পাতা:বঙ্কিম রচনাবলী (প্রথম খণ্ড).pdf/৬৭৪

রাজসিংহ নি। হজরৎ বেগম সাহেবকে তাহা দিয়াছি। বাদশাহ বড় বিস্মিত হইলেন। বলিলেন, “আমার সঙ্গে এসো।” নিম্পমলিকে সঙ্গে লইয়া বাদশাহ উদিপরেীর মন্দিরে গমন করিলেন। দবারে নিম্পমালকে দাঁড় করাইয়া, তাতারী প্ৰহারিণী:দিগকে বলিলেন, “ইহাকে ছাড়িও না।” নিজে উদিপরেীর শয্যাগহমধ্যে প্রবেশ করিয়া দেখিলেন, উদিপরেী ঘোর নিদ্রাভিভূত। তাহার বিছানায় পত্ৰখানা পড়িয়া আছে। ঔরঙগজেব তাহা লইয়া পাঠ করিলেন। পত্ৰখানা, তখনকার রীতিমত ফাসীতে লেখা । পত্র পাঠ করিয়া, নিদাঘসন্ধ্যাকাদম্বিনী তুল্য ভীষণ কান্তি লইয়া ঔরঙ্গজেব বাহিরে আসিলেন। নিম্পমালকে বললেন, “তুই কি প্রকারে এই মহাল মধ্যে প্রবেশ করিলি ?” f নিৰ্ম্মল যক্ত করে বলিল, “বাঁদীর অপরাধ মাতজনা হউক। —আমি এ কথার উত্তর দিব না । ” ঔরঙ্গজেব বিস্মিত হইলেন। বলিলেন, “কি এত হেমাকৎ ? আমি দনিয়ার বাদশাহ— আমি জিজ্ঞাসা করিতেছি, তুই উত্তর দিবি না ?” নিৰ্ম্মমল করজোড়ে বলিল, “দনিয়া হজারের। কিন্তু রসনা আমার। আমি যাহা না বলিব, দনিয়ার বাদশাহ তােহা কিছতেই বলাইতে পরিবেন না।” ঔরঙগ। তা না পারি, যে রসনার বড়াই করিতেছি, তা এখনই তাতারী প্রহরিণীর হাতে কাটিয়া ফেলিয়া কুকুরকে খাওয়াইতে পারি। নিম্পমাল। দিল্লীশাবরের মরজি! কিন্তু তাহা হইলে, যে সংবাদ আপনি খাঁজিতেছেন, তা প্রকাশের পথ চিরকালের জন্য বন্ধ হইবে। ঔরঙ্গ। সেই জন্য তোমার জিব রাখিলাম। তোমার প্রতি এই হাকুম দিতেছি যে, আগন জবালিয়া তোমাকে কাপড়ে মাড়িয়া, একটি একটা করিয়া তাতারীরা পোড়াইতে থাকুক। আমার কথায় যাহা বলিবে না, আগমনের জবালায় তাহ বলিবে। রী হাসিল। বলিল, “হিন্দীর মেয়ে আগমনে পড়িয়া মরিতে ভয় করে না। হিন্দ স্থানের বাদশাহ কি কখনই শানেন নাই যে, হিন্দরে মেয়ে, হাসিতে হাসিতে স্বামীর সঙ্গে জবলন্ত চিতায় চড়িয়া পড়িয়া মরে ? আপনি যে মরণের ভয় দেখাইতেছেন, আমার মা মাতামহী প্রভৃতি পরিষানৱক্ৰমে সেই আগনেই মরিয়াছেন। আমিও কামনা করি, যেন ঈশবিরের কৃপায় আমিও স্বামীর পাশে সস্থান পাইয়া আগনেই জীবন্ত পড়িয়া মরি।” বাদশাহ মনে মনে বলিলেন, “বাহবা! বাহবা!” প্রকাশ্যে বলিলেন, “সে কথার মীমাংসা পরে করিব। আপাততঃ তুমি এই মহালের একটা কামরার ভিতর চাবিবন্ধ থােক। ক্ষধাতৃষ্ণায় কাতর হইলে কিছল খাইতে পাইবে না। তবে যখন নিতান্ত প্ৰাণ যায় বিবেচনা করিবে, তখন কবাটে ঘা মারিও, প্রহরীরা দবার খালিয়া দিয়া আমার কাছে লইয়া যাইবে। তখন আমার নিকট সকল উত্তর দিলে, পান-আহার করিতে পাইবে।” নিৰ্ম্মমল। শাহান-শাহ ! আপনি কখনও কি শ নেন নাই যে, হিন্দ সত্ৰীলোকেরা ব্ৰতনিয়ম করে ? ব্রত-নিয়ম জন্য এক দিন, দই দিন, তিন দিন নিরক্ষািব উপবাস করে ? শানেন নাই, শরণা ধরণার জন্য অনিয়মিতকাল উপবাস করে ? শানেন নাই, তারা কখন কখন উপবাস করিয়া ইচ্ছাপাকবািক প্রাণত্যাগ করে ? জাঁহাপনা, এ দাসীও তা পারে। ইচ্ছা হয়, আমার মাতু্য পৰ্যন্ত পরীক্ষা করিয়া দেখােন । ঔরঙ্গজেব দেখিলেন, এ মেয়েকে ভয় দেখাইয়৷ কিছর হইবে না। মারিয়া ফেলিলেও কিছ: হইবে না। পীড়ন করিলে কি হয় বলা যায় না। কিন্তু তার পকেবা একবার প্রলোভনের শক্তিটা পরীক্ষা করা ভাল। অতএব বলিলেন, “ভাল, নাই তোমাকে পীড়ন করিলাম। তোমাকে ধনদৌলত দিয়া বিদায় করিব। তুমি এ সকল কথা আমার নিকট যথাৰ্থ প্রকাশ কর।” নি। রাজপত কন্যা। যেমন মাতুকে ঘণা করে, ধন-দৌলতকেও তেমনই। সামান্যা সত্ৰীলোক আমি-নিজগণে আমাকে বিদায় দিন । ཕེ༢༠༡༣ ། দিল্লীর বাদশাহের অদেয় কিছ, নাই। তাঁহার কাছে প্রার্থনীয় তোমার কি কিছই ק নি। আছে। নিবিবাঘের বিদায়। 3いう