পাতা:বঙ্কিম রচনাবলী (প্রথম খণ্ড).pdf/৬৮৫

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

বঙিকম রচনাবলী রাজসিংহের অনিন্ট আছে। এমন কার্য্যে তোমাকে নিযক্ত করিতে ইচ্ছা করি, তুমি তাহা করি বে } নি। কি কায্য, তাহা না জানিলে আমি বলিতে পারি না। আমি কোন দেবতা ব্ৰাহ্মণের অনিন্ট করিতে পারিব না। ঔ । আমি তোমাকে সে সব কিছ করিতে বলিব না। আমি উদয়পাের নগর দখল করিব—- রাজসিংহের রাজপরী দখল করিব, সে সকল বিষয়ে আমার কোন সন্দেহ নাই। কিন্তু রাজপরী দখল হইলে পর রােপনগরীকে হস্তগত করিতে পারিব কি না সন্দেহ। তুমি সেই বিষয়ে সহায়তা করিবে । নি। আমি আপনার নিকট গঙ্গাজী যম নাজীর শপথ করিতেছি যে, আপনি যদি উদয়পরের রাজপরী দখল করেন, তবে আমি চঞ্চলকুমারীকে আনিয়া আপনার হস্তে সমপণ করিব। ঔ । সে কথা বিশ বাস করি ; কেন না, তুমি নিশ্চয় জানি যে, যে আমার সঙ্গে প্রবণগুনা করে, তাহাকে টকরা টকেরা কাটিয়া কুকুরকে খাওয়াইতে পারি। নি। পারেন কি না, সে বিষয়ের বিচার হইয়া গিয়াছে। কিন্তু আমি শপথ করিয়া বলিতেছি, আমি আপনাকে প্রবণ8না করিব না। তবে আপনি পরী অধিকার করার পর তাহাকে আমি জীবিত পাইব কি না সন্দেহ। রাজপতেমহিষীদিগের রীতি এই যে, শত্রর হাতে পড়িবার আগে চিতায় পড়িয়া পড়িয়া মরে। তাহাকে জীবিত পাইব না বলিয়াই এ কথা স্বীকার করিতেছি। নহিলে আমা হইতে চ৭8লকুমারীর কোন অনিষট ঘটিবে না। ঔ । ইহাতে অনিষটা কি ? সে ত বাদশাহের বেগম হইবে । নিৰ্ম্মমল উত্তর করিতে যাইতেছিল, এমন সময়ে খোজা আসিয়া নিবেদন করিল, “পেশকার দরবারে হাজির, জরুরি। আরজি পেশ করিবে। হজরৎ শাহজাদা আকবর শাহের সংবাদ আসিয়াছে।” ঔরঙ্গজেব অতিশয় ব্য- ত হইয়া দরবারে গেলেন। পেশকার আরজি পেশ করিল। ঔরঙ্গজেব শানিলেন, অকলবারের পঞ্চাশ হাজার মোগল সেনা ছিন্নভিন্ন হইয়া প্রায় নিঃশেষে নিহত হইয়াছে। হতাবিশিস্ট কোথায় পলায়ন করিয়াছে, কেহ জানে না। ঔরঙ্গজেব তখনই শিবির ভঙ্গ করিতে আজ্ঞা দিলেন । আককবরের সংবাদ রঙমহালে ও পৌছিল। শনিয়া নিৰ্ম্মলকুমারী পেশোয়াজ পরিয়া দবার রদ্ধ করিষা যোধপবী বেগমের নিকট র্যাপনগরী নাচের মহলা দিল । বেশভূষা পরিত্যাগ করিয়া নিৰ্ম্মলকুমারী ভাল মানষি হইয়া বসিলে বাদশাহ তাহাকে তলব করিলেন। নিম্মল হাজির হইলে বাদশাহ বললেন, “আমরা তাম্ব, ভাঙ্গিতেছি—লড়াইয়ে যাইব—তুমি কি এখন উদয়পাের যাইতে চাও ?” নি। না, এক্ষণে আমি ফৌজের সঙ্গে যাইব । যাইতে যাইতে যেখানে সংবিধা বঝিব, y সেইখান হইতে চলিয়া যাইব । ঔরঙ্গজেব একটা দঃখিতভাবে বলিলেন, “কেন। যাইবে ?” নিৰ্ম্মল বলিল, “শাহানশাহের হকুম।” ঔরঙ্গজেব প্রফতুল্লাভাবে বলিলেন, “আমি যদি যাইতে না দিই, তবে কি চিরদিন আমার রঙমহলে থাকিতে সম্মত হইবে ?” নিশমলকুমারী যক্ত করে বলিল, “আমার স্বামী আছেন।” ঔরঙ্গজেব একটা ইতস্ততঃ করিয়া বলিলেন, “যদি তুমি ইসলাম ধৰ্ম্ম গ্রহণ করা—যদি uস। স্বামী ত্যাগ কর—তবে উদিপরেী অপেক্ষা তোমাকে গৌরবে রাখিব।” নিৰ্ম্মমল একটা হাসিয়া, অথচ সসম্ভ্ৰমে বলিল, “তাহা হইবে না, জাঁহাপনা !” ঔ । কেন হইবে না ? ক’ত রাজপতিরাজকন্যা ত মোগলের ঘরে আসিয়াছে। নি। তাহারা কেহ সবামী ত্যাগ করিয়া আসে নাই । ঔ । যদি তোমার স্বামী না থাকিত, তাহা হইলে আসিতে ? নি। এ কথা কেন ? ঔ । কেন, তাহা বলিতে আমার লতাজা করে, আমি তেমন কথা কখনও কাহাকেও বলি নাই। আমি প্রাচীন হইয়াছি, কিন্তু কখন কাহাকেও ভালবাসি নাই। এ জন্মে কেবল তোমাকেই VS