উদ্দেশ্য যে, ইহাকে যমের বাড়ী পাঠাইয়া দাওঁ। কিন্তু তাতারী প্রহরিণী তাহা বঝিল না। সাদা অর্থ বঝিয়া নিৰ্ম্মলকুমারীকে উদিপরী বেগমের কাছে লইয়া গেল । সেখানে নিৰ্ম্মমল দেখিল, উদিপরীর চক্ষ উক্তজবল, হাস্য উচ্চ, মেজাজ বড় প্রফাল্ল। নিৰ্ম্মমল খাব একটা বড় সেলাম করিল। উদিপরেী জিজ্ঞাসা করিল, “কে আপনি ?” VC O